মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
বরিশালে মেহেন্দীগঞ্জে গৃহবধূকে (২১) দল বেঁধে ধর্ষণের ঘটনার সাতদিন পর মামলা হয়েছে।মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) হস্তক্ষেপে রোববার দিবাগত রাতে (০৫ মার্চ) থানায় এ মামলা হয়।
আসামিরা হলেন,ভুক্তভোগীর বাড়ির বাসিন্দা মানিক গাজীর ছেলে মইন গাজী (১৮), প্রতিবেশী ইসমাইল হাওলাদারের ছেলে রায়হান হাওলাদার (২২) ও শফিক গাজীর ছেলে আব্দুল্লাহ গাজী (২৫)।
অভিযুক্তরা বখাটে ও চিহ্নিত অপরাধী।তাই সাহস করে ভুক্তভোগীর পরিবার এতোদিন মামলা করেননি বলে জানা গেছে। ভুক্তোভোগীর স্বামী উপজেলার চর গোপালপুর ইউনিয়নের জালির চর এলাকার বাসিন্দা।ঢাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারের খাবার পরিবেশনের কাজ করেন তিনি।
তার তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকেন তার স্ত্রী। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নিজ ঘরে ধর্ষণের শিকার হন ওই গৃহবধূ। ভুক্তোভোগীর স্বামী জানান, এদিন বিকেলে তার মা প্রতিবেশীর বাড়িতে যান। এ সুযোগে প্রতিবেশী দুই তরুণ ঘরে প্রবেশ করে। এরপর শাড়ি দিয়ে তার স্ত্রীর হাত-পা ও মুখ বেঁধে ঘরের পাশে বাথরুমের পেছনে নিয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
মা ঘরে ফিরে বাথরুমের পাশে গোঙানির শব্দ শুনে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান তার স্ত্রীকে। তখন তার ডাকচিৎকারে প্রতিবেশিরা এসে তার স্ত্রীকে উদ্ধার করা মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
মামলা করতে দেরি হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ধর্ষকরা এলাকার চিহ্নিত বখাটে। এরা নানা অপকর্ম করে। আমরা গরিব, এদের বিরুদ্ধে মামলা করার সামর্থ্য নেই।
তাই স্থানীয়রা বিষয়টি সালিশ মীমাংসার মাধ্যমে সমাধানের জন্য চাপ দেয়। চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে টপকে তো মামলা করতে পারি না। তাই মামলা করতে পারিনি। বিষয়টি জেনে ইউএনও স্যার মামলা করার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরন্নবী বলেন, বিষয়টি জানতাম না। শনিবার একজনের কাছে শুনেই সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পাঠিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে মামলা করার নির্দেশ দিই।
কিন্তু ভয়ে তারা মামলা করতে ইচ্ছুক ছিল না। পরিবারটিকে সাহস দেওয়ার পর রোববার বিকেলে নির্যাতনের শিকার নারী বাদী হয়ে মামলা করেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মেহেন্দীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর পুলিশ গিয়েছিল সেখানে। তবে পরিবারটি মামলা করতে আসেনি। সালিশ বৈঠকে সমাধান করতে না পেরে মামলা করতে রোববার সকালে আসে তারা। মামলা নেওয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।