এম, টি, রহমান মাহমুদ, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

দুর্নীতি দমন কমিশন গোপালগঞ্জ জেলা কমিটির উদ্যোগে জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রতিরোধ কমিটির আয়োজনে জেলা সদরে অবস্থিত যেকোন সরকারি, আধাসরকারী, স্বায়ত্তশাসিত দপ্তর, ব্যাংক ও বীমা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সেবা পেতে ঘুষ, দুর্নীতি বা হয়রানির শিকার বঞ্চিতদের গণশুনানিতে বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে এর সত্যতা নিশ্চিত করতে এই গণশুনানি। এতে ভুক্তভোগীরা তাদের অভিযোগ তুলে ধরেন কমিশনার তার ব্যাখ্যা চান। এই গণশুনানিতে এসে সকলে যার, যার অভিযোগ তুলে ধরেন এবং তাৎক্ষণিক সফলতার মুখ দেখেন। গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের এর অধ্যক্ষ মোঃ ওহিদ আলম লস্কর এর বিরুদ্ধে কলেজ ফান্ড থেকে টাকা আত্মসাৎ সহ নানা অভিযোগের কারনে দুদকের গনশুনানিতে হাজির হন।
তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ আমলে এনে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন দুদক কমিশনার তদন্ত মোঃ জহুরুল হক ও জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম।
গোপালগঞ্জ শেখ ফজলুল হক মনি স্মৃতি মিলানায়তন, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, গোপালগঞ্জ এ দুর্নীতি দমন কমিশনের আয়োজনে ১৬৪ তম গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গনশুনানির অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন গোপালগঞ্জের মাননীয় জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম। উক্ত গণশুনানি অনুষ্ঠানে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাননীয় কমিশনার (তদন্ত), মোঃ জহুরুল হক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক এর মাননীয় কমিশনার (তদন্ত) মোঃ জহুরুল হক বলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের গণশুনানি সম্পর্কিত নীতিমালার আলোকে জনগণের জন্য প্রদত্ত সরকারি/ আধাসরকারি/ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান/ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিষেবা দক্ষ ও কার্যকর উপায়ে প্রাপ্তি নিশ্চিত হয় এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে সততা, নিষ্ঠা ও মূল্যবোধের মান বজায় রাখা এবং কোন ব্যক্তি যাতে অনুপার্জিত আয় ভোগ করতে না পারে এ লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধ বিষয়ক বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, উন্নত রাষ্ট্র বিনির্মাণে দুর্নীতি সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক। তাই দুর্নীতি দমন কমিশন সমাজ থেকে দুর্নীতি নির্মূলে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, গণশুনানির মাধ্যমে জনগণের হয়রানি ও দুর্নীতিমুক্ত সরকারি পরিষেবা প্রদান নিশ্চিত করা হবে। তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, জনগণকে সরকারি সেবা প্রদান করা আপনার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। সেবা প্রদানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আন্তরিকতার সাথে সকলকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এ দায়িত্ব পালনে ন্যূনতম দুর্নীতি, হয়রানি কমিশন সহ্য করবে না। গণশুনানিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সহকারী কমিশনার (ভূমি), গোপালগঞ্জ সদর, সকল প্রকৌশলীদের দপ্তর, শিক্ষা বিভাগ, সমাজসেবা অধিদপ্তর, বিআরটিএ, পাসপোর্ট, সাব-রেজিস্টার, হাসপাতাল সহ বিভিন্ন সরকারি অফিসের সেবা প্রাপ্তি নিয়ে সাধারণ মানুষ ৫৭ টি অভিযোগ উপস্থাপন করেন তার মধ্যে ০৪টি অভিযোগ সরাসরি দুদক কর্তৃক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের মাননীয় কমিশনার (তদন্ত) মো,: জহুরুল হক সকল অভিযোগই মনোযোগ সহকারে শুনেন এবং অধিকাংশ অভিযোগ সমাধান করার নির্দেশ প্রদান করেন। প্রতিটি অভিযোগ পরবর্তীতে কমিশন থেকে মনিটরিং করা হবে এবং অভিযোগ কারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন যে দুর্নীতি করে সব সময়ই করবে, দুদক একবার এর সত্যতা পেলে জীবনে যা আয় করেছেন শেষ হয়ে যাবে। আমরা সকলে মানুষ হয়ে বাঁচতে চাই! গণশুনানিতে দুদক এর মাননীয় কমিশনার (তদন্ত) মো: জহুরুল হক জানান।
জনগণকে একটু ভালবাসা দিন, দেখবেন অনেক শান্তি। আজ আমার কষ্ট হয়, কিছু অফিস এর দুর্নীতি চিএ এত ভয়ানক আপনারা যারা উর্ধতন কর্মকর্তা একটু নজর রাখুন দেখবেন কোন অপরাধ থাকবে না। ইনশাআল্লাহ!

গনশুনানির অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন আক্তার হোসেন, মহাপরিচালক প্রতিরোধ দুদক, মো. মোরশেদ আলম দুদক পরিচালক, আল-বেলী আফিফা, পুলিশ সুপার গোপালগঞ্জ, জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন উপ-পরিচালক মোঃ সিফাত উদ্দিন, দুর্নীতি জেলা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি জনাব প্রফেসর সরদার নুরুল ইসলাম।

প্রধান অতিথি বলেন
চলমান দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা সব সময় আপনাদের সেবা প্রদান করবো এবং দ্রুত যে কোন অভিযোগ শেষ করার নির্দেশ কমিশনের। আপনারা মনে রাখবেন পিতা মুজিবের জন্মস্থান এই গোপালগঞ্জ। আপনারা সকলে সচেতন হলে এই বাংলাদেশ আর এগিয়ে যাবে। নিজে ভাল হই, দুর্নীতি বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুন। আমার সোনার বাংলা গড়তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এর আশা দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লক্ষ্যটা অর্জন অগ্রগতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।