শামছুল আলম আখঞ্জী তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতাঃ
কয়েক দিন ধরে দ্বারা বাহিক অবিরাম বৃষ্টি, আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের জলে, দুয়ে মিলে
বর্ষার নিয়মের পানির চেয়ে অধিক হারে বেড়ে ওঠেছে। এর ফলে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার নিন্মাঞ্চলের পাড়া- গাঁয়ের চলাচলের রাস্তা ঘাট পানির নিচে তলিয়ে ছুঁই ছুঁই বন্যায় প্লাবিত। এমন পরিস্থিতি দেখে স্থানীয় লোকজনের মনে, গত বছরের বন্যার ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ভেসে ওঠে শংকা বিরাজ করছে।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের
তরং, কান্দাহাটি, শ্রীপুর বাজার, কুড়ের পাড়, বেতাগড়া, শিবরামপুর, মন্দিয়াতা, কামালপুর, চিরার গাও, জয়পুর, গোলাবাড়ি, ইন্দ্রপুর, সহ অনেক নতুন গ্রামের
চলাচলের রাস্তায় পানিতে তলিয়ে গেছে। কিছু কিছু পরিবারের বসত ঘরেও উঠেছে পানি। তবুও গৃহ ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্র কিংবা অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নেননি তারা। মাচা কিংবা ইট বালু পেলে বসত ঘরেই অবস্থান করছেন। গৃহে থাকা আসবাবপত্র, গোলায় থাকা ধান, গবাদিপশু গোখাদ্য নিয়ে
পড়েছেন টেনশনে। গবাদিপশু গুলো স্থানান্তরিত করতে পারলেও গো খাদ্য নেওয়া বড় দায় হয়ে পড়েছে। কিছু সংখ্যক কৃষক গোলায়, বা মিলে রাখা ধান উঁচু মিলে কিংবা উচু স্থানে স্থানান্তরিত করছেন।
উপজেলার শ্রীপুর বাজারের রফিক মাষ্টারের
অটোরাইস মিলের সামনের রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। চায়ের চা স্টল, মোসারফ হোসেন, মুদি দোকানি শামনূর আখঞ্জী’র দোকান কোটাসহ বসত ঘরে পানি। বিট পাকাঁ থাকায় তাঁরা স্থানান্তরিত হয়নি। অবিরাম বৃষ্টি আর নদীতে পানি বৃদ্ধি চলমান দেখে, কিছু কিছু কৃষক ও চাউল- ধানের ব্যবসায়ী সনজিত, গোবিন্দ পাল মিলে রাখা ধান সড়াতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে বাদাঘাট বাজারের মিলে রেখেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন গ্রাম পাড়া মহল্লায় পানিতে তলিয়ে গেছে।
উপজেলার পাহাড়ি ঢলের বেশী চাপ থাকে যাদুকাটায়। এ নদীকে সর্ব বৃহৎ নদী বলা হয়ে থাকে, প্রচুর ঢল প্রবাহিত হওয়ার কারণে, এছাড়াও পাটলাই, বৌলাই নদীতে প্রবল বেগে স্রোত চলছে। এর ফলে
অনেক বসত বিটাসহ গ্রাম গঞ্জের রাস্তা ঘাট ভেঙে চুড়ে গেছে।
জানা যায়, গত ২৪ ঘন্টায় তাহিরপুর উপজেলার লাউড়েরগড় পয়েন্টে ১১১ মিলিলিটার বৃষ্টি পাত রেকর্ড হয়েছে। আর যাদুকাটা নদীর পানি বিপদসীমার ১৪৫ সে,মি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে জানা যায়, তাহিরপুরসহ সুনামগঞ্জ ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে আগামী ৪৮ঘন্টায় ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে এ কারণে এ অঞ্চলে স্বল্প মেয়াদি বন্যার আশংকা রয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলার (ভারপ্রাপ্ত) নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান রনি বলেন,
দুর্যোগ মোকাবেলায় উপজেলার প্রশাসন
সকল ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। আরও যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ অবনতি হয়। তাহলে সকল আশ্রয় কেন্দ্র গুলো খোলে দেওয়া হবে।