মোঃ শফিকুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর পাচ্ছেন সমাজের অবহেলিত, নিপীড়িত নিম্ন শ্রেণীর হরিজন সম্প্রদায়। চিলমারী উপজেলা জুড়ে অস্থায়ীভাবে ভাসমান হরিজনদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে হরিজন পল্লি। এতে করে উপজেলার প্রায় দেড় শতাধিক হরিজনের স্থায়ী আবাসস্থলের ব্যবস্থা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের সবুজপাড়া এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে হরিজন পল্লি আবাস। আবাসন ঘিরে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। সারিবদ্ধভাবে লাল চাল বিশিষ্ট হলুদ রংয়ের সেমি পাকা ভবন দাঁড়িয়ে আছে। সাজানো গোছানো এই পল্লির ৩০টি ঘরে আশ্রয় হয়েছে প্রায় দেড় শতাধিক হরিজন। তারা তাদের পরিবার নিয়ে উঠতে শুরু করেছে। সমাজের অবহেলিত এসব হরিজনদের দুঃখ-কষ্ট ঘুচে স্থায়ী ঠিকানা পাওয়ায় আনন্দিত তারা।
হরিজন পল্লিতে বসবাসরত সুবিধাভোগী সুমি রাণী বলেন, সমাজ আমাদের একটু ভিন্ন চোখে দেখে, ঘৃণাও করে। ছোট ছোট সন্তান নিয়ে বিভিন্ন অফিসের বারান্দা কিংবা বাজারে দোকানের বারান্দায় ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে কত দিন-রাত পার করতে হয়েছে। কেউ কোনোদিন আমাদের জন্য ভাবেনি, খোঁজ রাখেনি। কি অসহনীয় কষ্টে আমাদের সুইপারদের জীবন কাটে তা বলে বোঝানো যাবে না। সরকার যে আমাদের মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করে স্থায়ী ঘরের ব্যবস্থা করেছে তাতে আমরা ভীষণ খুশি। এখন এক বেলা কম খেলেও নিশ্চিতে রাতে পরিবার নিয়ে ঘুমাতে পারব।
সুবিধাভোগী পারুল বলেন, বাপ-দাদা সবাই রাস্তায় রাস্তায় পরিত্যক্ত স্থানে তাদের জীবন কেটেছে। কিন্তু আমি স্বপ্নেও চিন্তা করতে পারিনি যে আমাদের জন্য স্থায়ী ঘর হবে। বিনা পয়সায় জমিসহ পাকা ঘর পাব এটা ভাবতেই চোখে পানি চলে আসে। সরকার যে এভাবে আমাদের মূল্যায়ন করবে যেটা স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে।
সুবিধাভোগী নেমু লাল বলেন, লজ্জা শরম খেয়ে আগে বাপ, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাঙা ঘরে কোনো রকমে দিন কেটেছে। খাবারের কষ্ট, থাকার কষ্ট নিয়ে যেখানে রাত সেখান কাত অবস্থায় দিন কেটেছে আমাদের। প্রশাসনের মাধ্যমে এই ঘর পেয়ে আমরা ভীষণ খুশি। এক বেলা কম খেলেও পরিবার নিয়ে নিশ্চিতে রাতে ঘুমাতে পারার শান্তি জুটেছে আমাদের ভাগ্যে।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারদের নিয়ে ৪র্থ পর্যায়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় হরিজন পল্লি গড়ে তোলা হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিঞা চিলমারী সফরে আসেন। এসময় স্থানীয় প্রশাসন হরিজন সম্প্রদায়ের আবাসন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সাইদুল আরিফ বলেন, হরিজন সম্প্রদায়ের জন্য হরিজন পল্লি বাংলাদেশে একটি ইউনিক মডেল হিসেবে কাজ করবে। প্রধানমন্ত্রীর অনন্য উদ্যোগের কারণে চিলমারীতে এক একর জমিতে ৩০টি পরিবারকে গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এই পল্লিতে নাগরিক সুবিধার সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া এখানে বসবাসরত হরিজন সম্প্রদায়কে উন্নয়নের মূল ধারায় আনতে তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। বাচ্চাদের পড়াশোনা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশে প্রথম হরিজন পল্লি সেই প্রেক্ষিতে দৃষ্টিনন্দন প্রকল্প হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্ৰহন করা হবে।
দাইয়ানুর রহমান (সম্পাদক) তাপস কুমার ঘোষ (প্রকাশক) শিমুল হোসেন, (নির্বাহী সম্পাদক) আজহারুল ইসলাম-বাবলু হোসেন ( নির্বাহী সম্পাদক)
অফিসঃ পশ্চিম শেওড়াপাড়া- ইকবল রোড বাসা নং- ৪১৬/৪ মিরপুর ঢাকা-১২১৬,
Email: Info@sumoyersonlap.com, taposhg588@gmail.com,shimul00252@gmail.com
01715522822, 01728.855627, 01710118632, 01709255325
https://www.sumoyersonlap.com
কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।