রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৪৩ অপরাহ্ন

বাগেরহাটের খাঞ্জেলী মাজারের ঠাকুর দীঘিতে রাজত্ব করছে মাদ্রাজ ও পিলপিল নামের দুই মাদ্রাজি কুমির। 

রিপোর্টার নামঃ
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২২
  • ১৭২ বার পঠিত

কামরুজ্জামান শিমুল, বাগেরহাট বিশেষ প্রতিনিধিঃ

ছয়’শ বছরের অধিক সময় ধরে মিঠা পানিতে বসবাস ছিল হিংস্র কুমিরের। প্রাকৃতিকভাবে কুমির হিংস্র প্রজাতির প্রাণী হলেও বাগেরহাটের খানজাহান আলী মাজার সংলগ্ন ঠাকুর দীঘির কুমির ব্যতিক্রম। দর্শনার্থীরা গায়ে হাত বুলিয়ে নিজ হাতে মুখের মধ্যে খাদ্য ঢুকিয়ে দিলেও কুমির কখনও হিংস্রতা দেখায়নি। দুইশ একর আয়তনের বিশাল এই ঠাকুর দীঘিটি আধ্যাত্মিক সাধক ধর্মপ্রচারক ও সমর নায়ক হযরত খানজাহান আলী খনন করার পর যাতে কেউ দীঘির সুপেয় পানি নষ্ট করতে না পারে সেজন্য দীঘিতে এক জোড়া মিঠা পানির কুমির ছেড়ে দেওয়া হয়। সেই থেকেই বংশ পরমপরায় খানজাহান আলী দরগার এই দীঘিতে মিঠা পানির কুমির বসবাস করে আসছে। যদিও এখন আর “কালা পাহাড় ধলা পাহাড়” এর বংশধর কিংবা তাদের অস্তিত্ব এই দীঘিতে নেই। তবে ২০০৫ সালের ২৪ জুন ভারতের মাদ্রাজ ক্রোকোডাইল ব্যাংক থেকে আনা ৫ টি মিঠা পানির কুমিরের মধ্যে ২ টি এই দীঘিতে রয়েছে। দর্শনার্থীদের মুরগীই এই দীঘির কুমিরের প্রধান খাবার।

বর্তমানে দীঘিতে পিলপিল ও মাদ্রাজ নামের ২ টি কুমির রয়েছে। পিলপিল কয়েকবার ডিম দিলেও তা দিয়ে বাচ্চা হয় নাই। কিছুদিন আগে দুটি কুমিরই একসাথে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বন্ধ করে দেয় খাবার গ্রহণ। জেলা প্রশাসন, প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও মাজারের খাদেমদের তদারকি ও দ্রুত চিকিৎসার ফলে কুমির দুটি সুস্থ হয়ে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ‘অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার ফলে পুরুষ কুমিরটির (মাদ্রাজ ) গায়ে চর্বি জমে যাওয়ায় সে প্রজনন ক্ষমতা হারিয়েছে। এবছরের মে মাসে মা কুমিরটি (পিলপিল ) দীঘির পূর্ব পাড়ে গর্ত খুঁড়ে ৭০টির মতো ডিম পাড়ে। কয়েক বছর ধরে সে ডিম পাড়লেও বাচ্চার দেখা মেলেনি।

মাজারে আসা দর্শনার্থীরা তাদের মন বাসনা পূরণ করতে মাজারের কুমিরদের মুখে মুরগি/মোরগ দিয়ে থাকে। তারা স্থানীয় খাদেমদের সহায়তায় ভয়ংকর এই কুমিরের গায়ে হাত বুলিয়ে দেয়। মাঝে মধ্যে ২/১ টি হিংস্রতার খবর পাওয়া গেলেও প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্তবৃন্দ নির্বিঘ্নে আশীর্বাদ নিয়ে যাচ্ছেন এই কুমিরের। তাছাড়া ঠাকুর দীঘির স্বচ্ছ পানি যে পানিতে এই কুমিরের বসবাস সেই পানি শেফার নিয়তে পান করছে দর্শনার্থীরা আবার ওই দিঘিতেই নারী পুরুষ সকলে মিলে গোসল করছে নির্বিঘ্নে। খানজাহান আলীর (রহ.) সময়কার কুমিরের প্রজাতি সর্বশেষ ২০১৫ সালে মারা গেলে বর্তমানে দীঘিতে রাজত্ব করছে মাদ্রাজ ও পিলপিল।

সাংবাদ পড়ুন ও শেয়ার করুন

One thought on "বাগেরহাটের খাঞ্জেলী মাজারের ঠাকুর দীঘিতে রাজত্ব করছে মাদ্রাজ ও পিলপিল নামের দুই মাদ্রাজি কুমির। "

  1. সুন্দর উপস্থাপনা
    আরো তথ্যবহুল প্রতিবেদন প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ করছি।

Comments are closed.

আরো জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 Sumoyersonlap.com

Design & Development BY Hostitbd.Com

কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।