কামরুজ্জামান শিমুল বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাটের আলোচিত ট্রিপল হত্যাকাণ্ডের রায় ঘোষণা করেছে আদালত। রায়ে সাবেক আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড, প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। রবিবার (৪ ডিসেম্বর)খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ নজরুল ইসলাম হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে এ মামলার ৫০ জন আসামি উপস্থিত ছিল। আদালত সূত্রে জানা গেছে, বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের স্থানীয় রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ফকির ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী দিহিদারের মধ্যে বিরোধের জের ধরে এ ট্রিপল হত্যাকাণ্ড ঘটে। সে সময় পুলিশ ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ফকিরের লাইসেন্স করা একটি বিদেশি সটগান, একটি রিভলবার, একটি দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটার গান, একটি কুড়াল ও তিনটি গুলি জব্দ করে।
আদালত সূত্রে আরো জানা গেছে যে, ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর বেলা আড়াইটার দিকে মোড়েলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ফকিরের নেতৃত্বে আসামিরা যুবলীগ নেতা শুকুর শেখকে সেলিমাবাদ ডিগ্রি কলেজ মাঠে গুলি করে ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রাখে। বেলা তিনটার দিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী দিহিদারের বাড়িতে আক্রমণ করে নৃশংসভাবে কুপিয়ে তাকে নিয়েও ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রাখে। আনসার আলী দিহিদারের স্ত্রী মঞ্জু বেগমকেও মারধর করে সন্ত্রাসীরা। মারধরে মঞ্জু বেগমের দুই পা ও বুকের হাড় ভেঙে যায়। একাধিক গুলি ও মারধরে ঘটনাস্থলে শুকুর শেখ মারা যান ও বাগেরহাট থেকে খুলনা নেওয়ার পথে মারা যান আওয়ামীলীগ নেতা আনসার আলী দিহিদার। দীর্ঘ ২২ মাস বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২০ সালের ৩০ জুলাই দিন গত রাত ১২টার দিকে মারা যান মঞ্জু বেগম। ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর রাতে মোড়েলগঞ্জ থানায় নিহত শুকুর শেখের ভাই শেখ ফারুক হোসেন বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা বাদী হয়ে আরও একটি মামলা করেন। ২০১৯ সালের ৪ জুন পুলিশ ৫৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হল, আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ফকির, আবুয়াল ফকির, মোঃ হুমায়ুন হাওলাদার, মিল্টন খান, মোঃ মফিজ খান, মোঃ ফারুক, মোঃ আবুল হোসেন শেখ, মোঃ মোদাচ্ছের শেখ, সুনীল দাস, বিশ্বনাথ ওরফে বিশ্ব প্রমানিক, মোঃ লিয়ন শিকদার, সুব্রত কুমার সাহ ওরফে পল্টু (পলাতক), মেহেদী ওরফে রুবেল ফকির ও মোঃ মহি মোল্লা।