এস এ আখঞ্জী, তাহিরপুরঃ
সকল মানুষেই, বিশ্বাস করে সৃষ্টি কর্তা একজন আছেন। তিনি এঁর আনুগত্য ও সান্নিধ্য লাভের আশায়, আরাধনা, উপাসনা,ইবাদত,বন্দেগি, পূজা, পার্বণ উদযাপন করতে, প্রতিটি ধর্মেই একটি বিশেষ দিন উল্লেখ রয়েছে। এর জন্য ঐ দিনটি ঘিরে চলে নানা আয়োজনে, সাজ সজ্জিত পরিপূর্ণ ভাবে তৈরি হয় ভক্তবিন্দু। ঐ দিনটি উপাসনা করলেই দেবীর সন্তুষ্টি লাভ হবে। এমন মনোভাব প্রতিটি ভক্তের মনে।
বিভিন্ন তথ্য মতে, পৃথিবীতে ৪হাজার ৩শত ধর্ম রয়েছে । যাঁর ফলে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীর বিশ্বাসের ধরনটা এক নয়, হয়েছে ভিন্ন। কেউ নিরাকারে,কেউ প্রতিমায় বিশ্বাসী, কেউ অস্তিত্বের বিশ্বাসী নয়। তার মধ্যে প্রতিমায় বিশ্বাসী’ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জগত মাতা, দেবী দুর্গার আগমনকে ঘিরে পৃথিবীর ৯০ কোটি হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা উজ্জীবিত হয়ে
রং তুলির রঙিন সাজপোশাকে সজ্জিত করছে পূজা মণ্ডপের প্রতিটি প্রতিমা আর মন্দির এলাকা। আর ভক্তের আনাগোনা, ঢাক আর শঙ্খ বাজনায় পরিপূর্ণ সারা মন্দির।দুষ্টের বিনাশ ঘটাতে, দেবী মা’র আগমন। আসার সঙ্গে সঙ্গে, সবুজ তরুলতায় যৌবনে ফুটে ফুল। আর ভক্তের পূর্ণ হয় মনোবাসনা । এর এই ধারা বাহিক তায়, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সনাতনী হিন্দুগণ ৩০টি পূজা মণ্ডপে আরতির মালা সাজিয়ে, মাতিয়ে তোলে যতদিন চলে পূজা অর্চনার।
জগৎ মাতা দেবী দুর্গা ঘোড়ার বাহনে আসিবেন ধরায়। ভক্তকূলকে কাঁদিয়ে নৌকায় চলে যাবেন।
আগামী ১অক্টোবর মহাষষ্ঠী মধ্যে দিয়ে শুরু হবে সার্বজনীন দুর্গা পুজা উদযাপন।
সকাল ৭টার ১ মিনিট থেকে ৯টা ২৮ মিনিটে ষষ্ঠ্যাদিকল্পারম্ভ ও ষষ্ঠী বিহিত পূজা সন্ধ্যায় বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যে দিয়ে জগৎ মাতা, দেবী দুর্গার সার্বজনীন দুর্গা পুজা শুরু ।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায় উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ট্যাকেরঘাট (টিএলএমপি) নবারুণ সংঘ, তেলীগাও মিতালি মন্দির সংঘ, নয়াবন্দ,বড়ছড়া কলাগাও, সদর কালীবাড়ি সহ বিভিন্ন মন্দিরের প্রতিমা এক অপরুপ সৌন্দর্যে রং তুলির রঙিন ছোঁয়ায়। কারিগররা
মনের মাধুরি মিশিয়ে করেছেন রং তুলির কাজ। ঐ উৎসবকে ঘিরে বইছে উৎসবের ইমেজ। শিল্পীদের নিপুণ কৌশলে তৈরী হয়েছে দেবী দুর্গা, লক্ষ্মী, স্বরস্বতী,কাতির্ক,গণেশ’ অসুরসহ বিভিন্ন দেব-দেবীর প্রতিমা।
উপজেলার (ট্যাকেরঘাট) টিএলএমপি’র
পূজা মণ্ডপ নবারুণ সংঘ এর সভাপতি অমল বলেন, দেবী দুর্গা মা’র সান্নিধ্যে পাওয়ার আশায়, ভক্তদের নানা আয়োজন, এসব আয়োজনে তিনি তুষ্ট হলেই আমরা ধন্য হব। তিনি আরও বলেন, মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমী সকাল ৮টা ২ মিনিট থেকে ৯টা২৮ মিনিটের মধ্যে মহানবমী বিহিত পূজা সম্পূর্ন হবে। এ দিন দেবীর নবরাত্রি ব্রত হবে। বিজয়া দশমী সকাল ৮টা ২৯ মিনিটের মধ্যে দশমী বিহিত পূজা শেষে বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে সমাপ্ত ঘটবে সার্বজনীন দুর্গা পুজা।
এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান কবির বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী বাংলাদেশ সরকার। তাই, সামাজিক সম্প্রতি বজায় রাখার লক্ষ্য, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সোচ্চার ভূমিকায় অবস্থানে থাকবে। উৎসব মুখর পরিবেশে সার্বজনীন দুর্গা পুজা উদযাপন উপলক্ষে প্রতিটি পুজা মন্ডপে আনসার পুলিশ ও নিজস্ব ভলান্টিয়ার বাহিনী নিয়োগ করা হবে। তার সাথে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে
দুষ্কৃতিকারীকে চিহ্নিত করা হবে। আর প্রতিটি পুজা মন্ডপে সরকারি অনুদান স্বরুপ ৫শত কেজি চাউল দেওয়া হয়েছে।