ফকিরহাট থেকে আসাদুজ্জামান আসাদঃ
সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ঘাত প্রতিঘাত ও লড়াই সংগ্রামের রক্তাক্ত পথ ধরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পতাকাতলে এ দেশের আপামর জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তেইশ বছর কংকরাচ্ছাদিত পথ হেটে হেটে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। কিন্তু এদেশের মানুষের মুক্তি আনতে, এদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে অর্জিত স্বাধীনতা থমকে দাড়ায় পচাত্তরের কাল রাতে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নারকীয় বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে। এরপর জিয়াউর রহমান ইমডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্দ করে দেয়। স্বৈরশাসকের হাতে শুরু হয় স্বৈরশাসন।মুখ থুবড়ে পড়ে গনতন্ত্র ও নাগরিক অধিকার। এরপর হত্যা ষড়যন্ত্র নারকীয় সন্ত্রাস আর দুর্নীতিতে নিমজ্জিত বিএনপি জামাত জোট সরকারের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির গ্যাড়াকলে পড়ে এ দেশ আর দেশের মানুষের ভাগ্য মুখ থুবড়ে পড়ে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশের মাঝে কতটা ফারাক তা মানুষের কাছে স্পষ্ট। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশের বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে আজ বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে। গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব গুনে তারই হাত ধরে। সুতরাং, আধুনিক উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগ ছাড়া এ দেশের উন্নয়ন সম্ভবও না। ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কথাগুলো বললেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক। মংগলবার ১৩ই ডিসেম্বর ২০২২ বিকাল তিনটায় ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন শুরু হয় উপজেলা সদরের পাগলা শ্যামনগর বনফুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ প্রাঙ্গনে। সম্মেলনে আগামী তিনবছরের জন্য সর্বসম্মতিক্রমে সভাপতি নির্বাচিত হন স্বপন কুমার দাশ এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মল্লিক আবুল কালাম আজাদ।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামরুজ্জামান টুকু। ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখর রঞ্জন দাসের সন্চালনায় ও ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বপন কুমার দাশের সভাপতিত্বে ওই সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মিলন কুমার ব্যানার্জী। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। বিশেষ বক্তার বক্তব্য রাখেন বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডঃ ভুইয়া হেমায়েত উদ্দিন ।
সম্মেলনে সাংগঠনিক রিপোর্ট উপস্থাপনা করেন ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মল্লিক আবুল কালাম আজাদ সাহেব।
ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ঘিরে গোটা ফকিরহাটে নড়ে চড়ে উঠে উজ্জীবিত হওয়া আওয়ামী লীগ এক উৎসব মুখর দিন পার করেছে গত দুটি মাস ধরে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বপন কুমার দাশের হাত ধরে আজকের সম্মেলন সহ ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে উৎসব মুখর পরিবেশে সকল সম্মেলন শান্তিপুর্ন সফলতা পাওয়ায় বক্তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সংগে সম্পৃক্ত সকল নেতাকর্মী সমর্থকদের ধন্যবাদ জানান। এর আগে
এদিন দুপুর গড়াতেই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন হতে আলাদা আলাদা ভাবে মিছিল আসতে থাকে সম্মেলনের মাঠে। ব্যানার ফেষ্টুন ছবি হাতে নিয়ে নেতাকর্মীদের প্রবেশে বিকেল গড়াতেই কানায় কানায় পুর্নতা পায় প্রাংগন।উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সহ সদর ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায় থেকে আসা মিছিল ভিন্ন মাত্রা দেয় সম্মেলনের।
সম্মেলন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বপন দাশ বলেন, গনতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় সবগুলো সম্মেলন সমাপ্ত হয়েছে। যেখানে তৃনমুলে নেতৃত্ব সৃষ্টিতে সব শ্রেনী পেশার মানুষের মতামতের প্রতিফলন ঘটেছে। আজ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন সেই ধারায়। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে ফকিরহাট মডেল হিসেবে কাজ করছে। আমরা গনতন্ত্রে বিশ্বাসী।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, বেতাগা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনুস আলী শেখ, সাধারণ সম্পাদক আনন্দ কুমার দাশ, ফকিরহাট সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মনিরুল ইসলাম মনি, সাধারণ সম্পাদক সুমন মল্লিক, নলধা-মৌভোগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সর্দার আমিনুর রশিদ মুক্তি ও শেখ জাহাঙ্গীর আলম, পিলজংগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অন্জন কুমার দে ও সাধারণ সম্পাদক মোড়ল জাহিদুল ইসলাম, শুভদিয়া, বাহিরদিয়া মানসা ও মুলঘর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক সহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড নেতাকর্মীবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত ও আগত অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলন ঘিরে আইন শৃংখলা রক্ষায় প্রশাসনিক ভুমিকা ছিলো চোখে পড়ার মত।