মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার মধ্যনগর বাজার সহ স্থানীয় বাজারেগুলোতে হঠাৎ করে ডিজেলের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। সেই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বৃদ্ধি করে অধিক মুনাফা লুফে নিচ্ছে, চড়া দামে বিক্রি করছে অভিযোগ রয়েছে ক্রেতাদের। এতে বিপাকে পড়েছেন হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে খননযন্ত্র ব্যবহারকারী ও স্থানীয় কৃষকরা। ডিজেল সংকটের কারণে জমিতে পানি সেঁচ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে কৃষকেরা বেশি দামে পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে ডিজেল ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছেন।
জানা যায়, গত কয়েকদিন আগেও মধ্যনগর বাজার সহ আশপাশের বাজারে ডিজেলের সরবরাহ স্বাভাবিক ছিল।কিন্তু হঠাৎ করে গত শনিবার থেকে নগদ টাকা দিয়েও মিলছেনা ডিজেল।এতে বিপাকে পড়েছেন রোর ফসল আবাদ করতে কৃষকরা।এছাড়াও হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে খননযন্ত্র ব্যবহারের কারণে মধ্যনগর ও আশপাশের বাজারে ডিজেলের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এই সুযোগে স্থানীয় অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রতি লিটার ডিজেল ২০ থেকে ৩০ টাকা অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে । ডিজেলের সরবরাহ নেই এমন অজুহাতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।
মধ্যনগর বাজারের ডিজেল বিক্রেতা শিবচান কানুর দোকানের সামনে গিয়ে দেখা যায়, একটি ডিজেলের ড্রাম খালি হয়ে পড়ে আছে। ব্যবসায়ী শিবচান কানু জানান, সরবরাহ না থাকায় তার দোকানে ডিজেল নেই। তিনি অতিরিক্ত দামে কখনও ডিজেল বিক্রি করেননি বলেও দাবি করেন। একই বাজারের জয় স্টোরের সামনেও অর্ধখালি ডিজেলের দুটি ড্রাম পড়ে থাকতে দেখা যায়। দোকানের মালিক জয়ন্ত রায় জানান,ডিপোতেই ডিজেল সংকট রয়েছে। সরবরাহ না থাকায় এ সংকট তৈরি হয়েছে।
এছাড়াও মধ্যনগর থানার বংশীকুন্ডা বাজার, হামিদপুর চৌরাস্তা বাজার, সাতুর বাজার, টুকের বাজার, বলরামপুর বাজার, জনতার বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে টাকা দিয়েও মিলছে না ডিজেল। মধ্যনগর বাজারের আবীর এন্টারপ্রাইজের পরিচালক সানাউল হাসান শুভ বলেন, সাচনা বাজার তেলের ডিপোতে ডিজেল না থাকায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। তবে দাম বৃদ্ধি পায়নি।
উপজেলা কাবিটা বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির কৃষক প্রতিনিধি মোবারক হোসেন বলেন, বিষয়টি সত্যি হয়ে থাকলে দ্রুত বাজার নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। তা না হলে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ ও চাষাবাদ বিঘ্নিত হবে। কৃষক কামরুল ইসলাম জানান,ডিজেল না পেয়ে কৃষি কাজে ব্যবহৃত নৌকা ব্যবহার করতে পারছি না। আমরা খুব কষ্টে আছি। সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। ফারুকনগর গ্রামের কৃষক করুক সরকার বলেন, গতকাল সারা বাজার ঘুরেও এক লিটার ডিজেলও পাইনি। জমিতে ধান রোপন করেছি যদি পানি না দিতে পারি তাহলে সব ধান গাছ নষ্ট হয়ে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অতীশ দর্শী চাকমা বলেন, এ ব্যাপারে সরেজমিনে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এম এ মান্নান,
মধ্যনগর,সুনামগঞ্জ
০১৭৭১৯২১৬৫২