মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
সূর্যদয় আর সূর্যাস্তের বেলাভূমি সাগরকন্যা খ্যাত পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় লাল কাকড়ার অবাধ বিচরনে সৈকতে ফুটে উঠেছে আল্পনা।সারি সারি ঝিনুক ও সবুজ প্রকৃতির নিজস্ব খেয়ালে সৃস্ট বিভিন্ন গুল্মলতা নতুন রূপ দিয়েছে সাগর কন্যা কুয়াকাটাকে।
সাগরের বিশালতার পাশাপাশি এই অপরূপ সৌন্দর্য যেন বিমোহিত করেছে ভ্রমন পিপাসু প্রকৃতি প্রেমীদের।বড় দিন ও সাপ্তাহিক ছুটি সহ মোট ৩ দিনের ছুটিকে কেন্দ্র করে কুয়াকাটায় ঢল নেমেছে দেশি বিদেশি পর্যটকদের। সৈকতের ফটোগ্রাফার ও ঘোঁড়ার দৌড়ও থেমে নেই।চেনা রূপে ফিরতে শুরু করেছে বিনোদন কেন্দ্র গুলো।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,বদলে গেছে সূর্যদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটার চিত্র।সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন হয়েছে।বিশেষ করে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে পর্যটকদের আগমন।
২৩,২৪ সাপ্তাহিক ছুটি ও ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের ছুটি থাকায় বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই সৈকতে এসকল পর্যটকদের আগমন ঘটে।এদের মধ্যে বেশিরভাগই পিকনিক পার্টি রয়েছে। এর ফলে প্রান চাঞ্চ্যলতা ফিরে এসেছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।
পর্যটকদের এমন ভীড়ে বুকিং রয়েছে শতভাগ হোটেল মোটেল।এছাড়া বিভিন্ন পর্যটন স্পটে বেড়েছে পর্যটকদের বাড়তি আনাগোনা।আগত পর্যটকরা সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালীতে মেতেছেন।অনেকে আবার উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় পর্যটন স্পটগুলোতে মোতায়েন রয়েছে মহিপুর থানা পুলিশ, ট্যুরিষ্ট পুলিশ ও নৌ-পুলিশের সদস্যরা। সৈকত ঘুরে দেখা গেছে,কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টের পশ্চিম প্রান্তের লেম্বুরচর এবং পূর্ব প্রান্তের গঙ্গামতি সৈকত পর্যন্ত আগত পর্যটকদের পদচারনায় এখন মুখরিত।
কেউ নেচে গেয়ে আনন্দ উন্মাদনায় রয়েছেন। আবার কেউ সৈকতের বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এ সকল পর্যটকদের ভীড়ে পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়িদেরও ব্যস্ততা দেখা গেছে।তবে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকেই কুয়াকাটায় পর্যটকদের ব্যাপক চাপ রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা জানিয়েছেন।
কুয়াকাটায় ঘুরতে আসা পর্যটক ফয়সাল বলেন,এর আগেও কুয়াকাটা এসেছি।তখন বেশ কয়েকটি ফেরি পার হয়ে এখানে আসতে হতো।তখন অনেক বিরম্বনার শিকার হতে হয়েছে। এবারে মাত্র ৬ ঘন্টায় কুয়াকাটা আসলাম।আরেক পর্যটক মেহীদি হাসান তমাল বলেন,কুয়াকাটা হলো আমার প্রিয় একটি স্থান।
তাই ছুটি পেলেই বার বার এখানে ছুটে আসি। পর্যটক আনজুমানার বলেন,তারা পিকনিক করতে কুয়াকাটা এসেছেন।সকালে গাড়ি থেকে নেমে হোটেলে কিছুটা সময় বিশ্রাম নিয়ে সৈকতে বেড়িয়ে পরেছি। এর পর ঘুরে দেখলাম বিভিন্ন দর্শনীয় স্পট।
তবে আভিযোগ করে বলেন, সব কিছুই ঠিকঠাক আছে, কিন্তু কানেক্টিং সড়ক গুলো পাকা করা জরুরী। কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কুটুম’র সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন,পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সাপ্তাহিক ছুটিসহ সরকারি ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকের আগমন বেশি হচ্ছে।
হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর কুয়াকাটার ভাগ্য ফিরেছে। তিন দিনে টানা লম্বা ছুটিতে
পর্যটকদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আগত পর্যটকদের আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। হোটেল মোটেল সব গুলো প্রায় বুকিং রয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোন পুলিশ পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, আগত সকল পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।এছাড়া দর্শনীয় স্থান গুলোতে সার্বক্ষণিক ট্যুরিস্ট পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে।
মহিপর থানার ওসি খন্দকার আবুল খায়ের বলেন, প্রতিদিনই থানা পুলিশের একটি টিম পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করছে। তবে তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকের সেবায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।