শেখ শোভন আহমেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় গড়াই নদীতে নতুন করে ভাঙ্গনের দেখা দিয়েছে। এ ভাঙ্গনের তান্ডবে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে শতাধিক বসতবাড়ি ও ফসলি জমি। এছাড়া নদীভাঙনে প্রায় শত পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। বর্তমানে ভাঙ্গন আরো বেড়ে যাওয়ায় হুমকির মুখে রয়েছে নদীর পাড়ের লোকজন। অপরদিকে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ওই এলাকার দুইশতাধিক পরিবার। গড়াই নদী ভাঙনকবলিত অনেক মানুষ কোনো প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার দ্রুত ভাঙনরোধের ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সরেজমিন পরিদর্শন করে জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ০৫ থেকে ০৮ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সারুটিয়া ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের শেষ প্রান্তেই বয়ে গেছে গড়াই নদী। এ গ্রামটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত হয়ে পড়ে রয়েছে। নেই চোখে পড়ার মতো আধুনিকতা । বিগত দিনেও নদীতে চলে গেছে এ গ্রামের অনেক বাড়িঘর, অর্ধ শতাধিক একর ফসলি জমি। কিন্তু তখন কেউ এগিয়ে আসেনি এ গ্রামের মানুষের পাশে।
স্থানীয়রা জানান, গড়াইনদী ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে গ্রামের অধিকাংশ বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন আর সরে যাওয়ারও জায়গা নেই। বৃষ্টির মৌসুম এলেই গরু-বাছুর, গাছপালাসহ মূল্যবান সম্পদ নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। এই গ্রামের মানুষ ও তাদের জানমাল রক্ষার জন্য স্থায়ী বাঁধের দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে।
ভাঙন কবলিতদের অভিযোগ, বছরের পর বছর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও নদীর ভাঙনরোধে কোনো পদক্ষেপই কার্যকর হয়নি । সরেজমিন ভাঙন এলাকা ঘুরে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্ষার আগেই রুদ্ররূপ ধারণ করেছে গড়াই নদী। । গত এক মাসে শৈলকুপা উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়নে বসতভিটা ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি এবং তিন একর জমির উপর কলার বাগান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এসব এলাকার ভাঙন কবলিতরা সহায়-সম্বল হারিয়ে বাড়ি-ঘর ভেঙে কেহ রাস্তার পাশে বা অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছে। পরিবারের নারী-শিশুসহ গবাদি পশু নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে ভাঙনে নিঃস্ব হওয়া মানুষেরা। সারুটিয়া গ্রামের জলিল বেপারী বলেন, আমাগো এই গড়াই নদীর ভাঙ্গনে প্রায় পাঁচ বিঘা জমি হারিয়েছি। ০৩ বার ঘর সরিয়ে অন্য জায়গায় বসত গেড়েছি। আবার ভাঙ্গলে আর যাওয়ার কোন জায়গা থাকবে না।
স্থানীয় বাসিন্দা মকসেদ আকন বয়স ৯০ বছরের মতো। কৌতূহলে জানতে চাইলাম নদী ভাঙ্গন দেখছেন কতবার, তিনি বিস্ময়কর ভাবে বলেন,এখন তো কম নদী ভাঙ্গে। আমরা যখন জোয়ান ছিলাম তখন নিমিষেই ভেঙ্গে ঘরবাড়ি বিলীন হতে দেখেছি। আমি প্রায় ৮০ বারের বেশি দেখছি নদী ভাঙ্গন। চোখের সামনেই অনেকের বাড়ি ঘর নদী গর্ভে বিলীন হতে দেখেছি। ফসলি জমি বাড়ি ঘর হারিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে অন্যত্র পাড়ি জমিয়েছেন অনেকে। এখন যারা এই এলাকায় বসবাস করছেন তাদের অনেকেই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।এদের দেখার মতো কেহ নেই।
ভাঙনের মুখে থাকা স্থানীয় একজন বলেন, ‘আমরা খুব ঝুঁকির মুখে আছি। আমার আশে পাশে থাকা ০৫ টি বাড়ি নদীতে নিয়ে গেছে।গত বছর আমার চাচাতো ভাইয়ের ঘর এক রাতের মধ্যে নদীতে নিতে গেছে। এখন আমি ভয়ের মধ্যে আছি,কখন যানি আমার ঘর নদীতে টান দেয়।এর আগে আমার একটি কলার বাগান ছিলো তাও নিয়ে গেছে।
বুকে চাপা কষ্ট নিয়ে লাল মিয়া হাওলাদার বলেন,বাড়ি তিনবার এই নদীতে নিয়ে গেছে এখন আমি রাস্তার পাশে একটি বাড়ি করে পোলাপান নিয়ে থাকি। সরকার যদি আমাদের একটু নদী ভাঙ্গন রোধ করে তাহলে আমরা ঠিকমত থাকতে পারবো।
বিষয়ে জানতে শৈলকুপা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলীর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা যায়নি।
মূলকথা নদী ভাঙ্গন রোধে শৈলকুপা পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং শৈলকুপার জনপ্রতিনিধিদের কোন ধরনের মাথা ব্যথা নেই। নদী পাড়ের বসতিরা এও জানায় যে, কয়েকবার সরকারি অনুমোদন আসলেও তার কোন ছোঁয়া লাগেনি এই নদী ভাঙ্গন রোধে। এজন্য তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা এবং সারুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকেই দুষছেন।
দাইয়ানুর রহমান (সম্পাদক) তাপস কুমার ঘোষ (প্রকাশক) শিমুল হোসেন, (নির্বাহী সম্পাদক) আজহারুল ইসলাম-বাবলু হোসেন ( নির্বাহী সম্পাদক)
অফিসঃ পশ্চিম শেওড়াপাড়া- ইকবল রোড বাসা নং- ৪১৬/৪ মিরপুর ঢাকা-১২১৬,
Email: Info@sumoyersonlap.com, taposhg588@gmail.com,shimul00252@gmail.com
01715522822, 01728.855627, 01710118632, 01709255325
https://www.sumoyersonlap.com
কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।