মোঃ শহিদুল ইসলাম পিয়ারুল,ময়মনসিংহ থেকেঃ
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় চলতি আমন ধান রোপণে কঠিন সমীকরণে রয়েছে কৃষক। যথাসময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে রয়েছে শঙ্কা। ফলে অনাবৃষ্টি ও তীব্র তাপদাহে পুড়ছে আমনের মাঠ তথা কৃষকের ভাগ্য। প্রকৃতির অনুকূলকে ব্যবহার করে অতি অল্প খরচে কৃষকরা আমন ধানের চাষাবাদে আশানুরূপ ভালো লাভবান হয়ে থাকে। কিন্তুু এবছর যেন তার উল্টো। বৃষ্টির অভাবে কৃষকদেরকে বেশি খরচা গুনতে হচ্ছে। সাধারনত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহেই শুরু হয় আমন ধানের চারা রোপণ। কিন্তুু জুলাই পেরিয়ে আগস্ট মাস শুরু হলেও আমনের মাঠে বৃষ্টির পানির দেখা মিলেনি। ফলে মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে আছে। তবে আমন ধানের চারা রোপণের জন্য নদী-নালা বা নলকূপের পানি ব্যবহার করে বীজতলা ঠিকই প্রস্তুত করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, চলতি আমন ধান রোপণে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার ৪১০ হেক্টর। ইতিমধ্যে ১০% লক্ষ্য মাত্রা পূরণ হয়েছে। তবে বৃষ্টির অপেক্ষার প্রহর গুণছে কৃষকরা। আবার অনেকেই নদ-নদীর পানি ব্যাবহার করে চারা রোপণ করছেন। কেউবা প্রকৃতির এরকম নির্মম পরিহাস দেখে সেচঁ কার্যক্রম চালু করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কৃষক জহিরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে বৃষ্টির পানিতে আমন ধান রোপণ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন। কিন্তু এবার মাসব্যাপী অনাবৃষ্টির কারণে পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে পানির অভাবে অনেক কৃষক ধান রোপণ করতে পারছেন না। ফলে অনেক জমি পতিত রয়েছে। এই উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের পংকরহাটি গ্রামের বর্গাচাষি আলী উসমান বলেন, জীবন বাঁচানোর তাগিদে প্রত্যেক বছর বিভিন্ন জনের কাছ থেকে জমি বর্গা নিয়ে বৃষ্টির পানিতে ধানের আবাদ করি। এবার বেগতিক অবস্থা। এখন পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ায় জমিতে হাল দেওয়া হয়নি। তাই ধানও লাগাতে পারছি না। যাদের টাকা-পয়সা আছে তারা সেচ দিয়ে ধান লাগালেও খরায় পুড়ে যাচ্ছে। আচারগাঁও ইউনিয়নের কৃষক মঞ্জুরুল হক বলেন, আল্লাহ যদি রহমত করে বৃষ্টি দেয়। তবেই চাষাবাদ করা সম্ভব। তানাহলে কৃষকেরও বিঘাপ্রতি ১৫শ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা খরচা পড়বে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, বর্তমানে প্রকৃতি খুবই উত্তপ্ত। ফলে তীব্র খড়া থাকায় বৃষ্টির পানির অভাবে বিকল্প পদ্ধতি গ্রহন করতে হচ্ছে। আমনের লক্ষ্য মাত্রা পূরণের জন্য সেচঁ কার্যক্রম চালু করার চেষ্টা চালাচ্ছি। তবে অল্প বৃষ্টি হলেই কৃষকরা চারা রোপণ করতে পারবে। তা না হলে খরচের সংখ্যা বেড়ে যাবে। তবু আশাবাদী মূল লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।