মণিরামপুর(যশোর)প্রতিনিধিঃ
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রোহিতায় রাস্তা দখলের প্রতিবাদে বুধবার ভুক্তভোগী মহিলারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করেছেন। এ সময় এলাকাবাসী ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে রাস্তাটি অবমুক্ত করেন। জানা যায়, রোহিতা ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজ উদ্দিনের ছোট ভাই আমেরিকা প্রবাসী হারুন অর রশিদ। তিনি রোহিতা বাজারে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের ছোট ভাই মাসুদুর রহমানের কাছ থেকে ২০১৬ সালের ১৩ জুন নয় শতক জমি কেনেন। রেজিস্ট্রির দুই বছর পর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে জমিদাতা মাসুদুর রহমানের মৃত্যু হয়। জমি রেজিস্ট্রির সাত বছর পর হারুন অর রশিদের ভাই ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন গত শুক্রবার দুপুরে লোকজন নিয়ে ওই জমিসহ পাশের ইটের সোলিংয়ের রাস্তাটি দখল করেন। দখলের পর ইট, কাঁটাতার ও নেট দিয়ে রাস্তার চারপাশসহ মুখ ঘিরে রাখেন। ফলে গত শুক্রবার থেকে পাশের পাঁচটি পরিবারের লোকজনের যাতায়াত বন্ধ হয়ে পড়ে। রাস্তা ঘিরে রাখায় ওই পরিবারসমুহের শতাধিক লোকজন বাড়ির মধ্যে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। তবে বরাবরের মতো ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন জানান, তার ভাইয়ের কেনা জমি (রাস্তাসহ) তিনি দখল করেছেন। বুধবার (১৯ জুলাই) বেলা ১১ টার দিকে ভুক্তভোগী পরিবারের বিলকিস খাতুন, শায়লা খাতুন, সুমনা খাতুনসহ অন্য মহিলারা ঝাড়ু হাতে নিয়ে রোহিতা বাজারে ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মিছিল বের করেন।
এ সময় আশপাশের আরও শতাধিক মহিলা এসে তাদের মিছিলে যোগ দেন। পরে মিছিল সহকারে বিক্ষুব্ধরা বাজারের পাশে ইউনিয়ন পরিষদ ঘেরাও করতে যান। খবরর পেয়ে খেদাপাড়া ফাঁড়ির পুলিশ এসে তাদেরকে নিবৃত্ত করেন। এক পর্যায়ে রোহিতা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি প্রভাষক আলাউদ্দিন হোসেন লিটন, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, সাবেক সভাপতি মেহের আলীর নেতৃত্বে এলাকাবাসী ভুক্তভোগীদের সাথে নিয়ে গিয়ে ঘিরে রাখা রাস্তাটি অবমুক্ত করেন। যুবলীগ সভাপতি প্রভাষক আলাউদ্দিন হোসেন লিটন জানান, প্রায় ৬০ বছর ধরে ওই এলাকার বাসিন্দারা যে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে আসছিল। সেই রাস্তাটি ইউপি চেয়ারম্যান দখল না করলেও পারতেন। খেদাপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সোমেন বিশ্বাস জানান, রিরোধপূর্ণ রাস্তাটি অবমুক্ত করায় এলাকাবাসীর যাতায়াত করতে আর কোনও সমস্যা নেই। উল্লেখ্য জমিদাতা প্রয়াত মাসুদুর রহমানের বড় ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, হাফিজ উদ্দিনের ভাইয়ের রেজিস্ট্রিকৃত জমির দলিলের নকশায় উল্লেখ রয়েছে প্রস্থ ৩২ ফুট এবং দৈর্ঘ্য ১২৭ ফুট। কিন্তু প্রস্থ ৩২ ফুটের পরিবর্তে ৫৪ ফুট এবং দৈর্ঘ্য ১২৭ ফুটের পরিবর্তে ৮০ ফুট(রাস্তাসহ) দখল করায় এ সমস্যা হয়েছে।