জীব বা প্রাণী বড়ই স্বার্থপর, একে অপরের উপর কর্তৃত্ব করে বেড়ায়। নিজের স্বার্থে অপরকে হত্যা করতেও দ্বিধা নেই, তবে ক্ষেত্র বিশেষ কেউ কারো চেয়ে কম নয়। কেউ কারো ছাড় দিতেও রাজি নয়, প্রাণী জগতের সকল ক্ষেত্রে ছোটকে বড় তার স্বার্থে চাহিদা পূরণ করে নির্দিধায়।
প্রাণী জগতে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে স্বীকৃতি নিয়েছে মানুষ।
আর সেই মানুষ তার স্বার্থে প্রাণী কুলের অনেক জিনিষই ভোগ করে থাকেন নিধন কিংবা ভক্ষনের মাধ্যমে, যেমন গাছ-পালা, ফল-মূল, পশু- পংখী, মাছ, মাংস ইত্যাদি। ভালো কিংবা মন্দ মানুষ তার মনকে যেদিকে মনোনিবেশ করে,ঠিক সেদিকেই ধাবিত হয়, এর বাহিরে কিছুই নয়।
তাহলে দেখা যাচ্ছে, মানুষ নিজেকে শক্তিধর বানিয়ে ইচ্ছা মাফিক যা-খুশী তাই করার চেষ্টা করছে এ- জগত সংসারে। অথচ এতো ক্ষমতাধর হওয়া সত্ত্বেও মানুষ নিজেকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় নিয়তির নিয়ম ধারায় মৃত্যুর কাছে, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের মাধ্যমে, অবশেষে ফলাফল শুন্য।
কোরবানী কী এবং কেনো ? কোরবানী হচ্ছে ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে আত্মার পরিশুদ্ধিকরণ এবং নিজেকে পবিত্রতার মাধ্যমে মানবের কল্যাণে নিয়োজিত করা।
sdr
ধর্মবাণী জীব হত্যা মহাপাপ, জীবে দয়া করো, ইসলাম ধর্মে আল্লাহ তাআলা সবচেয়ে বেশী ঘৃণা করেন হত্যাকারিকে। হিন্দু সম্প্রদায় গরুকে মা সম্মোধন করে দেবতুল্য ভাবে। আবার মুসলমান সম্পদায় গরু কোরবানী করে। নানা ধর্মের নানামত ও দৃষ্টিকোণ।
পৃথিবীতে নানা কুসংস্কারে ভরপুর ছিলো এখনও আছে। মানুষকে সঠিক রাস্তায় ফিরিয়ে আনতে গিয়ে যুগে-যুগে দেব-দেবী, মহামানব ও নবী-রাসূল এবং পয়গাম্বরদের আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে সময়ের সংগে অনেক কিছুর পরিবর্তন ঘটেছে। এখনও চেষ্টা চলছে।
মানুষ স্বার্থের পাগল। কারো স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটলে, সে এক মূহুর্তের মধ্যে সব কিছু অস্বীকার করে ফেলবে। এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। যাই হোক এটা মানুষের স্বভাবজাত চরিত্র এবং চলমান প্রক্রীয়া।
মানুষের সবচেয়ে প্রিয় তার নিজের জীবন। এরচেয়ে বেশী প্রিয় কেউ বা কিছু হতে পারেনা এবং এটা অস্বীকার যোগ্যও নয়। নিজের জীবন না থাকলে কী আর অন্য কিছুর চাহিদা থাকে ? প্রশ্নই আসেনা। তাহলে নিজেকে কোরবানী না দিয়ে কেনো ছেলেকে কোরবানী দেয়ার জন্য বলা হলো অথবা নেয়া হলো ?
এটা এমন নয়কি। পৃথিবীতে যুগের পর যুগ ধরে নরবলি প্রর্থা চলে আসছিলো। স্বগীয় দেবতাকে খুশী করার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ ধরে এনে জবাই করে রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে সূর্য উদয় থেকে শুরু করে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত এ-ধারাবাহিকতা চলতো।
হয়তো সেই নরবলির ধারা পরিবর্তনের জন্যই ইব্রাহিম আঃ সাঃ মাধ্যমে সেই যুগে ইসমাইল আঃ সাঃ-কে কোরবানীর নির্দেশনার মধ্য দিয়ে ইসমাইল আঃ সাঃ-কে সরিয়ে নিয়ে দুম্বা-ভেড়া কিংবা পশু কোরবানীর কথা বলা হয়েছে কিংবা প্রচলন করা হয়েছে।
নরবলি কিংবা মানুষ কোরবানীর প্রথা যদি এই পৃথিবীতে চলমান থাকতো, তাহলে মানব সম্প্রদায়ের অবস্থা কী দাঁড়াতো বলা বাহুল্য।
অবাধ বর্ননায় নাইবা গেলাম। কোরবানী হোক জবাই বিহীন নিজের আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে পৃথিবী ও মানব সম্প্রদায়ের মাঝে শান্তি স্থাপন করা জন্য এবং মানবতার মাধ্যমে মানুষের কল্যাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা জন্য। আর ঈদ হোক আনন্দ-উৎসবের মাধ্যমে মনের আত্মতৃপ্তির অনুধাবন করার জন্য।