জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
আগামী সপ্তাহের শেষে দিকে বঙ্গোপসাগরে একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে।আসন্ন এই ঘূর্ণিঝড়টি শক্তিমত্তায় কম হবে না।সমুদ্রস্তরে তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য নানা সময়ে নানা ঘূর্ণিঝড়ের আবহ তৈরি হয়েছে,তৈরি হচ্ছেও।আসন্ন এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সিত্রাং’।এটি থাইল্যান্ডের দেওয়া।এর অর্থ ‘পাতা’।টানা খরা-অনাবৃষ্টি, তীব্র দাবদাহ, বন্যা, বজ্রপাতের আধিক্য-সহ চলতি বছরে নানা দিকে অস্বাভাবিক ও চরম-ভাবাপন্ন আবহাওয়ার প্রকোপ। আর এর মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মতো ভয়াবহ দুর্যোগের আশঙ্কা।যেমন, আগামী সপ্তাহে একটি ঝড় আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আসন্ন এই ঝড় নিয়ে ভারতের আবহাওয়াবিদ ড. সুজীব কর সাংবাদিকদের জানান, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ওপর ঘনীভূত হয়েছে একটি ঘূর্ণিঝড়।যেটি আগামী ১৯ অক্টোবর ধেয়ে আসতে পারে।এটি ‘সেকেন্ড ক্যাটেগরি সাইক্লোন’ পর্যায়ভুক্ত হবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা।ঝড়টি দক্ষিণ আন্দামান ও নিকোবরের দিক থেকে এসে উড়িষ্যা ও অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে ধেয়ে যাবে। এর জেরে উড়িষ্যা ও অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে তীব্র জলোচ্ছ্বাস দেখা দেবে।
গত ৯ অক্টোবর পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে।আশঙ্কা করা হচ্ছে, আসন্ন ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝামাঝি সুন্দরবন উপকূলের যে কোনও স্থান দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করতে পারে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার অধীন রাষ্ট্রসংঘের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগরতীরের ১৩টি দেশের (বাংলাদেশ, মায়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মলদ্বীপ, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ইরান, সৌদি আরব ও ইয়েমেন) আবহাওয়া সংস্থার সম্মিলিত প্রস্তাব অনুযায়ী ধারাবাহিক ভাবে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়।
আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল ‘গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম’ও জানিয়েছিল, ১৮-২৫ অক্টোবরের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি সুপার সাইক্লোন সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।এদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়া বিভাগও তাদের পূর্বাভাসে বঙ্গোপসাগরে চলতি মাসে একটি-দু’টি নিম্নচাপ সৃষ্টি এবং এর মধ্যে থেকেই একটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেওয়ার আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেছিল।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়টি ২৪ অক্টোবরের মধ্যে আঘাত হানতে পারে। দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই ঘূর্ণিঝড়টি নিয়ে আবহাওয়াবিদদের মধ্যে চলছে নানা বিশ্নেষণ। এ অবস্থায় শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম (জিএফএস) জানিয়েছে, এটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হতে পারে। তবে ঘূর্ণিঝড়টি নিয়ে সতর্ক আছে বাংলাদেশ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, জিএফএস বলেছে, ১৭ অক্টোবর একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হবে। যেটা পরবর্তী সময়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ঝড়ে রূপ নেবে।ওই ঝড় ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ হয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও আমাদের সুন্দরবনের কিছু অংশে আঘাত হানতে পারে।
চলতি মাসের শুরুতে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তরও।কিন্তু এরপর এ নিয়ে আর কোনো তথ্য তারা জানায়নি। এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাঁরা (আবহাওয়াবিদ) বলেছেন, এটি আরও পর্যবেক্ষণ করতে হবে। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ ও লঘুচাপ এখনও সৃষ্টি হয়নি। এ বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি। উপকূলে বার্তা পৌঁছে গেছে, প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয়ণ কেন্দ্র।
ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে এবার তার নাম হবে ‘সিত্রাং’। থাইল্যান্ডের দেওয়া এ শব্দের অর্থ ‘পাতা’।
বিশ্বের বিভিন্ন আবহাওয়া মডেল বিশ্নেষণ করে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ শুক্রবার বলেন, ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির বিষয়ে বিশ্বের পাঁচটি আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলের সবগুলোই একমত। মডেল গুলোর সবকটিই সুপার-সাইক্লোন অপেক্ষা কম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনার কথা নির্দেশ করছে।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি আন্দামান ও নিকোবর দীপপুঞ্জ থেকে পশ্চিম দিকে ভারতের উড়িষ্যা ও অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের মাঝামাঝি উপকূলের দিকে অগ্রসর হলে অপেক্ষাকৃত দুর্বল হয়ে স্থলভাগে আঘাত করবে। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকে উত্তর দিকে বাংলাদেশের বরিশাল এবং খুলনা বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় অগ্রসর হলে অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী হিসেবে স্থলভাগে আঘাত করবে।
দাইয়ানুর রহমান (সম্পাদক) তাপস কুমার ঘোষ (প্রকাশক) শিমুল হোসেন, (নির্বাহী সম্পাদক) আজহারুল ইসলাম-বাবলু হোসেন ( নির্বাহী সম্পাদক)
অফিসঃ পশ্চিম শেওড়াপাড়া- ইকবল রোড বাসা নং- ৪১৬/৪ মিরপুর ঢাকা-১২১৬,
Email: Info@sumoyersonlap.com, taposhg588@gmail.com,shimul00252@gmail.com
01715522822, 01728.855627, 01710118632, 01709255325
https://www.sumoyersonlap.com
কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।