মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
আরটিভির বরিশাল প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী খান জসিমের ছেলে মুসাব্বির খান জারিফের (১৯) মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।দাফনের ২৩ দিন পর আজ বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বরিশাল নগরীর আঞ্জুমান-ই-হেমায়েতই মুসলিম গোরস্থান থেকে জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু আব্দুল্লাহ খানের উপস্থিতিতে মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
তিনি জানান,নিহত মুসাব্বির খান জারিফের।বাবার আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।রিপোর্ট এলে জানা যাবে কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে।
জারিফের বাবা মোহাম্মদ আলী খান জসিম বলেন,গত ২৬ জানুয়ারি কাটপট্টির বাসা থেকে মাদারীপুরে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে যায় জারিফ।মাদারীপুর পৌঁছে একাধিকবার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয় এবং ২৮ জানুয়ারি জারিফের বরিশালে ফিরে আসার কথা।তবে ২৮ জানুয়ারি রাত ১২টার দিকে জারিফের মোবাইলে ফোন করা হলে রিসিভ করেনি।২৯ জানুয়ারি দুপুর ১২টায় আবারো কল করা হলেও রিসিভ করেনি।এমনকি জারিফের বন্ধু বিকির মোবাইলে কল দিলেও সে রিসিভ করেনি।
তিনি বলেন,২৯ জানুয়ারি আসরের পর জারিফের তিন বন্ধু দ্বীপ,ইব্রাহিম ও রাজন (যারা বরিশালে অবস্থান করছিল) আমাদের বাসায় এসে জানায় জারিফের শ্বাসকষ্টের কোনো রোগ রয়েছে কিনা।তখন আমি এ ধরনের কোনো রোগ নেই জানিয়ে তাদের কাছে কী হয়েছে জানতে চাই।ওই সময় তারা একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে কথা বলতে বলে।ওই নম্বরে কল দেওয়া মাত্র জানতে পারি জারিফ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।পরে সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে আমার ছেলে জারিফকে নিয়ে রওয়ানা দেয় বন্ধুরা।পথিমধ্যে আমার ছেলে,বিকিসহ হাসপাতালে যোগাযোগ করা মোবাইল নম্বরে কল দিলেও তারা রিসিভ করেনি।তবে সন্ধ্যা ৭টার দিকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে যখন জারিফকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয় তখন চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।৩০ জানুয়ারি মুসলিম গোরস্থানে জারিফের দাফন সম্পন্ন হয়।
মোহাম্মদ আলী খান জসিম বলেন,প্রথমে কোনো সন্দেহ হয়নি|তবে পরবর্তীতে জারিফের বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া জারিফের মোবাইল খতিয়ে দেখে বিভিন্ন ছবিসহ ডাটা খুঁজে না পাওয়া,কয়েক দিন পর মোটরসাইকেল উদ্ধার হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয়দের দেওয়া বিভিন্ন তথ্যে জারিফের মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বলে মনে করছি।এছাড়া যারা মাদারীপুরে জারিফের সঙ্গে ছিল তার মধ্যে বিকি হাসপাতালেও আসেনি। এমনকি আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগও করেনি। আবার যে বন্ধু অংকনের নানাবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল তার পরিবারসহ অন্য বন্ধুরাও যা বলছে তাদের একজনের সঙ্গে অন্যজনের কথার মিল নেই।
তিনি বলেন,আমি মনে করি জারিফকে মাদারীপুর হাসপাতালে ভর্তি করাসহ মৃত্যুর রহস্য চাপিয়ে রাখার পেছনে বড় ধরনের কোনো অপরাধ সংগঠিত হয়েছে।এক কথায় হত্যার সন্দেহ করছি আমি ও আমার পরিবার।আমি চাই আমার ছেলের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদ্ঘাটন হোক এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।
প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ আলী খান জসিম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একমাত্র ছেলে মুসাব্বির খান জারিফের মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের আবেদন করেন।