বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
মুন্সীগঞ্জে হারিয়ে যাচ্ছে ২০০ বছরের মৃৎ শিল্পের ঐতিহ্য মুন্সিগঞ্জে সচিবের বাড়িতে ডাকাতির অভিযোগ মুন্সীগঞ্জে ঘনকুয়াশায় নৌযান ৮ ঘন্টা আটকা, হাজার মানুষের চরম দূর্ভোগ মুন্সীগঞ্জে শহীদ জিয়া পরিষদের সদর থানার সভাপতি আলী আজগর পলাশ,সম্পাদক আরিয়ান রাজ ( রউফ) উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী সাতক্ষীরা জেলা সংসদের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত বোয়ালখালীতে আগুনে পুড়ল দোতলা ঘর ফুলবাড়ীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী শিক্ষা শিবির অনুষ্ঠিত বিগত বছরে ৬৩৫৯ সড়ক দুর্ঘটনায় ৮৫৪৩ জন নিহত – যাত্রী কল্যাণ সমিতি বোয়ালখালীতে বিএনপির কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত জাগৃতি কার্যকরী সংসদ নির্বাচন ২০২৫-২০২৬ শপথ গ্রহণ ও কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে

বরিশালে ঠান্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভীড় করছে মানুষ,বেশি ঝুঁকিতে শিশুরা

রিপোর্টার নামঃ
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ১৪৭ বার পঠিত

মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:

বরিশালে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডাজনিত নানা রোগে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে।হাসপাতাল গুলোতে নিউমোনিয়া,ব্রঙ্কিওলাইটিস,অ্যাজমা,শ্বাসকষ্ট,ডায়রিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি।এর মধ্যে বেশির ভাগই শিশু।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (এআরআই) বা ঠান্ডাজনিত রোগে মৃত্যুর কোনো তথ্য নেই।তবে বিভাগের সবচেয়ে বড় সরকারি হাসপাতাল বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের তথ্য অনুযায়ী,এই হাসপাতালে সদ্য সমাপ্ত বছরের নভেম্বরে ২৭ জন এবং ডিসেম্বরে ২৪ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।আর জানুয়ারির পাঁচ দিনে মারা গেছে তিন শিশু।তাদের অধিকাংশই মারা গেছে ঠান্ডাজনিত রোগে।আর এই হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ডিসেম্বরে মারা গেছেন আরও চার বয়স্ক ব্যক্তি।তাঁরাও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে মারা যান।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়,গত বছরের ৭ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় দুই মাসে শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগ বা অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন (এআরআই) বা সর্দি-কাশি, গলাব্যথা থেকে শুরু করে ব্রঙ্কাইটিস, ব্রঙ্কিওলাইটিস, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩ হাজার ৮৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে গত ৭ নভেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর রোগীর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯৫৪ জন। সেই হিসাবে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৪ জানুয়ারি, চার দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৩৩ জন। তবে বেসরকারি সূত্রের তথ্য অনুযায়ী এই সংখ্যা তিন গুণেরও বেশি।

এর সঙ্গে করোনা অভিঘাতের কোনো যোগসূত্র আছে কি না, জানতে চাইলে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, সেটি সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা এমনিতেই কমে যায়। তাই যেকোনো রোগে দ্রুত আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে সে সব ব্যক্তির। আর শীতকালে প্রকৃতিগত ভাবেই সব মানুষের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা লোপ পায়। এটিও একটি বড় কারণ।

এবার শীত কিছুটা আগাম এলেও এর আচরণে ভিন্নতা লক্ষ করা গেছে।নভেম্বরের শুরুতে এ অঞ্চলে মৃদু শীত অনুভব হলেও তাপমাত্রা কখনো স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, আবার কমে যাওয়ার প্রবণতা ছিল। ফলে দিনে গরম, শেষ রাতে বেশ ঠান্ডা আবহাওয়া বিরাজ করেছে। আবার হঠাৎ জানুয়ারির প্রথম দিন থেকে শীতের তীব্রতা দেখা যায়। শীতের এমন খেয়ালি আচরণের কারণেও শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব এবার বেশি বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।

আজকে শুক্রবার (০৬ জানুয়ারি) সকালে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়,মেডিসিন ওয়ার্ড, শিশু ওয়ার্ডসহ সব কটি ওয়ার্ড রোগীতে ঠাসা।শয্যা না পেয়ে অধিকাংশ রোগী মেঝেতে আছেন। একইভাবে হাসপাতালের বহির্বিভাগেও রোগীদের ভিড় দেখা যায়।তাদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, আন্ত–ওয়ার্ড ছাড়াও বহির্বিভাগে সরকারি খোলার দিন চিকিৎসা নিচ্ছে গড়ে তিন শতাধিক শিশু। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডটি ৩৬ শয্যার হলেও সেখানে দুপুর ১২টায় রোগী ছিল ১৩২ জন। ফলে বেশির ভাগ শিশুকে মেঝেতে শয্যা নিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছিল।

ওয়ার্ডটির নার্সরা জানান,নভেম্বরের শুরু থেকেই প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক শিশু এখানে আসছে। তারা সবাই নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, সর্দি–কাশি, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। এত রোগী আসছে যে শয্যা দেওয়া যাচ্ছে না। একই সঙ্গে রোগী সামলাতে তাঁদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বরিশাল শহরের নবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা শারমিন আক্তার দুই দিন ধরে হাসপাতালের মেঝেতে শয্যা নিয়ে সাড়ে চার বছর বয়সী মেয়ে রামিশার নিউমোনিয়ার চিকিৎসা করাচ্ছেন। শারমিন বলেন, ‘কোনো সিট খালি নাই। হাসপাতালে প্রতিদিন এত অসুস্থ বাচ্চা আসছে ভাবা যায় না।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা একাধিক শিশু রোগীর স্বজনেরা বলেছেন, শয্যার অভাবে মেঝেতে শয্যা পেতে থাকতে হচ্ছে তাঁদের। এতে শিশুরা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সময়ে এসব রোগ থেকে রেহাই পেতে গরম কাপড় ব্যবহার, যতটা সম্ভব ঠান্ডা পরিবেশ এড়িয়ে চলা জরুরি। এ ক্ষেত্রে শিশুদের ঠান্ডা বাতাস থেকে দূরে রাখা, সেই সঙ্গে ধুলাবালু থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখতে হবে। শৈত্যপ্রবাহ চলাকালে শিশুদের যতটা সম্ভব ঘর থেকে কম বের করতে হবে। ঘরের মধ্যে ঠান্ডা বাতাস যেন না ঢোকে, সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে।

সাংবাদ পড়ুন ও শেয়ার করুন

আরো জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 Sumoyersonlap.com

Design & Development BY Hostitbd.Com

কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।