দেবহাটার সন্ধ্যা রানী (৪৯) নামের এক স্কুল শিক্ষিকাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে বিদ্যালয় থেকে তাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এমন অভিযোগে করে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেবহাটা প্রেসক্লাবের সভাকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন করেন সুবর্ণাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই সহকারী শিক্ষিকা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, আমি ২০১৯ সালের পহেলা মার্চ তারিখে বদলি হয়ে সুবর্ণাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করি। এরপর থেকে বিদ্যালয়ে আমার উপস্থিতি ও পাঠদানে কোন অভিযোগ বা সমস্যার কথা ওঠেনি। কিন্তু কিছুদিন ধরে আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করা হয়েছে। এমনকি আমাকে ওই বিদ্যালয় থেকে তাড়ানোর জন্য উঠে পড়ে লাগা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, গত ২৬ সেপ্টেম্বর প্রতিদিনের ন্যায় বিদ্যালয়ে পাঠদানের জন্য আমি শ্রেণিকক্ষে যাই। সাড়ে ১২টা থেকে ০১টা ১০ মিনিট পর্যন্ত ৪র্থ শ্রেণির ইংরেজি ক্লাস নিতে যায়। এসময় ক্লাসের পড়া না হওয়ায় ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র রাফসান রাফিকে আদরের ভঙ্গিতে আস্তে একটা চড় দিয়ে পরের দিন থেকে হাতের লেখা ও ক্লাসের পড়া করে আসার জন্য তাকে বুঝিয়ে বলি। তারপর আমি ওইদিন ক্লাস নিয়ে চলে আসি। এরপর (২৭ সেপ্টেম্বর) ওই ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র রাফসান রাফিকে সখিপুর হাসপাতালে অসুস্থ দেখিয়ে তাকে ভর্তি করে তার পরিবার।
কিন্তু ঘটনার দিন রাফসান রাফি আমার ক্লাসের পর স্কুলের বাকি ৪টি ক্লাস শেষ করে এবং আমার সহযোগীতায় রাস্তাপার হয়ে তার দাদার সাথে সুস্থ অবস্থায় বাড়িতে যায়। তখনও কোন অসুস্থতার ঘটনা ঘটেনি। এমনকি তাকে হাসপাতালের নেওয়ার মত কোন ঘটনাও ছিল না। কিন্তু তাদের পরিবারকে কে বা কারা ভুল বুঝিয়ে আমাকে ফাঁসানোর জন্য এই ঘটনা সাজিয়েছে। তাছাড়া আমাদের বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ শুন্য থাকায় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র সরকার। আমাদের বিদ্যালয়ের আসা বরাদ্দ সঠিক ভাবে কাজ না করা নিয়ে আমি বেশ কয়েকবার প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে শক্ত ভাবে ষড়যন্ত্রের জাল পাতা হয়েছে। পাশাপাশি আমি বিদ্যালয়ের সরকারি টাকা আতœসাৎ সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সভাপতি বারবর অভিযোগ দায়ের করি। পরে সভাপতি বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোদ দায়ের করেন। যা নিয়ে আমার উপর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। এছাড়া চলতি বছরের গত ১৬ জুলাই স্থানীয় সাংবাদিকরা স্কুল খোলা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে সেখানে আমি বক্তব্য দেওয়ায় আরও বেশি কাল হয়ে যায়। তাছাড়া ২৬ সেপ্টেম্বর স্কুল খোলার আগে রাফসান রাফিসহ কয়েকজন ছাত্র কাগজের বিড়ি তৈরী করে আগুন ধরিয়ে টানছিল। আমি ছাত্রদেরকে বকা দেওয়ায় তারা আরও ক্ষেপে ওঠে আমার বিরুদ্ধে। এসব নিয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে হয়রানীমূলক সংবাদ প্রকাশ করে আমার সম্মানহানী করা হয়েছে। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে এলাকায় বসবাস করার অনুপোযোগী করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তুলে বিদ্যালয় থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করা হচ্ছে। এতে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। আমি বিষয়টি সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে দোষিদের আইনের আওতায় আনতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।