তাহিরপুর( সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতাঃ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের পাটলাই নদীতে একাধিক স্থানে ভিন্ন ভিন্ন নামে টোল আদায়ে নামে অতিরিক্ত চাঁদা উত্তোলন করা হচ্ছে। যাহা নৌ পরিবহন শ্রমিক, ও ব্যবসায়ীগনের উপর জুলুম বা অসহনীয়,বিরক্ত হয়ে তাহিরপুর আমদানি কারক সমিতি, কয়লা চুনাপাথর বিক্রয়,ও পরিবহন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। এর প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরের নিকট স্মারক লিপি প্রদান করেছেন, তিনটি শুল্ক ষ্টেশনের ব্যবসায়ীগণ বৃন্দ।
তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের,, স্মারক লিপিতে উল্লেখ রয়েছে,,, দেশের উত্তর পুর্বাঞ্চলের বৃহৎ তিনটি শুল্ক স্টেশন বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলী দিয়ে আমদানিকারকগণ ভারত হইতে কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি করে দেশের সিংহভাগ চাহিদা পুরণ করে আসছেন। পাশাপাশি সরকারের রাজ কোষাগারেও প্রতিবছর শতকোটি টাকারও উপরে প্রদান করে আসছেন।উক্ত পন্যগুলো একমাত্র নৌ-পথেই দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবেশন করতে হয়।কিন্তু বিগত কয়েক মাস যাবৎ তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের অন্তর্গত পাটলাই নদীর ডাম্পের বাজার ও শ্রীপুর বাজার(মন্দিয়াতা)এই দুটি স্থানে কোর্টগারী খাস-কালেকশন এবং বিআইডব্লিউটিএ'র নামে নৌকা শ্রমিক ব্যবসায়ীগণ বেপরোয়া চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছেন। কয়লা ও চুনাপাথর বোঝাই প্রতিটি নৌকা হইতে কোর্টগারী(খাস-কালেকশনের নামে বিনা রশীদে দুটি স্থানে একই নৌকা হইতে ১০,০০০/-থেকে ১৫০০০/-টাকা তারও অধিক এবং বিআইডব্লিউটিএ'র নামে ২০,০০০/-থেকে ৫০,০০০/-টাকা জোর-পুর্বক চাঁদা আদায় করে কিছু সংখ্যক লোক।অতিরিক্ত হারে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অথবা রশীদ চাইলে তারা আদায়কারীরা বলে কোন রশীদ নাই,রশীদ ছাড়াই টাকা দিতে হবে।অন্যথায় শ্রমিকদের উপর চড়াও হয়ে শারীরিক নির্যাতন করে।জানাযায় এ কারনে এই এলাকায় কয়লা ও চুনাপাথর পরিবহণের নৌকাগুলো এই নদীতে প্রবেশ করতে চায় না।যার ফলে আমদানিকারকগণ তাদের আমদানিকৃত পণ্যগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিবেশন করতে পারছেন না।এছাড়াও কয়লা ও চুনাপাথর ক্রেতাগণ এখানকার তিনটি শুল্ক স্টেশন হইতে কয়লা ও চুনাপাথর ক্রয় করতে আগ্রহ হারাচ্ছেন।এ পরিস্থিতিতে এই এলাকার কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি ব্যবসাতে স্থবির দেখা দিয়েছে।এবং সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হতে বঞ্চিত হচ্ছে।আবেদনের প্রেক্ষিতে জানাযায় পাটলাই নদীতে বিআইডব্লিউটিএ'র অনুমোদিত কোন ঘাট নেই যা দিয়ে পণ্য উঠানামা করিবে।তারা চলন্ত নৌকা হইতে জোর-পুর্বক চাঁদা আদায় করে আসছেন।যাহা বিআইডব্লিউটিএ'র নিয়ম বহির্ভূত।আমদানিকৃত কয়লা ও চুনাপাথর পরিবহনের সুবিধার্থে এবং নিরাপদ চলাচলের সুবিধার্থে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি কামনায় করেন তারা।
উপজেলার তিনটি শুল্ক ষ্টেশন,বড়ছড়া, চারাগাঁও,বাগলী,দিয়ে ভারত থেকে কোটি কোটি টাকার কয়লা চুনাপাথর আমদানি করা হয়। আর এসব কয়লা-চুনাপাথর বিক্রির জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে
নৌ-পরিবহনের মাধ্যমে পাঠানো হয়। কিংবা আগত ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে নিয়ে যান, তাদের গন্তব্য স্থলে। এর ফলে পাটলাই নদীতে হাজার হাজার নৌ পরিবহনের সমাগম ঘটে।
খবর নিয়ে জানা যায়, উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের পাটলাই নদীর, কামালপুর গ্রামের উত্তর পাশে বিআইডব্লিউটিএ, এর ইজারাদার মেসার্স সোহাগ এন্টারপ্রাইজ এর মালিক রতন মিয়ার লোক দিয়ে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ইজারাদার রতন মিয়া,
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাটের।
অপরদিকে, সরকারি খাস কালেকশন আদায়ের নাম করে, একই নদী থেকে, (শ্রীপুর -ডাম্পের বাজার নৌ-ঘাট) এলাকা থেকে টোল নামে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে,তহশীলদারের প্রতিনিধিগণের বিরুদ্ধে।
,তাহিরপুর উপজেলার পাটলাই নদী বন্দর (বিআইডব্লিউটিএ) এর ইজারাদার সোহাগ এন্টারপ্রাইজের মালিক রতন মিয়ার ফোন নাম্বারে একাধিক বার ফোন করলেও, রিসিভ না হওয়া, উনার মন্তব্য জানা যায় নি।
তবে উনার সহযোগী রুবেল মিয়ার গণমাধ্যম কর্মীর নিকট বলেন আমরা অতিরিক্ত টোল আদায় করিনি। আমরা নিয়ম অনুযায়ী টোল আদায় করতেছি।তবে ২৯/৮/২০২৩ ইং তারিখ কয়লা পরিবহনকারী দিদারে আলম নৌ-পরিবহন হতে ২৪০০০(হাজার টাকা টোল আদায় হয়েছে বলে রশিদে উল্লেখ রয়েছে এবং রশিদের মালের পরিমাণের কলামে লিখা রয়েছে ভারতীয় কয়লা,সে বিষয়ে জানতে চাইলে উনি রশিদের নাম্বার চেয়ে বলেন আমি জেনে আপনাকে অবগত করতেছি বলে লাইন কেটে দেন।
অন্য দিকে শ্রীপুর বাজার ও ডাম্পের বাজার নৌ-ঘাটের কাশ কালেকশন (কোর্ট গাড়ি)'র দায়িত্বে থাকা প্রতিনিধিদের নাম্বার বন্ধ থাকায় তাদের ও মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ডিহিবাটি তহশিল অফিসের তহশিলদার রুহুল আমিনের কাছে জানতে চাইলে উনি বলেন আমার তত্ত্বাবধানে টোল আদায় হচ্ছে ঠিক,কিন্তু আমার জনবল কম থাকায় আমি অফিসের কাজ রেখে যেতে পারিনি যারা টোল আদায়ের দায়িত্বে আছে তারা অতিরিক্ত টোল আদায় করলে এসিল্যান্ড স্যার কে জানান।
এর ঘেরাকলে পড়ে, শ্রমজীবী দরিদ্র মানুষজন দিশেহারা হয়ে পড়ছেন, কবে খুলবে শুল্ক ষ্টেশনের কাজ কাম, এমন আলোচনা চলছে, শুল্ক ষ্টেশনের আস পাশের হাট বাজারে, এমনও লোক আছে, যারা কাজ করলে, চুলায় আগুন জ্বলে, না হয়, অর্ধাহারে অনাহারে । এসব মানুষ বেশী চিন্তা যুক্ত হয়ে পড়েছেন।
অন্য দিকে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।
তাহিরপুর আমদানি কারক সমিতির সদস্য সচিব রাজেশ বলেন, অনেক দিন ধরে এই কুকর্ম চলছিল, এখন ব্যবসায়ীরা অপারগ হয়ে,, আমদানি কারক সমিতিকে অবগত করলে, এই বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়িক সমিতির নেতারা, এক আলোচনার সভার মাধ্যমে গৃহীত সিদ্ধান্তে পৌঁছান, এরপর গত শনিবার সকাল থেকে উপজেলার তিনটি শুল্ক ষ্টেশন এর মালামাল বিক্রয় সহ পরিবহন অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন। সমিতির এই সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসককে অবগত করতে স্মারক লিপি দিয়েছেন গত রবিবারে।
বাজিতপুরের নৌ মাঝি সাজু মিয়া বলেন, পাটলাই নদীতে, বিআইডব্লিউটিএ আর খাশ কালেকশন (কোর্ট গাড়ি)কে যে হারে টোল নামের চাঁদা দিতে হয় । আমাদের নৌকার ভাড়ার সব টাকা এখানেই প্রায় শেষ হয়ে যায়। যেখানে, ৯শত৫০টাকার দেবার কথা, সেই জায়গায়, খাশ কালেকশনকে দিয়ে এসেছি ৯হাজার আর বিআইডব্লিউটিএ এর কথ কি বলবো?
পাটলাই নদীতেই টোল নামের চাঁদা দিলাম ১৮হাজার টাকা। এভাবে দিলে, পরিবার পরিজন ভরণপোষণ করা দায় হবে।এ হালে চললে, বাধ্য হয়েই ছাড়তে হবে, পরিবহন পেশা। বিকল্প পেশায় জড়ানো ছাড়া কোন উপায় নাই।
চারাগাঁও শুল্ক ষ্টেশনের দায়িত্বে থাকা ব্যবসায়ী হাসান মেম্বার জানান, পাটলাই নদীতে অধিক হারে টোল আদায় করার কারণে, পরিবহন, নৌযান আসতে নারাজ, এর ফলে নৌকার সংকট তৈরী হয়েছে। যদিও কিছু নৌকা শুল্ক ষ্টেশন এলাকায় আসে, তাদেরকে দিতে হয় নিদিষ্ট ভাড়ার ছেড়ে অধিক । এ কারণে ব্যবসায়ীগন পড়েছেন লোকসানে। অতিরিক্ত টোল রোধে, বিক্রয়সহ পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বিষয়টি অবগত করতে, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মহোদয়কে স্মারক লিপি দিয়ে এসেছি।
সুনামগঞ্জ নদী বন্দর (বওপ) এর সহকারী পরিচালক সুব্রত রায় পলাশ বলেন, ট্যাকেরঘাট হতে সুলেমান পুর পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ এর ঘাট। এই শুল্ক ষ্টেশন এলাকা থেকে কয়লা- চুনাপাথর নৌকা বোঝাই করে নেওয়া হলে,প্রতি মেট্রিক টন থেকে ৩৪টাকা ৫০পয়সা হারে টোল আদায়ের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে ইজারাদার কে। যদি এর থেকে অধিক হারে টোল আদায় করা হয়, তাহলে তথ্য প্রমাণ ও অভিযোগ পেলে, আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন কতৃপক্ষ। আমরা এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। তিনি আরও বলেন, গতবছর সুলেমানপুর নদীতে ড্রেসিং করে দেওয়া হয়েছে। নৌ পরিবহন যাতে করে অতি দ্রুত গতিতে চলাচল করতে পারে।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে একটি আবেদন পেয়েছি।
তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, আমদানি কারক সমিতি, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে স্মারক লিপি দিবে, আমাদের কাছে নয়,উর্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে, তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার সুপ্রভাত চাকমা এর কাছে জানতে, একাধিক বার অফিসিল ফোন নাম্বারে কল করে ও, ফোন রিসিভ না হওয়া উনার মন্তব্য জানা যায়নি।
দাইয়ানুর রহমান (সম্পাদক) তাপস কুমার ঘোষ (প্রকাশক) শিমুল হোসেন, (নির্বাহী সম্পাদক) আজহারুল ইসলাম-বাবলু হোসেন ( নির্বাহী সম্পাদক)
অফিসঃ পশ্চিম শেওড়াপাড়া- ইকবল রোড বাসা নং- ৪১৬/৪ মিরপুর ঢাকা-১২১৬,
Email: Info@sumoyersonlap.com, taposhg588@gmail.com,shimul00252@gmail.com
01715522822, 01728.855627, 01710118632, 01709255325
https://www.sumoyersonlap.com
কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।