সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় প্রতিপক্ষের হামলায় কালা মিয়া (৬৫) নামে এক কৃষকের একটি চোখ নষ্ট হওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা না নেওয়ার প্রতিবাদে এক সাংবাদিক সম্মেলণ অনুষ্টিত হয়েছে।
রবিবার বেলা ২ টার দিকে উপজেলা পরিষদের সামনের একটি ব্যবসা প্রতিষ্টানে উপজেলার ঘুলুয়া গ্রামের আহত কৃষক কালা মিয়ার ছেলে আয়ুব আলী এ সাংবাদিক সম্মেলণের আয়োজন করেন। এসময় আহত কৃষক কালা মিয়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক সম্মেলণে লিখিত বক্তব্যে কৃষক আয়ুব আলী বলেন, আমি ঘুলুয়া গ্রামের নিরীহ ও দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান।
আমি আজকে এই সাংবাদিক সম্মেলণে আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের একই গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদ মিয়া ও তার লোকজনের সাথে জমিজমাসহ বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে গত ৯ নভেম্বর বিকেল ৫ টার দিকে আমাদের গ্রাম সংলগ্ন টুকের বাজারের ফারুক মিয়ার দোকানের সামনে আমার পিতাকে একা পেয়ে আমাদের প্রতিপক্ষের আব্দুল ওয়াহেদ ও তার ছেলে মোখশেদ মিয়ার নেতৃত্বে তারা ৪-৫ জন আমার পিতার অপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায় এবং তারা আমার পিতাকে এলোপাথারীভাবে মারধোর করতে থাকে। এক পর্যায়ে মোখশেদ মিয়া আমার পিতার বাম চোখে স্ব-
জোরে ঘুষি মারলে তখন আমার পিতা গুরুতর আহতাবস্থায় মাটিতে লুটে পরেন। পরে বিষয়টি টের পেয়ে আশ-পাশের লোকজন ঘটনাস্থলের কাছে পৌঁছা মাত্রই হামলাকারীরা দৌড়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহতাবস্থায় স্বজনরা আমার পিতাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে দ্রুত একটি এম্বুল্যান্স যোগে প্রথমে ময়মনসিংহের সেওড়া ধোপাখলা এলাকার একটি চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। পরে সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি দেখে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার পিতাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। সেখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর গত ২৪ নভেম্বর আমরা আমার পিতাকে নিয়ে বাড়িতে আসি। আমার পিতার আঘাতপ্রাপ্ত বাম চোখটি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় আমরা পিতার চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিতে বিলম্ব হয়। পরে এ বিষয়ে গত ২৬ নভেম্বর আমি নিজে বাদি হয়ে প্রতিপক্ষের মোখশেদ মিয়া(৪০) আব্দুল ওয়াহেদ (৬৫) সহ ৪ জনকে আসামি করে ধর্মপাশা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু অত্যন্ত দু:খের বিষয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমার এ অভিযোগটি আমলে না নিয়ে তিনি উল্টো আমাকে ধমক দিয়ে থানা থেকে বের করে দেন। তাই আমার পিতার চোখটি যারা নষ্ট করেছে আমরা তাদেরকে আইনের আওতায় আনাসহ তাদের বিরুদ্ধে ন্যায় বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকায় রয়েছি। এমতাবস্থায় আমি আজকে এই সাংবাদিক সম্মেলণের মাধ্যমে আমার পিতার চোখ নষ্টকারী সন্ত্রাসীদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার লক্ষে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে ধর্মপাশা থানার অফিসার ইনচার্য (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আমি মামলা নেইনি এ কথাটি ঠিক নয়। মূলত এ বিষয়টি আপোষ মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান দ্বায়িত্ব নেওয়াতেই অভিযোগটি আমলে নিতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছ। তবে বাদি থানায় আসলে আজকেই মামলা নেওয়া হবে।###