প্রশান্ত বিশ্বাস, যশোর প্রতিনিধিঃ
পৌষ সংক্রান্তীতে মেতে উঠেছে লাখো মানুষ,শীতকে উপেক্ষা করে ভিড় বাড়ে মেলাপ্রেমীদের উপাচে পড়া ভিড়ে জমজমাট নড়াইল জেলার হিজল ডাংঙ্গার শতো বছরের গ্রামীন মেলা । ২০০ বছরের প্রাচীন এই মেলা।
জানা যায়, ১২২৯ বঙ্গাব্দের ১ লা পৌষ মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশের কাছে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করেন। এই মেলা পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয়।সেই দিনটিকে কেন্দ্র করেই এই বৃহৎ উৎসব ও মেলা।সকালে আম্রকুঞ্জে বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন আর সন্ধ্যায় মন্দিরে ঊপাসনার মাধ্যমে মেলার অধিবেশন হয়।ব্রহ্মোপাসনার মাধ্যেমে মেলার সূচনা হয়ে প্রতিদিন নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মেতে ওঠে পৌষের মেলা। একতারার সুরে তাল দেয় পিঠে পুলির গন্ধ।
এক সময়ে এ মেলার নাম ছিল পাগল চাঁদের মেলা। এখন হিজলতলার পৌষ মেলা নামে এক ডাকে চেনে গোটা বিশ্ব। পরর্বীতে মেলা স্থানন্তর হয় স্কুল মাঠে। এখন অবশ্য এর কোনও গণ্ডি নাই। পৌষ মেলা চলে গোটা এক সপ্তাহ জুড়েই। ছড়িয়ে যায় এপার বাংলা থেকে ওপার বাংলা।
এ মেলার বিশেষত্ব হস্তশিল্প ও গ্রামীণ কৃষ্টির উপস্থিতি। পৌষমেলায় বিক্রি হয় স্কুল মাঠে লাগোয়া কিছু গ্রাম এর মানুষের কিছু ঘরোয়া সামগ্রী যেমন, মাটির আসবাবপত্র ,লোহার কড়াই ,পাথরের বাটি ইত্যাদি। ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশেলে প্রতিটি দ্রব্যই বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে একতারার সুরে তাল দেয় পিঠা পুলির গন্ধ। সেই সঙ্গে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশেল। মাটির পুতুল, ডোকরা, বাঁশি, ডুগডুগি, চর্মশিল্প, একতারা— কী নেই সেখানে! সেই সঙ্গে ভুরিভোজের বিপুল আয়োজন। রীতি মেনে বৈতালিকের গান, সানাইয়ের সুর, ছাতিমতলায় উপাসনা- এসব তো আছেই, সেই সঙ্গে সাংস্কৃতিক মঞ্চে রায়বেশে, মুখোশনৃত্য, আলকাপ, রণপানৃত্য, ছৌ নাচও হয়। আর বাউল-ফকিরের গান তো থাকেই। বাঙালির ঐতিহ্যবাহী মেলা গুলার প্রতি যে মানুষের এখনো অনেক আকর্ষণ মেলায় না গেলে বুঝা যাবেনা।
এ ক্ষেত্রেও বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরকে আমন্ত্রণ জানানো হয় অংশ গ্রহণের জন্য।নড়াইলের ও যশোর সহো নানা জেলার স্টল রয়েছে স্টলে পাওয়া যায় বই, বস্ত্র নানাবিধ সামগ্রী এই মেলার বিশেষত্ব হলো মেলায় দেশি বিদেশি স্টল যেখানে বিভিন্ন দেশের কালচার সম্পর্কে আমরা অবগত হয়।আবারও দেখা যায় মিষ্টি দোকানীরা নানা রকম মিষ্টি পসরা সাজিয়ে বসে আছেন। রয়েছে মুখরোচক নানা রকমের খাবার, আরও বিশেষত্ব হলো মেলায় আসবে নাগরদোলাই না উঠলে সব মজা নষ্ট হয়ে যাবে।
নড়াইল যশোর সহ অনেক জেলায় মাস ব্যাপী মেলা চলবে বলে জানিয়েছেন।