এস এ আখঞ্জী,তাহিরপুরঃ-
ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ ফুটবল খেলা দেখতে, গভীর রাতে ও টিভির পর্দার সামনে ‘ দর্শক বা সমর্তকের দল। শুধু মাত্র প্রিয় দলের বিজয়ের উল্লাসে অংশ গ্রহণের জন্য নিদ্রাহীন ভাবে সজাগ থাকতে পারে ফুটবল প্রেমী বাংলাদেশী নাগরিক।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার ভাটির জনপদের লোকজনতা বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার প্রতি বেশি উৎসাহী, লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এখানকার মানুষের এক ফসলী বোর চাষাবাদের নির্ভরশীল। যা আয় হয় তা দিয়ে চলে পুরো বছর তারপরও প্রিয় দলের খেলা থাকলেই, সব কিছু পেলে টিভির পর্দার সামনে এসে হাজির। এখানকার অধিক মানুষ ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা সমর্থক। এই দুলের খেলা হলে, খাওয়া দাওয়া ছেড়ে, নিদ্রাহীন ভাবে খেলা উপভোগ করেন দর্শক। গোল হলেই, ডাক, ঢোল বাজিয়ে চলে বিজয় মিছিল, মাতিয়ে তোলে পুরো এলাকা । মনে হয়, ওরা যেন কাতারের মাঠে দাঁড়িয়ে আছে। ঐ সকল সমর্থক বা দর্শক গন খুব আমোদ প্রিয় । এসব আবার শহর, বন্দরে তেমন দেখা যায় না। ব্যস্ত জগতের মানুষ, কাজ নিয়ে সময় পার করেন। সুযোগ পেলে আংশিক মানুষ খেলায় ঝুঁকেন। আর গ্রাম গঞ্জের সহজ, সরল মানুষ, প্রকৃত প্রেমী। অন্ধের মতো ভালবেসে। তাই পছন্দের দলের বিপক্ষে কথা বলেই শুরু হয়ে যায় তর্কবিতর্ক। আর প্রিয় দল জিতলে শুরু হয় মিষ্টি বিতরণ। ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা চলাকালে বাজারের রোড -ঘাট হয়ে যায় ফাঁকা, মনে হয় জনশূন্য। আসলে সবাই একাগ্রচিত্তে টিভির পর্দার দিকে চেয়ে থাকে এক পলক দৃষ্টিতে।
ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল খেলাকে ঘিরে, দিনে রাতে এখন চলছে আলোচনা, দোকান- পাট, পাড়া- মহল্লায়, হাটে- মাঠে, চায়ের দোকানে, প্রিয় দলের গুণকীর্তন গাইতে, ভক্তদের মধ্যে চলে চোলছেরা বিশ্লেষন। প্রিয় দলের প্রশংসা কুড়িয়ে তোলে ধরে, অন্য দলের ত্রুটিগুলো সামনে এনে চলে আলোচনার ঝড়। খেলা শুরু হলে রাস্তা ঘাটে লোকজনের সমাগম কমে যায় । সবাই টিভির পর্দার দিকে এক পলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে। শুনসান নীরব গুটা এলাকা । গোল হলেই, মিছিলের আওয়াজের ধনীতে, ঘুমন্ত মানুষ সজাগ হয়ে উঠে। বিজয়ের উল্লাসের ধনীর শব্দে। পছন্দের দলের বিজয়ের লক্ষ্যে চলে দোয়া প্রার্থনা। বিজয় শেষে চলে মিষ্টিমুখ।
কথা হয় তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের, শ্রীপুর বাজারের’ মৎস্য ব্যবসায়ী সাফাকুল ইসলাম (আফজাল) এর সাথে তিনি বলেন, আমি আর্জেন্টিনার সমর্থক, ওদের খেলার গুনগত বান ভাল। তাই ওদের খেলা শুরু হলেই, উতলা হয়ে উঠে, সব কাজ কর্ম ফেলে, ছুটে যাই টিভির পর্দার সামনে। একাগ্রচিত্তে অনুভব করি প্রতি দলের খেলা। বিজয় হলে আনন্দে হয়ে যায় আত্মাহারা।এবার আমার প্রিয় দল আর্জেন্টিনা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান হবে, আমার বিশ্বাস।
উপজেলার আরেক ফুটবল প্রেমী, তরং গ্রামের লাল শাহ্, ব্রাজিলের অন্ধ ভক্ত। সারাক্ষণ প্রিয় দলের গুণকীর্তনে ব্যস্ত। প্রিয় দলের খেলা শুরু হলেই,আরামের বিছানা হারাম করে ছুটে যান, রাতের গভীরে হাট-বাজারের চায়ের দোকানের টিভির পর্দার সামনে। আর মন মজিয়ে বসে থাকেন পলক দৃষ্টিতে। গোল দিতে পারলেই, বিজয় মিছিল নিয়ে বেড় হন রোডে। তিনি আরও বলেন, আমার প্রিয় দল ব্রাজিল বার বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। এ বারও, ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ ফুটবল খেলা বিজয় করে নিয়ে যাবে ব্রাজিলে। এমনটা জানান ব্রাজিল ভক্ত লাল শাহ্।
প্রিয় দল হেঁড়ে গেলে টিভির পর্দা ভেঙে ফেলতে উদ্ধত হয়ে যায় কিছু অন্ধ প্রেমী ফুটবল ভক্ত। কিছু জায়গায় বিচ্ছিন্ন অনাকাঙ্খিত ঘটনার খবর শোনা যায়। আসলে বাঙালিরা ফুটবল প্রেমিক,যার ফলে এমন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়ে থাকে।
ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে চার বছর পরপর ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এবার) ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ সালের
ফুটবল টুর্নামেন্ট এশিয়া মহাদেশের মরুভূমি কাতার দেশে ২০ নম্ভেবর থেকে ৩২টি দেশ ফাইনালে লড়ছে। ৬৪ পর্বের মধ্যে দিয়ে বিজয়ী প্রার্থী বেড়িয়ে আসবে। আর যিনি হবে সেরা সে দেশে ফিফা বিশ্বকাপ শিরোপা ওঠবে।
ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করে ছিল ১৯৩০সালে৷ উরুগুয়ের দেশ থেকে। এবছর তাঁরাই প্রথম বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান হয়েছিল। আয়োজকের দেশ উরুগুয়ে। যাহা ৯১বছর ধরে দর্শকের হৃদয় ছোঁয়ে গেছে। অর্ধ বদি পর্যন্ত চলমান রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান হয়েছে ফ্রান্স। তাদের হাতেই বিশ্বকাপ শিরোপার ট্রপিটি।
ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপে ২০৪টি দেশ খেলায় অংশ গ্রহণ করে ছিলেন। বাঁচাই পর্বেই ১৭২টি দেশ বিদায় নিয়েছে। বিজয়ের মুকুট অর্জন করেছে মাত্র ৩২টি দেশ। আর দেশ গুলোই আজ ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল খেলায় চমকপ্রদ দেখিয়ে যাচ্ছেন।
এতে যে দল সব বাঁধা অতিক্রম করে, শীর্ষে উঠবে তিনি হবেন ২০২২ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ানের দেশ। তাদের হাতে উঠবে ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপে শিরোপা ট্রপি।