ভারী বর্ষণের কারণে মুন্সীগঞ্জ জেলায় আলু আবাদে বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি কৃষক। ভারী বর্ষণের আঘাতে তলিয়ে গেছে আলু আবাদ করা জমি । কিভাবে ক্ষতি পুষিয়ে উঠবেন এই ভেবে এখন দিশেহারা কৃষক। কৃষকদের অনেকেই বিভিন্ন এনজিও এবং ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে আবাদ করেছেন আলু।
তাই এই লোন নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছেন তারা । উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে , এ বছর টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় আলু আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে। ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের ফলে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা দুই তিনদিনের ভিতরে জানা যাবে। কৃষকদের কান্না এই যেন শেষ হচ্ছে না একটার পর একটা দুর্ভোগ লেগেই আছে। কবে শেষ হবে কি কৃষকদের কান্না। টঙ্গীবাড়ী উপজেলায় বিভিন্ন বিলে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা মেশিন নিয়ে চেষ্টা করছে তাদের আবাদ করা আলু রক্ষা করা, কেউ আবার কলস দিয়ে পানি সেঁচে আলু আবাদ করা জমি রক্ষা করছেন। কৃষকদের কান্না কেউ থামাছেই না। তাদের শেষ সম্পর্কটুকু হারিয়ে যাচ্ছে ভারি বর্ষণে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধীপুর ইউনিয়নের মটুকপুর বিলে চাষিরা মেশিন দিয়ে আলু আবাদ করা জমি সেচে আলু রক্ষা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, ফ্রান্স থেকে ছুটি তে দেশে এসে আলু আবাদ করি, এখন আলু আবাদ করা পড়াই শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। এখন ঘুর্ণিঝড়ের ভারি বর্ষণের কারণে আমার আবাদ করার সব জমির আলু নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি।
আল্লাহ যদি আমাদের রক্ষা না করেন তাহলে আমাদের মরণ ছাড়া কোন উপায় নেই। প্রবাস থেকে অনেক কষ্ট করে কাজ করে দেশে টাকা পাঠাই সেই টাকা দিয়ে ফ্যামিলি চলে। আবার আলু আবাদ করি এবছর এভাবেই সারের দাম, বীজের দাম, জমির দাম অনেক বেশি।
আবার ভারি বর্ষণে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে একমাত্র আল্লাহই জানে। আমরা কৃষকরা কিভাবে বেঁচে আছি। গত দুই বছরে আলু আবাদ করে অনেক লোকসান খেয়েছি। চাঠাতি পাড়ার বিলে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষেতের মাঝে হাঁটু পর্যন্ত পানি আবাদ করা আলু পানির নিচে তলিয়ে আছে। আরেক কৃষক রবিন বেপারী কেঁদে কেঁদে বলে আমার সব শেষ হয়ে গেছে।
আমার আবাদ করা সব আলু পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এখন সরকার যদি আমাদের দিকে না তাহলে আমরা বউ পোলাপাইন নিয়ে কিভাবে বাঁচব, ব্যাংকের লোন কিভাবে শোধ করব। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলায় ৭০% আলু আবাদ করা শেষ হয়েছে। বাকি ৩০% সব প্রস্তুতি আবাদ করার জন্য শেষ করা হয়েছিল। টানা দুই দিনের বৃষ্টির কারণে আবাদ করা আলু পচন হওয়ার আশঙ্কা কৃষকদের ভাগ্য এইবারে মাটির নিচে শেষ।