এস এ আখঞ্জী,তাহিরপুরঃ-
ভাটির জনপদের কৃষকরা,এক ফসলের উপর নির্ভরশীল,এতে যাহা আয় হয়, তা দিয়েই চলে জীবন সংসার। যাঁর ফলে রোপণের উপযুক্ত সময় হলেই, অস্থির হয়ে উঠেন স্থানীয় কৃষক। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চারা রোপণের কাজ শেষ করতে হবে। অন্যথায় প্রাপ্য ফসল থেকে বঞ্চিত হবেন, পড়বেন বিপাকে। বেশি ফলনের আশায়, ক্লান্তিহীন ভাবে, প্রচন্ড শীতকে উপেক্ষা করে,দল বেধেঁ বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলাতে, পৌষ মাসের শুরুতেই রোপণের উপযুক্ত সময়। এসময় এখানকার কৃষকরা, বাকি সব কাজ কর্ম দূরে রেখে, জমি রোপণের তৈরির কাজে,চাষবাষ, সেচ, মই দিয়ে লেভেল, কীটনাশক ঔষধ ছিটানো, আগাছা পরিষ্কার,বীজতলা থেকে (জালাপুড়ে) চারা সংগ্রহে নারী-পুরুষ একতালে কাজ করে (জালার রুয়া লাগাতে) বোরো ধানের চারা রোপণে,ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।
কারণ পৌষ মাসের শেষে-মাঘ মাসের মাঝা মাঝি সময়ই প্রকৃতির নিয়মেই পানি সরে যায়, তখন কৃত্রিম সেচ দেবার মত, কোনো ব্যবস্তা থাকে না। যার ফলে জমিতে পানি থাকাকালীন সময়ের মধ্যে রোপণে কাজ করতে, বিরামহীন ভাবে দলবেঁধে বোরো ধানের চারা রোপণে, ব্যস্ত সময় পাড় করেছেন মাটিয়ান হাওর পাড়ের কৃষকগন।
তবে, এবার জমি রোপণ করেও, শংকা বিরাজ করছে কৃষকদের মনে, পাঁকা ধান গোলায় ওঠবে কি? এমন প্রশ্ন একে, অন্যের কাছে। এক দিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অসময়ে আসে, পাহাড়ি ঢলের পানি। অন্যদিকে মাটিয়ান হাওরে, পাঁচ নাইলার এত বড় ভাঙ্গাসহ আরও কয়েকটি রয়েছে ঝুঁকি পূর্ণ বাঁধ, এসব দেখলেই, চাষবাষ বন্ধ করে দিতে চায় মন। আদি পেশা বলে, সাহস করে রোপণ করে চলছেন, এমনটা জানান স্থানীয় কৃষকজন।
আশায় বুক বেঁধে,ধার-দেনার অর্থে রোপণের কাজে এগিয়ে চলছেন, সারা খোরাক জোগাতে,হাওরের বুকে, কষ্টার্জিত অর্থসহ নিজের শ্রম- ঘাম, সব ঢেলে,সোনালী স্বপ্নে বিভোর হয়ে জমি রোপণ করে যাচ্ছেন হাওর পাড়ের কৃষক।
উপজেলার ফাজিলপুরের যাদুকাটা নদীতে বালু উত্তোলন ও মহাল চালু থাকার কারণে, অধিকাংশ এলাকায় শ্রমিক সংকট। আর এর প্রভাব পড়েছে কৃষিখাতে এর কারণে বেড়েছে শ্রমিকের মজুরি। প্রয়োজনের তাগিদে প্রাপ্য মজুরীর অধিক দিয়ে রুয়ালো নিতে হচ্ছে। প্রতিটি (রুয়ালো) হাজিরা ৫/৬শত টাকা। যাহা কৃষক জন্য কষ্ট কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আবার কিছু কিছু এলাকায় আমন ধানের চারা রোপন করেছিল। আমন ধান কেটে ঘরে তোলার পর ঐ সব এলাকার জমিতে এখন বোরো চাষ শুরু হয়েছেন।
এলাকার মাটি বোরো চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় অধিকাংশ কৃষক কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় আবহাওয়া ভালো থাকায় উপজেলায় এবার বোরোর লক্ষ্যমাত্রা ছেড়ে যাবে বলে অনেকেই মনে করছেন।
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হাসান উর দৌলা জানান, এবছর ১৭ হাজার ৫শত ২৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে আশা করা যায়, লক্ষ মাত্রা অতিক্রম করতে পারে । তিনি আরও বলেন, কৃষি কাজে কৃষককে অদ্ভুদ করতে, কৃষি বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও বিনা মূলে ৩ হাজার জন কৃষকে হাইব্রিড ধানের বীজ ও ১৬শ জন কৃষকে ৫কেজি করে উপছি জাতের ধানের বীজসহ ১০কেজি বিএপি সার,১০কেজি এমএপি সার তাদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও যে কোনো বিষয়ে, কৃষকের সোনালী ফসল রক্ষায়, উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সার্বক্ষণিক কৃষকের পাশে থাকবে।