মোঃ রায়হান আলী নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর মহাদেবপুরে বাঁশ ও বিভিন্ন গাছের ডাল কেটে নেয়ার অভিযোগে থানায় মামলা করায় আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসে মামলার বাদী মোঃ গোলাম মোক্তাদেরকে মারপিট করে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে উপজেলার হাতুড় ইউনিয়নের বেহাজত শিবদিঘী মোড়ে এ ঘটনাটি ঘটে।
সূত্র জানায়, বেহাজত (কাছলাপাড়া) গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে গোলাম মোক্তাদেরের বাগান থেকে দুই দফায় জোরপূর্বক ২৬০টি বাঁশ ও অন্যান্য গাছের ডালপালা কেটে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষের লোকজনরা। এ ঘটনায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি গোলাম মোক্তাদের বাদী হয়ে তার সৎ ভাই আনোয়ার হোসেন ও আব্দুল ওহাব, আব্দুল ওহাবের স্ত্রী শাপলা বেগম, আল ফারুকের স্ত্রী মমতা বেগম, মৃত ইসমাইল হোসেনের ছেলে ছানোয়ার হোসেনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের করার কারণে আসামীরা মোক্তাদের বিভিন্নভাবে হুমকী-ধামকী প্রদর্শন করতে থাকে। ওই মামলায় আসামীরা ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসে ওইদিন বিকেলে শিবদীঘি এলাকায় ভোক্তাদেরকে একা পেয়ে হাতুড়িসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি মারপিট করতে থাকে। ঘটনার খবর পেয়ে তার মা মনোয়ারা বেওয়া ও স্ত্রী শোভা আরা তাকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে তাদেরকেও বেদম মারপিট করা হয়।
এ সময় মোক্তাদের নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করলে তার হাতে থাকা মোটরসাইকেলের চাবীর আঘাতে ওই গ্রামের মৃত মোজাফফর রহমানের ছেলে মতিউর রহমান আহত হন। তাকে উদ্ধার করে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে চিকিৎক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গোলাম মোক্তাদের, তার মা মোনোয়ারা বেওয়া ও স্ত্রী শোভা আরাকে উদ্ধার করে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। এ ঘটনায় ওই রাতেই মতিউর রহমানের চাচাত ভাই নুরনবী বাদী হয়ে গোলাম মোক্তাদেরকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
আহত মতিউর রহমান জানান, মোটর সাইকেলের চাবী দিয়ে নয় আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে চাকু দিয়ে বুকে ও মাথায় আঘাত করা হয়েছে। অপরদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছু প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, ঘটনার দিন মোক্তাদের মোটরসাইকেল রেখে এখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এমন সময় মতিউর রহমান, আব্দুল ওহাবসহ কয়েকজন মোক্তাদির ঘিরে ধরে মামলা করার বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক করতে থাকে একপর্যায়ে তারা মুক্তাদিরকে এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করে তখন সে নিজেকে রক্ষার জন্য দৌড়ে পালিয়ে যায়।
মোক্তাদেরের মা’ মনোয়ারা বেওয়া ও স্ত্রী শোভা আরা জানান, আসামীরা আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসে ওইদিন বিকেলে মতিউর রহমানসহ অন্যন্য আসামীরা মোক্তাদেরকে একা পেয়ে হাতুড়িসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র দিয়ে বেদম মারপিট করতে থাকে। এ সময় মোক্তাদের নিজেকে বাঁচাতে ঘটনাস্থলের পার্শবর্তী তার মামার বাড়ীতে দৌড়ে গেলে সেখান থেকে বাড়ীর দরজা ভেঙ্গে তাকে ধরে নিয়ে এসে বেদম মারপিট করে। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধারে এগিয়ে গেলে আমাদেরকেও বেদম মারপিট করে। পরে ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ এসে আমাদেরকে উদ্ধার করে মহাদেবপুর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ব্যাপারে মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাফফর হোসেন বলেন, থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।