লেখক, মোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়ার লেখা
“প্রবাসের অভিজ্ঞতা “
প্রতিটি প্রবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা একটু পড়িবেন প্লিজ।
এখনো সময় আছে, সঞ্চয় করুন,
বিদেশে কত বছর ধরে আছেন, সেটা মুখ্য বিষয় নয়।
মুখ্য বিষয় আপনার একাউন্টে কত টাকা আছে সেটা।
দেশে কত টাকা পাঠিয়েছেন, সেটা হিসেব নয়। হিসেব হল, কত ক্যাশ করছেন নিজের পকেটে।
দেশে কত টাকা পাঠালেন, কার জীবন গড়ে দিলেন, সেই গল্পকাহিনী লিখে ডাইরির পাতা নষ্ট করে লাভ নেই এক পয়সাও। নিজের জন্য কি করেছেন, নিজের ভবিষ্যতের জন্য কি জমিয়েছেন, সেই হিসেব করুন।
যে মুখগুলোকে আজ ভিডিও কলে হাসতে দেখেন, বিপদে সে মুখগুলোকেই খুঁজে পাবেন’না, আর এটাই বাস্তবতা। চকলেট যত দামিই হোক, খাওয়ার পর তার খোসা কেউ সাজিয়ে রাখেনা, সেটা আপনাকে বুঝতে হবে।
নিজের বুঝটা নাকি পাগলেও বুঝে, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, প্রবাসীরা নিজের বুঝটা কখনই বুঝেনা। তবে নিজের করা ভুলটা কিন্তু একদিন ঠিকই বুঝে, তখন আর কিছু করার থাকেনা। স্বার্থ আর অর্থ না থাকলে, অতি কাছের আপনজনগুলো খুব দ্রুতই অচেনা হতে থাকবে। এতে আপনার পরিবার কিংবা আত্বীয়দের দোষারোপ করে কোন লাভ নেই, কারন এটাই স্বাভাবিক, মধু ছাড়া ফুলে কখনো ভ্রমর আসে না।
রোদের প্রখরতায় পুরা চামড়া, ক্যাটারিং এর খাবার খাওয়ার পরেও যেনো অভুক্ত পেট, রাতের ছাড়পোকার কামড়, অক্লান্ত পরিশ্রম, এত কিছু পর মাস শেষে যে বেতনটা আসে, কোন রকম খাওয়া খরচ রেখে, রক্ত আর ঘামে ভেজা নোটগুলো পাঠিয়ে দেয় দেশে।
একটি বারের জন্যেও ভাবে না, আমার ভইসা বা পারমিট’টা যদি রিনিউয়াল না হয়, কোন বিপদের কারনে যদি দেশে ফিরতে হয়, দেশে গিয়ে চলবো কি করে। দেশে গিয়ে তো হাত পাততে হবে, হাত খরচের জন্যেই।
যারা ধরা খেয়েছেন, তাদের বুঝার বাকি নেই, যারা এখনো ধরা খাননি,
এখনো সময় আছে, সঞ্চয় করুন
না হলে, দেশে ফিরে চোখের জল ছাড়া আর কিছুই আপন থাকবেনা। পরিবারের খরচ মিটিয়ে, নিজের ভবিষ্যেতের জন্য সঞ্চয় করুন। কে কি ভাববে, কে কি বলবে, অতশত পাঁচ না ভেবে, নিজের ভবিষ্যেত নিয়ে একটু ভাবুন। কারন দিন শেষে নিজের হাত পা ছাড়া আর কেউ আপন থাকেনা, পাশে থাকেনা।একদিন আপনার কাছে আপনি হিসাব দিতে পারবেন না! আপনি সঞ্চয় করবেন শুধু আপনার জন্য তা কিন্তুু নয় যাদেরকে আপনি ভালোবাসেন আজকে সেই ভালোবাসাটা ধরে রাখার জন্যেই ভবিষ্যৎ সঞ্চয়! সঞ্চয় মানেই কাউকে ঠকানো নয় আপনার নিরাপত্তার পাশাপাশি আপনার পরিবারের নিরাপত্তার আর্থিক স্বাবলম্বী! আপনার পকেটে থাকলে আজকে আপনি যেমন করে দিচ্ছেন কালকেও দিতে পারবেন আর আপনার না থাকলে আপনাকে কেউ দিবে সেই চিন্তা ভুলেও করবেন না! আপনার টাকা দিয়ে সে নিজের জীবন ঘুচিয়ে যখন বলবে আপনি কি করেছেন সে দিন আপনাকে হিসাব মিলাতে হবে তবে সে দিন আপনি চাইলেও তা মেলাতে পারবেন না। কারণ দিনের ১২ ঘন্টা আপনার জন্যে নয়, সেটা যে পালাবদল করে তা আপনাকে মেনে নিতেই হবে আর এটাই বাস্তবতা!
লকডাউন পড়ে অনেক প্রবাসী অনেক কিছু শিখেছে এই লকডাউন তাদের জন্য অভিশাপ নয় বরং আশ্বীরবাদ!
সময়ে আপনাকে নিজের কাছে নিজেকে অপরাধী করার আগেই হিসাব চুকাতে হবে আর তা না হলে।