প্রশান্ত বিশ্বাস যশোর প্রতিনিধিঃ
চলছে বৈশাখ মাস প্রচণ্ড রোদ ও খরা উপেক্ষ্যা করে । আকাশে কখনো কালো মেঘ, কখনো আবার ঝকঝকে পরিষ্কার। এদিকে মাঠ ভরা সোনালী ধান। ফসল কেটে ঘরে তুলতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন যশোরের জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার কৃষকেরা । তবে চিন্তার ভাঁজ কৃষকের মাথায়, স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ মূল্যে কৃষাণ ক্রয় করে ধান ঘরে নিতে নানাবিধ চেষ্টায় বিভোর তারা। দেখে মনে হচ্ছে দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের।
সরেজমিন বাঘারপাড়া উপজেলার ধলগ্রাম , ভুলবাড়িয়া , বরভাগ, আন্দুবাড়িয়া , দশপাখিয়া, আগড়া , নারিকেলবাড়িয়া , দরাজহাট , বাশুয়াড়ী , দোহাকুলা , সহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, কেউ ধান কাটছে , কেউ দিচ্ছে ধানের সারি , কেউ আবার গরু, মহিষ, ঘোড়াগাড়ি টমটম, নসিমন, করিমন, টলি, যোগে ধান বয়ে নিচ্ছেন বাড়িতে, কেউ কেউ আবার নিকটবর্তী জমি থেকে মাথায় করে ধান বয়ে নিচ্ছেন ঘরে। অনেকে আবার ধান কেটে মাঠেই সেরে ফেলছেন মাড়ায়ের কাজ। পুরুষের পাশাপাশি ও ধান কাটা ও মাড়াই করার কাজে অংশ নিচ্ছেন মহিলারা ও । ধলগ্রামের কিছু কৃষক সুশান্ত বিশ্বাসের উৎপল বিশ্বাস, সোহগ বিশ্বাস একজন একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী হয়েও তার বাবাকে সহযোগীতা করেন, এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, এ বছর ৫ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি, ফসল অনেক ভালো হয়েছে তবে কৃষাণের যে মূল্য তাতে করে এক মণ ধানে মিলছে একজন কৃষক। এতে করে ধান ঘরে তুলতে মোট ফসলের এক তৃতীয়াংশ ধান শ্রমিকদের জন্যা ব্যয় হবে বলে মনে করছেন তিনি।
অপর একজন কৃষক সমেন বিশ্বাস, তিনি বলেন, এ বছর বোরো ধান মৌসুমে ১২ একর জমিতে ধান রোপন করেছি । প্রাকৃতিক পরিবেশ যদি অনুকূলে থাকে তাহলে দায়-দেনা পরিশোধ করে সোনা-মণিদের ভোরণ পোষণের পাশাপাশি নিজের আর্থিক যোগান দিতে সক্ষম হব অন্যথায় বিপদের শেষ হবে না । এছাড়াও জমির মালিক মাহাফুজুর মোল্লা , সহ একাধিক কৃষকদের সাথে কথা হলে জানা যায়, ফসল ভালো হলেও শঙ্কা কাজ করছে বৈশাখীর ঝড় নিয়ে পাশাপাশি শ্রমিক সংকট এবং কিষাণের মূল্য যেন তাদের দুশ্চিন্তার বড় কারণ । তবে শ্রমবাজারের শ্রমিক মূল্য নির্ধারণ করে দিলে একদিকে শ্রমিক এবং অপরদিকে ধান চাষিরাও একটি নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে উভয়ের কাজ সম্পন্ন করতে পারবে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় এ বছর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ হাজার ৫ শত ৪৫ হেক্টর যেখানে বোরো ধান রোপন করা হয়েছে ১৩ হাছার ৪ শতক ৪৫ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৫ হাজার ৭ শত ২৬ মেট্রিক টন। এখন পর্যন্ত মোট উৎপাদিত জমির ৭৫ শতাংশ ধান ইতিমধ্যেই কর্তন করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ রুহল আমিন মিল্টন কুমার বৈরাগী উপসহকারী কৃষি অফিসার হোসেন বলেন, ধান কর্তনের ক্ষেত্রে কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও রিপার মেশিন ব্যবহার করে ধান কর্তন করলে একদিকে যেমন অর্থ সাশ্রয় হবে অপরদিকে কৃষকদের সময় বেঁচে যাবে। এতে করে শ্রমিক সংকটও কেটে যাবে বলেও মনে করছেন তিনি।