জসীমউদ্দীন, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৭ জানুয়ারি ২০২৪। নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ,তরীকত ফেডারেশন, তৃণমূল বিএনপি, বিএনএফ, বিএনএম, খেলাফত আন্দোলন প্রভৃতি। কিন্তু বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সমর্থকবান্ধব বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। অপর দিকে একাত্তরের বিতর্কিত ভূমিকার জন্য নিবন্ধন হারিয়েছে জামায়াত ইসলামী। বিএনপি সমর্থকবান্ধব বাংলাদেশের বৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল, কিন্তু খালেদা জিয়া ছাড়া নেতৃত্ব দেওয়ার কোনো নেতা নেই এ দলে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন তারেক জিয়া। তিনি রাজনীতি সম্পর্কে কিছুই বুঝেন না। কারণ, তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে দেখতে। রাজনীতি গণমানুষের জন্য করতে হলে মাঠে যেতে হয়। বিএনপি রাজনৈতিক দল হয়ে ওঠার পেছনে তার বাবার সেনাবাহিনীর প্রধান হওয়াই মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। খুব অল্প সময়ে দিকহারা বামপন্থী, জাসদ, ন্যাপ, সর্বহারা, আওয়ামী-বাকশালী, স্বাধীনতাবিরোধী কিছু লোক নিয়ে অল্প সময়ে সেনাবাহিনীর প্রভাব কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নামক একটি সংগঠনের জন্ম দেন জেনারেল জিয়াউর রহমান। জিয়া জিয়াউর রহমান খুন হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তার কিছুদিন ক্ষমতায় ছিলেন। তার রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যর্থতার সুযোগ নিয়ে এরশাদ ক্ষমতা দখল করেন। বিএনপির হাল ধরেন জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া। তিনি দীর্ঘদিন দিন ক্ষমতায় ছিলেন। তার ক্ষমতায় থাকার সময় ক্ষমতা উপভোগ করেছেন তার ছেলে তারেক জিয়া। খালেদা জিয়া জেলে থাকা এবং শারীরিক সমস্যার কারণে তারেক জিয়াকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা তাকে নেতা হিসেবে মেনে নেন। কিন্তু রাজনৈতিক নেতৃত্ব দেওয়ার যে প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও অভিজ্ঞতা তারেক জিয়ার থাকার কথা, তা একেবারে নেই। এর ফলে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রবীণ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে রাজনৈতিক পাল্লা দিতে গিয়ে দিন দিন দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে পড়ছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য রাজনীতিতে বিএনপির নেতাদের হাঁটুর সমান বয়সী তারেক জিয়াকে বাঘে আনার ক্ষমতা বিএনপির বর্ষীয়ান কোনো নেতার নেই। এর ফলে তারেক জিয়ার কথামতো দল পরিচালনা করতে গিয়ে দলটির আজকের এই অবস্থা। দলটির কর্মী-সমর্থকের কোনো অভাব নেই। শুধু নেই সুদূরপ্রসারী রাষ্ট্রনায়কোচিত নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতাসম্পন্ন নেতার। তারেক জিয়া রাজনীতিতে একটি অবুঝ শিশু। এই অবুঝ শিশুকে বিএনপির মতো একটি বড় দলের এমন কোনো নেতা নেই যে গাইডলাইন দেবে। তিনি তার ইচ্ছামতো দল পরিচালনা করছে এবং নিজে যা চিন্তা করছেন তা দলের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। এর কুফল বিভিন্নভাবে হাজার হাজার নেতা-কর্মী সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে ভোগ করছেন। সুদূর লন্ডনে বসে বিশ্ব বাস্তবতা এবং বাংলাদেশের অর্থসামাজিক অবস্থা সম্পর্কে তার সামান্যতম ধারণা আছে বলে মনে হয় না। যদি থাকত তাহলে তার অনেক হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে দলের নেতা-কর্মীদের এভাবে কষ্টের মধ্যে ফেলতেন না। বলা হয়ে থাকে, বিএনপি'র ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করাটা ঠিক হয়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা ঠিক হয়নি। অপর দিকে ২০২৪ সালের নির্বাচন বর্জন করা একেবারেই ঠিক হয়নি। কারণ, আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী দেশ, দাতা সংস্থা, উন্নত দেশগুলো... যেসব দেশের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য আছে, এসব ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেলে আমরা অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হব। এসব দেশ ও দাতা সংস্থা আমাদের দেশ একটি গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রত্যাশা করেছিল বর্তমান সরকারের কাছে। কিন্তু বিএনপির একটি দাবি তত্ত্বাবধায়ক সরকার অধীনে নির্বাচন। অপর দিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটিই কথা, তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেটা মৃত, এটাকে পুনর্জন্ম দেওয়া সম্ভব নয় এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। বিএনপি তা প্রত্যাখ্যান করেছে। এই প্রত্যাখ্যানের ফলে বিএনপির ক্ষমতায় আরোহন পথ আরও দীর্ঘায়িত হলো। বর্তমান বিএনপি একটি নির্বাচনী বিশ্বাসী দল এবং এই দলের নেতারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান। দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে নির্বাচনের অংশগ্রহণ করতে না পেরে কেউ কেউ দল ছেড়ে ক্ষমতাসীন দলে যোগ দিয়ে নির্বাচন অংশগ্রহণ করেছেন, কেউ বিএনপির জোট ত্যাগ করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। কেউ স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন অংশগ্রহণ করেছেন। একটি দল টানা তিনটি মেয়াদ ক্ষমতার বাইরে। বিএনপি ক্ষমতা না গেলেও প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা রাখার এক নম্বর দাবিদার। কিন্তু দলের নেতৃত্বের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আজকের এ অবস্থা। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন-সংগ্রামের কর্মসূচি ঘোষণা করে তা বাস্তবায়ন করতে না পারার ফলে দেশের মানুষের কাছে হয়ে যাচ্ছে। এখন ৭ জানুয়ারি ২০২৪-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসছে। বিএনপি তার গতানুগতিক আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে বেশ কয়েকবার ক্ষমতাচ্যুত করার আল্টিমেটাম দিয়েছিল। কিন্তু প্রতিবারই দেশবাসী দেখেছেন তাদের ব্যর্থতা। নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগ পরিপূর্ণভাবে ক্ষমতা উপভোগ করবে এবং ক্ষমতা প্রয়োগ করবে। বিএনপি কোনো ধরনের আন্দোলন-সংগ্রাম তখন সংঘটিত করতে পারবে কি না সন্দেহ আছে। তারেক জিয়া রাজনীতিতে নিজকে কালিমা লিপ্ত করে ফেলেছেন। কারণ, তার বিরুদ্ধে ২১ আগস্টের মতো জঘন্য ঘটনার দৃষ্টান্ত আছে। তিনি স্বাভাবিকভাবে দেশে এলে কারাবন্দী হয়ে যেতে পারেন। এর ফলে দলের অবস্থা কঠিন থেকে কঠিনতর হতে পারে, এই শুধু একটি জিনিস খুব ভালোভাবে বোঝেন। তাই তার মা খালেদা জিয়ার কঠিন শারীরিক অবস্থার সময়ও দেশে আসার সাহস করছেন না। তারেক জিয়া যদি ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ব্যাপারে জড়িত না থাকতেন, তাহলে বিএনপির রাজনীতিতে আজকের এই দুরবস্থা হতো না। একজন নেতা অনৈতিকভাবে কিছু ব্যাপারে হাজার মাইল দূরে থাকতে হয়, তাহলো নৈতিক চরিত্র, রাষ্ট্রীয় সম্পদ
দাইয়ানুর রহমান (সম্পাদক) তাপস কুমার ঘোষ (প্রকাশক) শিমুল হোসেন, (নির্বাহী সম্পাদক) আজহারুল ইসলাম-বাবলু হোসেন ( নির্বাহী সম্পাদক)
অফিসঃ পশ্চিম শেওড়াপাড়া- ইকবল রোড বাসা নং- ৪১৬/৪ মিরপুর ঢাকা-১২১৬,
Email: Info@sumoyersonlap.com, taposhg588@gmail.com,shimul00252@gmail.com
01715522822, 01728.855627, 01710118632, 01709255325
https://www.sumoyersonlap.com
কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।