শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
ফুলবাড়িতে পুলিশের অভিযানে গাঁজাসহ আটক-১ নামে বেনামে সম্পত্তিসহ কোটি টাকার মালিক শিক্ষা নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তাহের পঞ্চগড়ে গ্রাম আদালত নিয়ে সচেতনতার জন্য সমন্বয় সভা দক্ষিণ জেলা বিএনপি পদ ফিরে পাওয়ায় দোয়া মাহফিল গভীর রাতে শীতার্তদের মাঝে ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব ফরিদপুর এর শীতবস্ত্র বিতরণ ফুলবাড়ীতে ৫০ বোতল ফেনসিডিল সহ অটোরিকশা চালক গ্রেফতার ফুলবাড়ীতে আ’লীগ-ছাত্রলীগের দুই নেতা গ্রেফতার চট্টগ্রামে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র-গুলি উদ্ধার গাজীপুর মহানগরে নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে বড়দিন উদযাপন গাজীপুর মহানগরের বিভিন্ন গীর্জা পরিদর্শন করেন জিএমপি’র মাননীয় পুলিশ কমিশনার

বরিশালে প্রেমের টানে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে আসা ভারতীয় যুবকের মৃত্যু।

রিপোর্টার নামঃ
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২২
  • ১৯৭ বার পঠিত

মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরোঃ

প্রেমের টানে বরিশালে আসার তিন দিন পর ভারতীয় এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাভেদ খান (২৯) নামের ওই যুবক গত রোববার সকালে বরিশালে আসেন। প্রেমিকার (২৩) সঙ্গে ঘোরাঘুরির পর কয়েক দফা অসুস্থ বোধ করলে অবশেষে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখেন।অবস্থার অবনতি হলে গতকাল বুধবার (১২ অক্টোবর)ভোর রাতে ঢাকায় নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে তোলার পরপরই ওই যুবক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

পুলিশ ও প্রেমিকার সূত্রে জানা গেছে, জাভেদ ভারতের উত্তর প্রদেশের হাসানপুর এলাকার বাসিন্দা। সেখানে হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যানটেশনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন।২০১৭ সালের শেষের দিকে বরিশালের ওই তরুণীর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় জাভেদের।ওই তরুণী নগরের ভাটিখানা এলাকার বাসিন্দা।বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ থেকে সম্প্রতি স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন তিনি।

বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রিফায়তুল হায়দার বলেন,গত সোমবার হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি ছিলেন জাভেদ খান। তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ট্যাটু করা ছিল। তিনি কিছু রোগে ভুগছিলেন বলে প্রাথমিক কিছু পরীক্ষা থেকে জানা গেছে।

২০১৭ সালের শেষের দিকে বরিশালের ওই তরুণীর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় জাভেদের।তাঁর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে চিকিৎসকেরা একটি বোর্ড গঠন করেছেন।২০১৮ সালেও জাভেদ আরেকবার বাংলাদেশে এসেছিলেন।এবার দ্বিতীয় বারের জন্য বরিশালে এসে নগরের কাঠপট্টি এলাকার হোটেল অ্যাথেনা ইন্টারন্যাশনালে উঠেছিলেন তিনি। হোটেলটির অভ্যর্থনা ডেস্কের দায়িত্ব প্রাপ্ত সাব্বির হোসেন জানান,রোববার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে জাভেদ নামের ওই ভারতীয় নাগরিক তাঁদের হোটেলে আসেন এবং ৪১০ নম্বর কক্ষটি ভাড়া নেন।পরে তাঁর বন্ধু পরিচয়ে একজন তরুণী দেখা করতে আসেন এবং কিছু সময় কক্ষে থাকেন।পরদিন সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ জাভেদ খান কক্ষটি ছেড়ে দেন এবং অভ্যর্থনাvকক্ষে তাঁর ব্যাগ রেখে যান। গতকাল মঙ্গলবার ওই তরুণী এসে ব্যাগটি নিয়ে যান। বুধবার সকালে পুলিশের মাধ্যমে তাঁরা জানতে পারেন,লোকটি মারা গেছেন।

সাব্বির হোসেন বলেন, ‘পুলিশ আমাদের কাছ থেকে জাভেদের আসা-যাওয়ার সব তথ্য নিয়ে গেছে। পুলিশের সঙ্গে তখন ওই তরুণীও ছিলেন।

জাভেদ খানের প্রেমিকা ওই তরুণী বলেন, রোববার আসার পর তাঁরা ঘুরতে বের হন। দুপুরে হঠাৎ করে বুকে ব্যথা অনুভব করে জাভেদ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসা নেওয়ার পর কিছুটা সুস্থ বোধ করলে তিনি হোটেলে ফেরত আসেন। পরদিন আবার ঘুরতে বেরিয়ে জাভেদ বুকে ভীষণ ব্যথা অনুভব করতে থাকেন। এবার নগরের অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বারে নিয়ে যান তিনি। চিকিৎসক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেন। সেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রতিবেদন দেখে চিকিৎসক দ্রুত শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। হাসপাতালে ওই দিনই জাভেদকে ভর্তি করেন তিনি। অবস্থা গুরুতর দেখে সেখানকার চিকিৎসকেরা জাভেদকে সিসিইউতে রাখেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে জাভেদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ায় তাঁকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।গতকাল বুধবার ভোরে ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে অ্যাম্বুলেন্সে ওঠানোর পরপরই মারা যান জাভেদ।

ওই তরুণী আরও বলেন, জাভেদের পরিবারের সঙ্গেও পরিচয় ছিল তাঁর। অসুস্থ হয়ে পড়ার পরপরই জাভেদের পরিবারকে বিষয়টি জানান তিনি। মারা যাওয়ার পরও তাঁর পরিবারকে খবর দিয়েছেন।

এ ঘটনা নিয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ভারতীয় নাগরিক জাভেদ প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে বরিশালে এসেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে চিকিৎসকেরা একটি বোর্ড গঠন করেছেন। প্রাথমিক ভাবে যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তাতে জাভেদ খানের হৃদযন্ত্রে ও কিডনিতে সমস্যা ছিল।  এ ছাড়া তাঁর লিভারেও অনেক সমস্যা ছিল।তবে তাঁর শরিলে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।

পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, ‘লাশ হস্তান্তরের বিষয়টি ভারতীয় দূতাবাসের হাতে। তারা যেভাবে বলবে,সেভাবেই লাশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা জাভেদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি,তাদের কোনো অভিযোগ পাইনি।এরপরও পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।বর্তমানে জাভেদের লাশ বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেলের মর্গে রয়েছে|

সাংবাদ পড়ুন ও শেয়ার করুন

আরো জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 Sumoyersonlap.com

Design & Development BY Hostitbd.Com

কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।