মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরোঃ
১০ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন নৌযান শ্রমিকেরা।এ জন্য গতকাল শনিবার রাত ১২টা থেকে বরিশাল নদীবন্দরসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদীবন্দর ও লঞ্চঘাট থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার যাত্রীবাহী কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি।ফলে বিপাকে পড়েছেন দক্ষিণের নৌপথ নির্ভর হাজারো যাত্রী।
আজ রবিবার(২৭ নভেম্বর) সকালে বরিশাল নদীবন্দরে এসে অনেক যাত্রী লঞ্চ চলাচল বন্ধ দেখে হতাশ হন। বরিশাল থেকে মেহেন্দীগঞ্জে যাওয়ার জন্য সকালে নৌবন্দরে আসেন আসলাম হোসেন। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার ব্যক্তিগত কাজে তিনি বরিশাল আসেন। বাড়ি ফেরার জন্য লঞ্চঘাটে এসে জানতে পারেন লঞ্চ ধর্মঘট চলছে।
বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক কবির হোসেন বলেন, শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে সকাল থেকে বরিশাল নদীবন্দর থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি।
বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশন ও নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক আবু সাঈদ বলেন, ‘শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে সারা দেশে তেলবাহী, বালুবাহীসহ সব পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ আছে।আমরা চাই আমাদের যৌক্তিক দাবি গুলো মানা হোক।তবে এখন পর্যন্ত সরকারসহ কোনো পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি।আর আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।
নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের নেতারা বলেন, সরকার ও নৌযান মালিকেরা ২০১৬ সালে সর্বশেষ এ খাতের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পুনর্নির্ধারণ করেছিল। এরপর কয়েক দফা বেড়েছে দ্রব্যমূল্য ও ভাড়া। কিন্তু শ্রমিকদের উন্নতি হয়নি। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। কিন্তু সরকার ও মালিকপক্ষ এতে কর্ণপাত না করায় এখন বড় আন্দোলনের দিকে যেতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।
নৌযান শ্রমিকদের দাবি ও কর্মবিরতি ঘোষণার বিষয়ে লঞ্চমালিকদের সংগঠন অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার সহসভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, ‘গত শুক্রবার প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান দাঁর দপ্তরে মালিক-শ্রমিকদের একটি সভা ডেকেছিলেন।সেখানে আমাদের সংগঠনের সভাপতিসহ আমরা এবং শ্রমিকদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে শ্রম প্রতিমন্ত্রী এক মাসের মধ্যে নৌযান শ্রমিকদের বেতন-ভাতাসংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়নের জন্য সময় নিয়েছেন। কিন্তু শ্রমিকদের প্রতিনিধিরা শনিবার তাঁদের সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলে সভাস্থল ত্যাগ করেন। এরপর শনিবার কিছুই জানাননি তাঁরা।
সাইদুর রহমান বলেন, ‘এই মুহূর্তে লঞ্চ ব্যবসার অবস্থা মন্দা। আমরা এ ব্যবসা বন্ধ করে দিতে পারলে বাঁচি। সেই মুহূর্তে ধর্মঘট ডাকলে আমাদের ক্ষতির চেয়ে লাভই হবে। আর আমাদের পক্ষে এই মুহূর্তে বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করা অসম্ভব।
শ্রমিকদের ১০ দফা দাবি হলো নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক দেওয়াসহ শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ,খাদ্য ভাতা ও সমুদ্র ভাতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা,দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা,চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহে দেশের স্বার্থবিরোধী অপরিণামদর্শী প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা,বালুবাহী বাল্কহেড ও ড্রেজারের রাত্রিকালীন চলাচলের ওপরে ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিল, নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস দেওয়াসহ ভারতীয় সীমানায় সব ধরনের হয়রানি বন্ধ, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা ১০০ শতাংশ কার্যকর করে সব লাইটার জাহাজকে সূচি অনুযায়ী চলাচলে বাধ্য করা, চরপাড়া ঘাটে ইজারা বাতিল ও নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের সব ধরনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করা।
দাইয়ানুর রহমান (সম্পাদক) তাপস কুমার ঘোষ (প্রকাশক) শিমুল হোসেন, (নির্বাহী সম্পাদক) আজহারুল ইসলাম-বাবলু হোসেন ( নির্বাহী সম্পাদক)
অফিসঃ পশ্চিম শেওড়াপাড়া- ইকবল রোড বাসা নং- ৪১৬/৪ মিরপুর ঢাকা-১২১৬,
Email: Info@sumoyersonlap.com, taposhg588@gmail.com,shimul00252@gmail.com
01715522822, 01728.855627, 01710118632, 01709255325
https://www.sumoyersonlap.com
কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।