মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরোঃ
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ড থেকে নবজাতক চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় শাহিনুর বেগম নামের এক নারীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয়রা।সেই সঙ্গে শিশুটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার (১৮ জানুয়ারি) এ ঘটনা ঘটে।আটক শাহিনুর বেগম বরিশাল সদর উপজেলার চরহোগল গ্রামের আনিস মিয়ার স্ত্রী।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে,সন্তান প্রসবের জন্য দুদিন আগে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডে ভর্তি হন নগরীর কাউনিয়া বিসিক রোড এলাকার বাসিন্দা হেলাল বেপারীর স্ত্রী কাকলী বেগম। মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এক পুত্রসন্তান জন্ম দেন তিনি। নাম রাখা হয় ‘মাহাদি’।
কাকলী বেগম বলেন, ‘বুধবার বেলা ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে কোনো একসময় শিশুটিকে হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভেতর তার বিছানায় রেখে ননদ রুনু বেগমকে নিয়ে টয়লেটে যাই। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে বিছানায় আর শিশু সন্তানটিকে দেখতে পাইনি।সঙ্গে সঙ্গে ওয়ার্ডের ভেতর মাহাদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করি কিন্তু পাইনি।এরপর বিষয়টি ওয়ার্ডের দায়িত্বরত চিকিৎসকনার্স, স্টাফ ও আমাদের স্বজনদের জানাই।এরপর ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও সন্তানের খোঁজ পাইনি।
এদিকে শিশুটি নিঁখোজ হওয়ার অল্প সময়ের ব্যবধানে নগরের আমানতগঞ্জ পানির ট্যাংক এলাকায় সন্দেহের বসে এক শিশুসহ এক নারীকে আটক করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহাদাৎ হোসেন মাসুম বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি বাসার দিকে যাচ্ছিলাম। বাসার গলির ভেতর প্রবেশ করতেই এক নারীকে ওড়না দিয়ে কিছু ঢাকার চেষ্টা করতে দেখি। তখন তাকে সন্দেহের বসে কী করছেন জানতে চাইলে ওড়নার কাপরের ভেতর থেকে শিশুর কান্নার শব্দ পাই। এরপর ওই শিশুটি পেয়েছে কোথায় এমন প্রশ্ন করলে নারী জানান, এটি তার সন্তান। এরপর আরও কিছু প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে তাকে কারা যেন বাচ্চাটিকে দিয়েছেন।
‘এরপর আমি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে যায়। তখন নারী শিশুটিকে রেখে পালিয়ে যেতে চাইলে সবাই মিলে তাকে ধরে ফেলি।পরে ৯৯৯ ও স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িকে ফোন দেই।খবর পেয়ে আমানতগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ এসে শিশুটিসহ ওই নারীকে তাদের হেফাজতে নেয়।
এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) ফজলুল করিম বলেন, আমানতগঞ্জ পানির ট্যাংক এলাকা থেকে মাসুম নামের এক ব্যক্তির সহায়তায় শিশুটিকে উদ্ধার করেন পুলিশ সদস্যরা। তখন ওই শিশুটিকে চুরি করে নিয়ে যাওয়া নারী শাহিনুর বেগমকেও আটক করা হয়।
তিনি আরও বলেন, শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।আটক নারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।