রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
মাহেন্দ্র – বাস সংঘর্ষে বোয়ালখালী যুবক নিহত চট্টগ্রামে ইয়াবাসহ প্রেমিক প্রেমিকা আটক রাজগঞ্জ বিএনপি অফিসে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল গাইবান্ধার সাঘাটায় বিএনপি-জামাতের মধ্যে সংঘর্ষ\ আহত-১০ দলের জন‍্য নিরলস ভাবে কাজ করে চলেছেন ঝাঁপা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক ও সাবেক চেয়ারম‍্যান মফিজুর রহমান ২৪ এর শহীদ এর স্বরণে নাঙ্গলমোড়া আন্ত: গোন্ডকাপ ফুটবল টুণামেন্টে’র বর্ণাট্য ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন সিআইপি মনোনীত মুহাম্মদ জুলফিকার ওসমানকে সংবর্ধনা, দুই অসহায় পরিবারের পাশে ইসলামী নবজাগরণ সংগঠন গাজীপুরে ফ্রেন্ডস ক্লাব ৯৬, গাজীপুর এর ৫ম বর্ষপূর্তি ও ফ্যামিলি উৎসব অনুষ্ঠিত সাদপন্থীদের বিচারের দাবিতে সালথায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ সাদপন্থীদের কোন কার্যক্রম বাংলাদেশে চলতে দেওয়া হবে না সালথায় গণঅধিকার পরিষদের শীতবস্ত্র বিতরণ

দর্শনার্থীর অভাবে খাঁ খাঁ করছে বরিশাল বিভাগীয় জাদুঘর।

রিপোর্টার নামঃ
  • আপডেট সময় রবিবার, ৫ জুন, ২০২২
  • ১৯৯ বার পঠিত

মাসুমা জাহান, বরিশাল ব্যুরোঃ

মুসলিম যুগের শিলালিপি,গুপ্ত যুগের পোড়ামাটির নিদর্শন,পাল যুগের বুদ্ধমূর্তি,কত কী! নানা পুরাকীর্তি নিয়ে বরিশাল বিভাগীয় জাদুঘরটি স্থাপিত হয় ছয় বছর আগে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জাদুঘরটি নির্জীব। দর্শনার্থীর অভাবে খাঁ খাঁ করছে সব সময়। দর্শনার্থী টানতে নেই কোনো উদ্যোগও।

জাদুঘরের কর্মকর্তারা জানালেন, প্রতিদিন ২০ জন দর্শনার্থীও এখানে আসেন না।অথচ জাদুঘরের কাছেই রয়েছে ৩২ হাজার শিক্ষার্থীর সরকারি বিএম কলেজ, একটু দূরেই আছে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থীর একটি বিশ্ববিদ্যালয়। এর বাইরে সরকারি-বেসরকারি শতাধিক স্কুল–কলেজ তো আছেই।জাদুঘরটিতে এসব শিক্ষার্থীরও খুব একটা পদচারণ নেই।

বৃহত্তর বরিশালের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রদর্শন ও গবেষণার লক্ষ্যে নগরের ফজলুল হক অ্যাভিনিউ এলাকায় পুরোনো কালেক্টরেট ভবনে গড়ে তোলা হয় বিভাগীয় জাদুঘর। খোদ ভবনটিই একটি পুরাকীর্তি। ১৮২১ সালে এটি নির্মিত হয়েছিল, ১৯৮৪ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ২০০৪ সালে ভবনটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। প্রয়োজনীয় সংস্কার ও সংরক্ষণ শেষে এই ভবনেই স্থাপন করা হয় জাদুঘর। ২০১৫ সালের ৮ জুন এটির উদ্বোধন হয়।

পুরোনো কালেক্টরেট ভবন ঔপনিবেশিক স্থাপত্য ঐতিহ্যের স্মারক। এটি বাংলাদেশে নির্মিত প্রথম প্রশাসনিক ভবনও। জাদুঘরে ভবনটির ইতিহাস, স্থাপত্যশৈলীর বিবরণ, আলোকচিত্র ও নির্মাণ উপকরণসহ বিভিন্ন ধরনের নিদর্শন উপস্থাপন করা হয়েছে। দোতালায় সজ্জিত নয়টি গ্যালারিতে ফারসি হরফে উৎকীর্ণ মুসলিম যুগের শিলালিপি, গুপ্ত যুগের পোড়ামাটির নিদর্শন, প্রস্তর নির্মিত পাল যুগের বুদ্ধমূর্তি, পদ্মখচিত সুলতানি যুগের পোড়ামাটির ফলকচিত্র, মাটির সামগ্রী, তৈজসপত্র, গ্রামোফোন রেকর্ডার (কলের গান), আসবাব, শিবলিঙ্গ, মারীচী মূর্তি, কৃষ্ণমূর্তি, হরগৌরি মূর্তি, মহাদেব মূর্তি, ব্রোঞ্জের বদনা, পাথরের মালাসহ অনেক মূল্যবান, দুষ্প্রাপ্য ও আকর্ষণীয় নিদর্শন প্রদর্শনের জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া রয়েছে বরিশাল বিভাগের ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক পরিচিতি। বরিশাল বিভাগের কীর্তিমানদের তথ্য ও আলোকচিত্র। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও শিল্পকলায় উপস্থাপন করা হয়েছে বরিশালের গৌরবময় সমৃদ্ধ ইতিহাস। এসব থেকে বরিশালের গৌরবময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, লোকজ ও শিল্পকলা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে। এত আয়োজনের পরও দর্শনার্থী–খরায় প্রাণ পাচ্ছে না জাদুঘরটি।

জাদুঘরের প্রাঙ্গণেই কথা হলো বরিশাল বিএম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈমুল ইসলাম, তনুশ্রী দত্ত, জান্নাত রিমির সঙ্গে। বললেন, এত সব সংগ্রহ দেখে অভিভূত তাঁরা। তাঁদের ভাষ্য, এই জাদুঘর বরিশালের শিল্প-সংস্কৃতির স্মারক হতে পারে। কিন্তু প্রচারের অভাবে এই জাদুঘর বিকশিত হচ্ছে না। সত্যিই এক অসাধারণ সংগ্রহশালা।

জাদুঘরের দায়িত্বশীলদের একটি সূত্র জানায়, বরিশালের এই সমৃদ্ধ জাদুঘরটির জনপ্রিয়তা, সক্রিয়তা ও প্রচার না পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা হচ্ছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগে কোনো কার্যালয় নেই। এখনো এটি খুলনার বিভাগীয় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীন নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। ফলে এর উন্নয়ন, সম্প্রসারণ বিঘ্নিত হচ্ছে।

জাদুঘরটির সদ্য বদলি হওয়া দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও খুলনা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মাঠ কর্মকর্তা মো. আল আমিন বলেন, বরিশালের গৌরবময় ইতিহাস-ঐতিহ্যের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বিভাগীয় শহরে এত সমৃদ্ধ জাদুঘর দ্বিতীয়টি নেই। অথচ প্রচারের অভাবে এখানে দর্শনার্থীর সংখ্যা খুব কম। অনেকে জানেই না, এখানে জাদুঘর আছে। এটা দুঃখজনক।

বরিশাল বিভাগীয় জাদুঘরের কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘আমি এখানে কেবলই যোগ দিয়েছি। দায়িত্ব বুঝে নিচ্ছি। আসলে এখানে দর্শনার্থীর সংখ্যা কম, এটা সত্য। তবে দর্শনার্থী যাতে বাড়ে, সে লক্ষ্যে আমরা পরবর্তী সময়ে কিছু ক্যাম্পেইন করার চিন্তা করছি। স্থানীয় প্রশাসন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে এসব উদ্যোগ নেব।

সাংবাদ পড়ুন ও শেয়ার করুন

আরো জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 Sumoyersonlap.com

Design & Development BY Hostitbd.Com

কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।