উত্তম চক্রবর্তী,মণিরামপুর(যশোর)
নিজের জীবন বাজি রেখে পিতার জীবন বাঁচাতে পুত্রের লিভার দান। তার পরও বাঁচাতে পারলেন না পিতাকে। ভারতের হায়দ্রাবাদ এআইজি হাসপাতালের একই রুমে দুটি বেডে পিতা ও পুত্রকে একই সাথে অপারেশন করেন। এ সময় পিতার নষ্ট হয়ে যাওয়া আশি পার্সেন লিভার (কলিজা) কেটে বাদ দেন। এবং পুত্রের আশি পার্সেন কলিজা কেটে এনে পিতার কলিজায় লাগান। এ অবস্থায় দুই বেডে থাকা পিতা পুত্রের মধ্যে পুত্র দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু পিতা প্রায় তিন মাসের মাথায় ওই বেডে থাকা অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে যান। ঘটনাটি মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকার চালুয়াহাটি ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক ও ইউনিয়ন পরিষদের বারবার নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান বজলুর রহমান ও তার একমাত্র কলেজ পড়ুয়া পুত্র ওয়াসিভ আহম্মেদ শুভ মধ্যকার। নিহতের পরিবার সুত্রে জানা যায়, চালুয়াহাটি ইউনিয়নের বারবার নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতা বজলুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে লিভার ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দীর্ঘ কয়েক বছর দেশে ও বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে আসছেন। কিন্তু গত বছর থেকে কঠিন ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এর পর তার পরিবার উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পর অসুস্থ বজলুর রহমানকে ভারতের হাসপাতালে অপারেশনের জন্য নিয়ে যান। কিন্তু বিশেষ কারণে অপারেশন না হয়ে দেশের বাড়িতে ফিরে আসেন। এর পর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে গত চার মাস পূর্বে ভারতের হায়দ্রাবাদ এআইজি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে একই রুমে দুটি বেডে একই সময় পিতা পুত্রের অপারেশন করেন। এ সময় পিতার নষ্ট হয়ে যাওয়া আশি পার্সেন লিভার (কলিজা) কেটে বাদ দেন। এবং পুত্রের আশি পার্সেন কলিজা কেটে এনে পিতার কলিজায় লাগান। এ অবস্থায় দুই বেডে থাকা পিতা পুত্রের মধ্যে পুত্র দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু অভাগা পুত্রকে সুস্থ করে দিলেও ৪ অক্টোম্বর সকালে পিতা বজলুর রহমান (৫৩) ওই বেডেই মৃত্যু বরণ করেন। তিনি মৃত্যুকালে এক পুত্র এক কন্যা, স্ত্রীসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। নিহতের বড় ভাই যশোর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহম্মাদ মুছা বলেন, বজলু দীর্ঘদিন লিভার ফ্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ ছিল। ভারতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। দেশে আনার সকল প্রস্তুতি চলছে। আশা করছি বৃহস্পতিবারের ভীতরে তার লাশটি দেশে আসবে।
এদিকে বিএনপি নেতা ও সাবেক জনপ্রিয় চেয়ারম্যান বজলুর রহমানের মৃত্যুতে তার শোকাহত পরিবের প্রতি শোক বেদনা জানিয়েছেন- খুলনা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অমিত হাসান, মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট শহীদ ইকবল হোসেন, চালুয়াহাটি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক আলহাজ্জ রবিউল ইসলাম সহ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।