বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে নিয়োজিত বেসরকারী নিরাপত্তা প্রহরীদের বেতন বৃদ্ধি,বোনাস ও বিভিন্ন ভাতা প্রদান নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক প্রধান কার্যালয় নানান টাল বাহানা করছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ে বেসরকারী নিরাপত্তা প্রহরীদের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।যা এখনো শুরাহা হয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে নিয়োজিত বেসরকারী নিরাপত্তা প্রহরীদের ন্যায্য পারিশ্রমিক না দিয়ে বেতন বৈষম্য সৃষ্টি করে বিভিন্ন ভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে। যা বাংলাদেশ ব্যাংক,বিআরপিডি সার্কুলার নং-০৫ তারিখ ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ খ্রিঃ ৩.৪ অনুচ্ছেদ মুলে আউটসোর্সিং বা চুক্তি ভিত্তিক ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারীদের উপজেলা/অঞ্চলে কর্মরত তাদের জন্য নুন্যতম বেতন ভাতাদি ১৮০০০/- টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লিয়াজু করে তাদের বেতন ৭০০০/- টাকা থেকে ৮০০০/- টাকা দিয়ে তাদেরকে ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত করছে।এছাড়া প্রতি দুই বছর পর পর নবায়নের নামে নিরাপত্তা প্রহরীদের কাছ থেকে মোটা অংঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যার পরিমান সর্বনিম্ন ১০,০০০(দশ হাজার) থেকে ২০,০০০ ( বিশ হাজার) টাকা। কোন কর্মী চাহিদা মত সময়ে টাকা দিতে না পারলে বিনা নোটিশে চাকুরীচ্যুত করা হয়।এর পরে গ্রামের কোন সহজ সরল ছেলেদের ভূল ভাল বুঝিয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ঐ শাখায় নিয়োগ দেওয়া হয়।আর এই কাজের জন্য সারা দেশে তাদের দালাল নিয়োগ দেওয়া আছে।যারা কোম্পানির সুপারভাইজার হিসাবে পরিচিত।
২০১৮ খ্রিঃ থেকে ৭০০০/- টাকা বেতন ৩১ আগস্ট,২০২৪ খ্রিঃ পযর্ন্ত চলমান ছিল।বতর্মানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন হয়ে ০১ সেপ্টেম্বর,২০২৪ খ্রিঃ থেকে তাদের বেতন ৮০০০/- নির্ধারণ করা হয়,যা বতর্মান নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির বাজারমূল্য বিবেচনায় নিত্তান্তই অপ্রতুল।এখানে আরও দেখা যায় যে অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, বাজেট-১১ শাখা পরিপত্র নং-০৭.১১১.০৩।০১.০০.০০৫.২০১০-৫০০ তারিখ ১৮-১২-২০১৯ খ্রিঃ অনুযায়ী ক্যাটাগরি- ৫ বর্ণিত সিকিউরিটি গার্ড(নিরাপত্তা প্রহরী),ক্লিনার(পরিচ্ছন্নতাকর্মী), সহকারী গার্ডেনার,হেলপার,গাড়ি হেলপার ইত্যাদির জন্য নির্ধারিত শ্রম মুল্য ১৬০০০/- টাকা মাসিক বেতন দিতে হবে।বাংলাদেশ গেজেট,অতিরিক্ত সংখ্যা বুধবার নভেম্বর/১৪, ২০১৮ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর অধিকতর সংশোধনকল্পে প্রণীত আইন(ক) দফায় (২ক) অনুযায়ী স্ব স্ব ধর্মীয় উৎসবে উৎসব ভাতা প্রদান করতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে নিরাপত্তা প্রহরীদের ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত করছে।
আরও পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় যে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে নিয়োজিত বেসরকারী নিরাপত্তা প্রহরীরা গত ১৯.০৯.২০২৪ খ্রিঃ তারিখ রোজ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের সামনে একটি শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করতে গেলে কৃষি ব্যাংকের ড্রাইভার ও কোম্পানির কিছু দালালরা নিরাপত্তা প্রহরীদের উপর হামলা চালায় এতে বেশ কিছু নিরাপত্তা প্রহরী আহত হয় এবং দুইজন নিরাপত্তা প্রহারীদের ধরে নিয়ে কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ৩ ঘন্টা আটকে রাখে। পরবর্তীতে সাংবাদিক ও মতিঝিল থানার পুলিশ এর সহযোগীতায় তারা দুইজন মুক্তি পায়।এরপর থেকে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কিছু কতৃপক্ষ ও কোম্পানির লোকজন নিরাপত্তা প্রহরীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং চাকুরীচ্যুত করার হুমকি দেয়। এ ব্যাপারে প্রধান কার্যালয়ের বেশকিছু উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়,নিরাপত্তা প্রহরীরা যে মানববন্ধন করছে এটি যৌক্তিক এবং শান্তিপূর্ণভাবেই তদের মানববন্ধন করছিল ঠিক তখনিই কে বা কারা তাদের উপর লাঠিচার্জ করে। আসলে বর্তমান বাজারে এ বেতন দিয়ে চলা যায় না।এরা আমাদের ব্যাংকের জন্য অনেক পরিশ্রম করে সে তুলনায় তাদের বেতন খুবই কম।
এ ব্যাপারে নিরাপত্তা প্রহরীরা গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন,আমরা ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ে ৪ সদস্যসের একটি টিম ব্যবস্থাপনা পরিচালক এর সাথে সাক্ষাৎ করি এবং একটি স্বারকলিপি পেশ করি।কিন্তু তাদের তরফ থেকে আমরা কোন সারা না পেয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করতে গেলে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের ড্রাইভার ও কোম্পানির কিছু লোক আমাদের উপর লাঠিচার্জ করে এবং আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়।আমাদের কোন কথা বলতে দেইনি। বরং আমাদের সহকর্মীদের গালিগালাজ ও চাকুরীচ্যুত করার হুমকি দেয়।
আরেক নিরাপত্তা প্রহরী বলেন, ৮০০০/- টাকা বেতন যা বর্তমান নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির বাজারমুল্য বিবেচনায় নিতান্তই অপ্রতুল।আমরা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে বেসরকারী নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে নিয়োজিত ন্যায় ও নিষ্ঠার সহিত আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে আসছি।আমরা নিরাপত্তা প্রহরীর কাজের পাশাপাশি আমাদের অর্জিত অভিজ্ঞতা দিয়ে বিকেবির বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে সহযোগিতা করে আসছি।এখানে উল্লেখ্য প্রত্যেক শাখা কার্যালয়ে একজন পিয়ন বা অফিস সহায়ক থাকার কথা থাকলেও ৯৮% শাখা কার্যালয়ে কোন পিয়ন বা অফিস সহায়ক নাই। যার কারনে দিবা-রাত্রি ব্যাংক পাহারার কাজে নিয়োজিত থাকার পাশাপাশি তাদের নির্ধারিত কাজও আমরা করে দিচ্ছি।যার ফলে আমাদের জন্য নির্ধারিত ০৮ ঘন্টা সময়ের অনেক বেশি সময় কাজ করতে হয়।মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয়ের কাছে বিশেষ অনুরোধ ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান বাতিল করে আমাদের বেতন বৃদ্ধি ও বোনাসের ব্যবস্থা করে দিন।আমাদের আর কোন দাবি নাই।