মোঃ আরিফুজ্জামান সাগর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা নিয়ে শঙ্কা দূরে সরিয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট যথোপপযুক্ত হয়েছে বলে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, (বাজেট সম্পর্কে) কে কি বলছে তা নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানোর দরকার নেই। আমরা একটি উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করার জন্য আমরা একটি উপযুক্ত বাজেট ঘোষণা করেছি।
প্রধানমন্ত্রী আজ বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবন (ঢাকা জেলা ও ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যালয়) উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
ঢাকা জেলা ও ঢাকা মহানগরের হাজার হাজার উৎসাহী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী তাদের দলীয় প্রধানকে দেখতে সমবেত হওয়ায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি একটি মহাসমাবেশে পরিণত হয়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষ আমাদের পক্ষে আছে। তাই, আমরা বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারব, ইনশাআল্লাহ।
প্রায় ৭.৬২ লাখ কোটি টাকার এত বিশাল বাজেটের বাস্তবায়নে যারা শঙ্কিত, তাদের কড়া সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রতি বছর বাজেট পাশের আগে কেউ কেউ বলেন, আমরা বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারব না। কিন্তু, আমরা প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এমপি, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, এমপি, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এমপি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ড. মো. এনামুর রহমান, এমপি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
শেখ হাসিনা দেশবাসীকে একটি সুসংবাদ দেন যে লোডশেডিং-এ জনগণের ভোগান্তি লাঘবের জন্য তারা ইতোমধ্যে কাতার ও ওমানের সাথে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী জ্বালানি ক্রয়ে চুক্তি করেছেন এবং অন্য কয়েকটি দেশের সাথেও একই ধরনের চুক্তির লক্ষ্যে কাজ করছেন।
তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য ভালো যে আমরা কাতার ও ওমানের সাথে চুক্তি করেছি। আমরা অন্যান্য কিছু দেশের সাথে এ নিয়ে কাজ করছি যাতে আমরা গ্যাস ক্রয় করে দেশে আনতে পারি এবং জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করতেপারি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা সবার দোরগোড়ায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, কিন্তু, মূল্যবৃদ্ধির কারণে তেল ও গ্যাস ও কয়লার ঘাটতি থাকায় জনগণকে লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এসব আমাদের আমদানি করতে হয়।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জ্বালানি আমদানি করতে তাদের সমস্যায় পড়তে হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে ছিল, তারা এখন সেগুলো স্থাপন করায় কয়লার সংকট দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা এবং মূল্যস্ফীতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অর্থনৈতিক মন্দা এবং বিশ্বব্যাপী মূল্যবৃদ্ধি না ঘটলে জনগণকে কখনোই জ্বালানির জন্য ভোগান্তি পোহাতে হতো না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি জানতেন যে জনগণের জন্য লোডশেডিং সহ্য করা কঠিন হবে। তাই তার সরকার সফলভাবে এর সমাপ্তি টেনেছিল। কিন্তু বৈশ্বিক পরিস্থিতি এটি ঘটতে বাধ্য করেছে।
তিনি দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, খালেদা জিয়ার সরকার কানসাটে বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনকারী ১৮ কৃষককে এবং রমজান মাসে উপযুক্ত মজুরির দাবিতে আন্দোলনকারী ১৭ জন শ্রমিককে হত্যা করেছিল।