মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
বরিশাল বিভাগের মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ বশির আহম্মেদ।কুয়াশায় মানুষের দৃষ্টিসীমা কমে এসেছে ৫০ মিটারে।আবহাওয়া দপ্তর বলছে মঙ্গলবারের আগে পরিস্থিতি উন্নতির কোনো সম্ভাবনা নেই।
ফলে কনকনে আবহাওয়ায় কাবু হয়ে গেছে এই অঞ্চলের মানুষ।মৌসুমের বৈরী আচরণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে রয়েছেন ছিন্নমূল ও নিম্নআয়ের মানুষ।টানা চারদিন ধরে প্রচন্ড শীতের বৈরিতা মোকাবিলা করলেও এখনও জেলার সব গুলো উপজেলার হতদরিদ্রতরা পায়নি সরকারি কম্বল।
জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে,১০ উপজেলায় ১৪ হাজার কম্বল বরাদ্দ পেয়েছে।শীতের প্রকোপ না কমলে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে।
সরকারি সহায়তা না পৌঁছানোয় এসব এলাকার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে।তাদের মধ্যে বেশি কষ্টে আছে শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা।তাদের প্রত্যাশা একটি গরম কাপড়ের।
আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের বাসিন্দা শ্যামল সেন বলেন,যখন প্রচন্ড শীত আসে তখন কম্বল নিয়ে কেউ আসে না।সরকারও আসে না। শীত চলে গেলে সবাই কম্বল নিয়ে আসে।এক পিস গায়ে জড়িয়ে দিয়ে ছবি তুলে নিয়ে পেপারে দেয়।ওই ব্যক্তির পরিবারে যে আরও শীতার্ত আছে তার খোঁজ নেয় না কেউ।
বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের অশীতিপর দুধমেহের বিবি বলেন,শীত-বন্যায় আসল গরিব কিছু পায় না। যারা পায় তারা গরিব না।শীত আসছে এখন কিছুই পাচ্ছি না। যখন ফাল্গুন চলে আসবে তখন দেখব কত লোক সাংবাদিক নিয়ে আসছে কম্বল দিতে।যদি তোমরা কম্বল দাও তাহলে এখন দাও।এখন তো শীতে বাঁচি না।
বরিশাল নদী বন্দরে পরনের কাপড় গায়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন মকবুল হোসেন।তিনি বলেন,অন্য বছর শীতের কম্বল পেয়েছি।এবছর শীতে মরে যাচ্ছি প্রায়।কিন্তু কেউ তো একটা সোয়েটারও দিল না।অথচ শুনি সরকার নাকি অনেক বরাদ্দ দেয়। তাহলে সেই বরাদ্দ যায় কোথায়?
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন,নতুন বরাদ্দ এখনো পাইনি।গত বছরের বরাদ্দের ৪ হাজার ৯০০ পিস কম্বল পেয়েছি।সেগুলো জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দিয়েছি।আরও বরাদ্দ এলে পৌঁছে দেওয়া হবে।
বরাদ্দকৃত কম্বলের সংখ্যা জানেন না উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিহা তানজিল।তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত প্রতি ইউনিয়নে ৪০০ পিস করে কম্বল পাঠিয়েছি।
বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত ফাতিমা বলেন, আমরা ২৯শ কম্বল পেয়েছি।এখনো বিতরণ শুরু করিনি।চেষ্টা রয়েছে খুব তাড়াতাড়ি বিতরণ শুরু করব।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল জানান, বর্তমানে কোনো কম্বল নেই। কম্বল পেলে অসহায়দের মধ্যে বিতরণ করবেন।
বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সরকারিভাবে জেলায় ১৪ হাজার কম্বল পেয়েছি। তা বিভিন্ন সংস্থা ও জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। শীতের মাত্রা বিরাজ করতে থাকলে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা বলে কম্বল বিতরণ করতে হবে।