মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার সবকটি হাওরে ধান কাটায় কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনে কৃষকেরা অনেক ব্যাপক উন্নয়ন, লাভবান হয়েছে ধরনের বাম্পার ফলনে। আধুনিক বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে দেশের হাওর অঞ্চলের মধ্যনগরে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনে ব্যাপক সাফল্য এনে দিয়েছে কৃষকদের। এবছরের বোরো মৌসুমে আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার হয়েছে সর্বোচ্চ । সরকার ভর্তুকি দিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে এবছর দেওয়া হয়েছে ২০ টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার এবং গত ৪ বছরে দেওয়া হয়েছে ৪৬ টি হারভেস্টার মেশিন। মধ্যনগর ও ধর্মপাশায় মোট ৬৬ টি মেশিনে ধান কাটার কাজে ব্যবহৃত হয়েছে ।
এতে করে কম সময়ের মধ্যে হাওরের ধান কাটা সম্ভব হয়েছে। যার ফলে অন্য বছরের মতো পড়তে হয়নি শ্রমিক সংকটে। হারভেস্টার মেশিনে ধান সংগ্রহে সাশ্রয় হয়েছে প্রায় ২৫ কোটি টাকারও বেশি । আগামীতে কৃষিকে আরও আধুনিক করতে কৃষকদের বেশি করে যান্ত্রিক প্রশিক্ষণের আওতায় আনার কথা জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হোসেন আল বান্না জানান, মধ্যনগর ও ধর্মপাশায় ৩১ হাজার ৮ শত ৫২ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ১ লক্ষ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আবাদকৃত মোট জমির ৪৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৪ হাজার ১১৪ হেক্টর ধান কাটা হয়েছে মেশিনের মাধ্যমে। মেশিনের মাধ্যমে ধান কর্তনে কৃষকদের প্রতি হেক্টরে খরচ হয়েছে ৯ হাজার থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ১০ হাজার টাকা। অথচ শ্রমীক দিয়ে ১ হেক্টর জমির ধান কেটে মাড়াই পর্যন্ত কৃষকের খরচ হয় ১৮ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। কম্বাইন্ড হারভেস্টারে ধান কাটার ফলে কৃষকের সাশ্রয় হয়েছে হেক্টর প্রতি ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা। মোট হিসেব করলে সাশ্রয়ের পরিমাণ ২৫ কোটি টাকার উপরে বলে জানায় কৃষি বিভাগ
অন্যান্য বছর বোরো মৌসুম আসলে হাওরে শ্রমিক সংকট দেখা দিতো। শ্রমিক সংকট কাটাতে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় বাইরের জেলা থেকে শ্রমিক আনা হতো ধান কাটার জন্য। বন্ধ করে দেওয়া হতো স্থানীয় বালু মহালগুলো, যেন বালুমহালের শ্রমিকেরা ধান কাটায় নিয়োজিত হতে পারে। তবে এ বছরের চিত্র পুরোটাই ভিন্ন। হাওরে তেমন কোনো শ্রমিক সংকট ছিল না। উল্টো দ্রুত ধান কেটে সময় ও অর্থের সাশ্রয় হয়েছে। আর এর সবই অনুকূলে আবহাওয়া ও যান্ত্রিকতার কারণে সম্ভব হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কৃষকরা।
মধ্যনগর উপজেলার কৃষক উপানন্দ সরকার বলেন, কিয়ার প্রতি ভাগালু (ধান কাটার শ্রমিক) দিয়ে ধান কাটালে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ হয় । তারপর আবার সেই ধান মাড়াই করতে ধানের ভাগ অথবা টাকা দিত হয় সব মিলিয়ে ৪ হাজার টাকা খরচ হয় । আর মেশিনে ধান কাটলে সব কাজ একসঙ্গেই হয়ে যায়। খরচ আসে সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা। মেশিনের কারণে কৃষক অনেক লাভবান হয়েছে।
একাধিক কৃষক যায়যায়দিন কে বলেন, এ বছর হাওরে বাম্পার ফলন হয়েছে। ২৮, ২৯ ধান রোগের আক্রমণে ক্ষতি হয়েছে, অন্যান্য ধান কেয়ারে ২০ মন পেয়েছি আমরা। ২৮, ২৯ একেবারে জ্বলে নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি ধান কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের কারণে দ্রুত কাটাও শেষ হয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হোসেন আল বান্না ও সহকারী কৃষি অফিসার কবীর হোসেন বলেন, এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক হারভেস্টার মেশিন দিয়ে হাওরে ধান কাটা হয়েছে। মেশিনে ধান কাটার সময় কোনো সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এর ফলে হাওরে শতভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে । মেশিনে ধান কাটার ফলে পুরো দুই উপজেলায় কৃষকদের প্রায় ২৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। আগামীতে কৃষিকে যন্ত্র নির্ভর ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে কৃষকদের আরও বেশি করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
দাইয়ানুর রহমান (সম্পাদক) তাপস কুমার ঘোষ (প্রকাশক) শিমুল হোসেন, (নির্বাহী সম্পাদক) আজহারুল ইসলাম-বাবলু হোসেন ( নির্বাহী সম্পাদক)
অফিসঃ পশ্চিম শেওড়াপাড়া- ইকবল রোড বাসা নং- ৪১৬/৪ মিরপুর ঢাকা-১২১৬,
Email: Info@sumoyersonlap.com, taposhg588@gmail.com,shimul00252@gmail.com
01715522822, 01728.855627, 01710118632, 01709255325
https://www.sumoyersonlap.com
কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।