মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও অর্থের অভাবে মেডিক্যালে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বরিশালের উজিরপুরের সৌরভ হাওলাদার।টাকার অভাবে তিনি ভর্তি হতে পারছেন না।
সৌরভ উজিরপুর উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের দিনমজুর মন্টু চন্দ্র হাওলাদার ও জুঁথিকা রানী হাওলাদার দম্পতির একমাত্র ছেলে।
জানা যায়,মেধাতালিকা অনুযায়ী বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন সৌরভ।এমন সাফল্যে এলাকায় তিনি প্রশংসায় ভাসলেও কপালে তার চিন্তার ভাঁজ।কারণ,দিনমজুর বাবা সংসার চালাতেই রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন।ছেলেকে মেডিকেলে ভর্তির অর্থ জোগাড় করার সামর্থ্য তার নেই।স্থানীয়দের সাহায্য-সহযোগিতায় ছেলেকে এইচএসসি পাস করিয়েছেন তিনি।
সৌরভ বলেন,বাবার দিনমজুরির টাকায় আমাদের সংসার চলে।তার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে তিনি অসুস্থ।আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই টিউশনি করছি।পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পাওয়ায় কিছুটা সুবিধা হয়েছিল।মেডিকেল ভর্তির সুযোগ পেয়ে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করেছি,কিন্তু এত টাকা দিয়ে ভর্তি করানো পরিবারের পক্ষে অসম্ভব।
সৌরভের বাবা মন্টু চন্দ্র হাওলাদার বলেন,ছেলের লেখাপড়ার খরচ আমি দিতে পারিনি|দিনমজুরি করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনোরকমে সংসার চালাই।দুই বছর ধরে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন ঠিকমতো কাজ করতে পারছি না।এ কারণে বড় দুঃসময়ের মধ্যে আছি।
স্থানীয় শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন,সৌরভ অত্যন্ত মেধাবী। পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে এবং অষ্টম শ্রেণিতে উপজেলার মধ্যে প্রথম হয়ে বৃত্তি পেয়েছে।এসএসসি ও এইচএসসিতেও পেয়েছে জিপিএ-৫। কঠোর পরিশ্রমের ফলে সৌরভ মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।সমাজের বিত্তবানরা সহযোগিতার হাত বাড়ালে তার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারিহা তানজিল বলেন, সৌরভ উজিরপুরের গর্ব সে যেন মেডিকেলে ভর্তিসহ তার পড়াশোনা নিশ্চিন্তে চালিয়ে যেতে পারে সেজন্য আমরা তাকে সহযোগিতার চেষ্টা করবো।
উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ সিকদার বলেন, সৌরভ উজিরপুরের মুখ উজ্জ্বল করেছে। খোঁজ-খবর নিয়ে তাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।