তাহিরপুর প্রতিনিধিঃ-
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার 'মাহারাম' নদী থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে, রাতের আধারে বালু লুট করে নিয়ে যাচ্ছে প্রভাশালী একটি চক্র। উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রাম সংলগ্ন মাহারাম নদী থেকে প্রতি রাতেই শতাধিক নৌকার মধ্যে বালু ভর্তি করে পাশ্ববর্তী শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়নের বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম সংলগ্ন পাটলাই নদীতে বড় ষ্টিলবডি নৌকায় বালু ভরাট করে অনত্র নিয়ে যাচ্ছে বালু খেকো চক্ররা। এসব বালু থেকে প্রভাবশালী চক্ররা রয়েলটির নামে চাদা তুলে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। শান্তিপুর গ্রামবাসী জানিয়েছেন, স্হানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। বরং বালু খেকো চক্রদের দ্বারা বার বার নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তারা। বালু তোলা নিয়ে এখানে প্রায় সময়ই সংর্ঘষের ঘটনাও ঘটছে ।
জানা যায়, ভারতের মেঘালয় থেকে আসা সীমান্ত নদী যাদুকাটার প্রশাখা মাহারাম নদীতে এসে মিশেছে। মাহারাম নদীতে এক সময় বর্ষাকালে প্রবল স্রোত হতো। ১৯৮৮ সালের পূর্বে চৈত্র-বৈশাখ মাসে নদীতে পানি এলে অকাল বন্যায় উপজেলার মাটিয়ান, সমসাসহ ভাটি এলাকার ছোট-বড় ২৩টি হাওর পানিতে তলিয়ে যেতো। তখন স্থানীয়দের সহযোগিতা ও উপজেলা পরিষদ থেকে অকাল বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষার জন্য মাহারাম নদীতে বেড়িবাঁধ দেয়া হতো। একপর্যায়ে ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় পাহাড় থেকে নেমে আসা বালু ও নুড়িপাথরে স্তূপে মাহারাম নদীটি প্রাকৃতিক ভাবে ভরাট হওয়ায় উজান থেকে পানি এসে হাওর তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্যটি পাল্টে যায়। প্রাকৃতিক ভাবে বালু বাঁধ সৃষ্টি হওয়ায় বিগত ৩৩ বছর ধরে মাহারাম নদীতে সরকারি খরচে আর বেড়িবাঁধ দিতে হচ্ছে না। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে এক শ্রেণির অসাধু বালুখেকো চক্র মাহারাম নদীতে বালু উত্তোলন করায় প্রাকৃতিক বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আর মাহারাম নদীর উৎস মুখের বাঁধটি ভেঙে গেলে ভাটি এলাকার কৃষকদের দুর্ভোগের সীমা থাকবে না।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, রাতে মাহারাম নদীর উৎস মুখ সহ নদীর বিভিন্ন স্হান থেকে বালু উত্তোলন করছে এলাকার অসাধু বালুখেকো একটি চক্র। চক্রটি নদী থেকে রাতে প্রায় অর্ধ শতাধিক নৌকার মধ্যে বালু ভর্তি করে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে।
বালু উত্তোলনকারী কয়েকজন শ্রমিক জানান, প্রতি রাতেই কয়েকটি গ্রুপে দলবদ্ধ হয়ে নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে থাকে তারা। আর এসব গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এলাকার প্রভাবশালী কয়েকজন।
বালুখেকো, উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য কিবরিয়া বলেন, আমরা সিজ করা বালু, লীজ নিয়েছি ১ লক্ষ ঘনফুট। এসব বালু নিচ্ছি। ৬জুলাই পর্যন্ত ৩০হাজার ঘনফুট বালু বিক্রয় করেছি। আরও বাকি আছে ৭০হাজার ঘনফুট বালু।
তার সহযোগী ইকিন মিয়া জানান, আমরা মাহারাম নদী থেকে বালু আনছি না, শান্তিপুর থেকে নিচ্ছি। আপনার সাথে পরে কথা বলছি বলেই ফোন কেটে দিয়েছেন।
স্থানীয় ও এলাকাবাসী জানান, এ বালুর আড়ালে মাহারাম নদীর বুক থেকে প্রতি রাতেই শতাধিক নৌকা দিয়ে বালু নিচ্ছে এই চক্ররা। গ্রামবাসী তাদেরকে নিষেধ করলেও তারা বালু উত্তোলন করা বন্ধ করছেনা। প্রশাসনকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে, কিন্তু প্রদক্ষেপ নিতে দেখছিনা।
বড়দল গ্রামের কৃষকনেতা সাঞ্জব উস্তার বলেন, এভাবে বালু উত্তোলন করতে থাকলে মাটিয়ান হাওরসহ উপজেলার সকল হাওরের ফসল অকাল বন্যায় তলিয়ে যাবে। তিনি বালুখেকো চক্রদের হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, মাহারাম নদী থেকে বালু উত্তোলন করা বন্ধ করতে, না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সূপ্রভাত চাকমা'র, অফিসিয়াল মোবাইল নাম্বারে একাধিক বার ফোন করলেও, রিসিভ না হওয়ায়, উনার মন্তব্য জানা যায় নি।
দাইয়ানুর রহমান (সম্পাদক) তাপস কুমার ঘোষ (প্রকাশক) শিমুল হোসেন, (নির্বাহী সম্পাদক) আজহারুল ইসলাম-বাবলু হোসেন ( নির্বাহী সম্পাদক)
অফিসঃ পশ্চিম শেওড়াপাড়া- ইকবল রোড বাসা নং- ৪১৬/৪ মিরপুর ঢাকা-১২১৬,
Email: Info@sumoyersonlap.com, taposhg588@gmail.com,shimul00252@gmail.com
01715522822, 01728.855627, 01710118632, 01709255325
https://www.sumoyersonlap.com
কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।