আকাশ সাহাঃ সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী সদ্য প্রয়াত সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর ছোট ছেলে শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। ৬৮ হাজার ৮১২ ভোট পেয়ে তিনি বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বকুল মিয়া পেয়েছেন ১৪ হাজার ৮৭৮ ভোট।
ফরিদপুর জেলা নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর-২ আসনটি নাগরকান্দা, সালথা ও সদরপুরের কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এতে ভোটার রয়েছে ৩ লাখ ১৮ হাজার ৪৭২ জন। এর মধ্যে নগরকান্দা উপজেলায় ভোটারসংখ্যা এক লাখ ৫৭ হাজার ৮৭৫, সালথা উপজেলায় এক লাখ ৩২ হাজার ৪৬০ এবং সদরপুরের কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে ২৮ হাজার ১৩৭। শনিবার সকাল থেকে ১২৩ ভোটকেন্দ্রের ৮০৬টি ভোটকক্ষে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট প্রদান করেন ভোটাররা।
ফরিদপুর জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, নির্বাচনে তিন লাখ ১৮ হাজার ৪৭২ ভোটের মধ্যে ৮৩ হাজার ৬৯০ ভোট কাস্টিং হয়েছে। সে হিসেবে শতকরা ২৬ দশমিক ২৭ শতাংশ ভোট প্রদান করেছেন ভোটাররা।ফরিদপুর-২ আসনের উপ-নির্বাচনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয় সকাল ৮টায়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) চলে ভোটগ্রহণ। তবে, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রেই ভোটার উপস্থিতি কমের সাথে সব কেন্দ্রেই বাংলাদেশ আ'লীগ মনোনীত প্রার্থীর এজেন্ট থাকলেও অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রেই পাওয়া যায়নি একমাত্র প্রতিদ্বন্দী বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বকুল মিয়া বটগাছ প্রাথীর এজেন্ট।সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ফরিদপুর-২ আসনের সালথা ও নগরকান্দা উপজেলার অন্তত ২০টি ভোট কেন্দ্র ঘুরে এসব চিত্র পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে ফরিদপুরের নগরকান্দা, সালথা ও সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায় সকাল থেকে এগারোটা পর্যন্ত কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। তবে দুপুরের পর থেকে ভোটারদের উপস্থিতি একটু বাড়তে থাকে।
সরেজমিনে সকাল ১১টার দিকে সালথা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সালথা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র গিয়ে দেখা যায়, এ কেন্দ্রে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ২৫৬ জন হলেও কাস্টিং হয়েছিল মাত্র ২৫০ ভোট। পাশ্ববর্তী মহিলা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে জানা যায়, সেখানে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৪৩ জন হলেও কাস্টিং হয়েছিল মাত্র ১০০ ভোট।দুপুর সাড়ে ১২টা উপজেলার বড় খারদিয়া কেন্দ্রে ৩৬৬৬ ভোট মধ্যে কাস্টিং কাস্ট হয়েছিল ১৬০ ভোট।দুপুর ২টার দিকে উপজেলার রামকান্তুপুর মিতালী বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রে ২৬৯৭ ভোটের মধ্যে কাস্টিং হয়েছিল ৪৪৭ ভোট ।
সকল কেন্দ্রে নৌকার এজেন্ট থাকলেও বটগাছ প্রতীকের কোনো এজেন্ট নেই কেন, এ প্রশ্নের জবাবে একাধিক প্রিজাডিং অফিসার বলেন, এটা বলতে পারছি না কেন এজেন্ট দেননি বটগাছ প্রতীকের প্রার্থী সেটা প্রার্থী নিজেই ভালো বলতে পারবেন। তবে তারা জানান,বটগাছ প্রতীকের প্রার্থী ও তার পর্যবেক্ষক দল ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করে গেছেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন মনোনীত বটগাছ প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বকুল মিয়া মিয়া বলেন, ‘আমি নির্বাচন পদ্ধতিতে বিশ্বাসী। তবে কিছু কেন্দ্র বাদে প্রায় সব কেন্দ্রে আমার এজেন্ট দেওয়া হয়েছিল।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগণ নিরপেক্ষভাবে কাজ করেন। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সাদা পোশাকেও পুলিশ মাঠে কাজ করেছে।
খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও ফরিদপুর-২ আসনের রিটার্নিং অফিসার মো. হুমায়ূন কবির বলেন, ১২৩টি ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহন করা হয়েছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচনী এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায়
পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসারের পাশাপাশি তিনজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ ১৩ জন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেছেন। এক হাজার ৫২টি সিসি ক্যামেরায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ফরিদপুরের নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা এবং সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-২ আসন। সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে ১১ সেপ্টেম্বর ওই আসনটি শূন্য হয়। গত ২৬ সেপ্টেম্বর এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীসহ ছয়জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। বাছাইয়ের সময় দুজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন গত ১৯ অক্টোবর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীপ্রার্থী নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়া ও জাতীয় পার্টির আলমগীর হোসেন মিয়া মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন।
এ নির্বাচনে সদ্যপ্রয়াত সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ছোট ছেলে শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের বটগাছ প্রতীকে তাঁর এক মাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. জয়নুল আবেদীন বকুল মিয়া। অবশেষে ৫৩ হাজার ৯৩৪ ভোটে বকুল মিয়াকে হারিয়ে বিজয়ী হলেন লাবু চৌধুরী।
দাইয়ানুর রহমান (সম্পাদক) তাপস কুমার ঘোষ (প্রকাশক) শিমুল হোসেন, (নির্বাহী সম্পাদক) আজহারুল ইসলাম-বাবলু হোসেন ( নির্বাহী সম্পাদক)
অফিসঃ পশ্চিম শেওড়াপাড়া- ইকবল রোড বাসা নং- ৪১৬/৪ মিরপুর ঢাকা-১২১৬,
Email: Info@sumoyersonlap.com, taposhg588@gmail.com,shimul00252@gmail.com
01715522822, 01728.855627, 01710118632, 01709255325
https://www.sumoyersonlap.com
কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।