বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অঙ্গ সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমাণ্ড এর ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ২৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে আলোচনা সভা, কেক কাটা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমাণ্ড, কেন্দ্রীয় কমিটি। এর আগে আজ সকাল ৯টায় ধানমণ্ডি বত্রিশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এর সঞ্চালনায় উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম প্রিন্স। একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারদের রাজনীতি নিষিদ্ধ, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও নাগরিকত্ব বাতিল এখন সময়ের দাবি, শীর্ষক আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমাণ্ড কাউন্সিলের সাবেক মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এমদাদ হোসেন মতিন, সাবেক প্রচার সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের যুগ্ম-মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ উত্তম কুমার বড়ুয়া, সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য-সচিব অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, সেক্টরর্স কমাণ্ডারর্স ফোরামের যুগ্ম-মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার মুহাম্মদ আরিফুজ্জামান নূরন্নবী, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা মনোরঞ্জন ঘোষাল, কাস্টমস ও ভ্যাট এসোয়িসেয়শনের সভাপতি খন্দকার লুৎফল আজমসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদেরকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। একাত্তরে পরাজিত হওয়ার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অপশক্তিরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করছে। আগামীতে রাজাকারের বংশধরদেরকে আবার পরাজিত অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি জয়লাভ করবে। কোন স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি সফল প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে পারবে না।”
বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি বলেন, “বিএনপি-জামাত আবার দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। খুনী জিয়ার দোসররা আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংসের পায়তারা চালাচ্ছে। অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে সমুচিত জবাব দিবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও আদর্শ অনুযায়ী বাংলাদেশ পরিচালিত হবে। রাজাকারদের বংশধররা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করছে। বিএনপির সমাবেশে রাজাকার সাকা চৌধুরীর পুত্রের মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী বক্তব্যে তা আবার প্রমাণিত হয়েছে। এদেরকে সমুচিত জবাব দেয়ার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদেরকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধারা বেঁচে থাকতে কোন রাজাকারের দলকে এদেশে রাজনীতি করতে দিবো না।”
সংগঠনের সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, “১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অঙ্গসংগঠন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমাণ্ড সমগ্র বাংলাদেশে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের অধিকার আদায়ে কাজ করবে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমাণ্ডের পূর্বের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো ঢেলে সাজানোর জন্য খুব শীঘ্রই প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় সাংগঠনিক সফর শুরু করবে। দেশবাসীকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমাণ্ডের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নই আমাদের অঙ্গীকার-এই শ্লোগানকে সামনে রেখে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমাণ্ড প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ও আদর্শ প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব। সমগ্র বাংলাদেশ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ঐক্যবদ্ধ করে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাতিল হওয়া মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণের দাবিতে খুব শীঘ্রই রাজপথে নামবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমাণ্ড। রাজাকার পুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা। মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অপশক্তি রাজাকারদের রাজনীতি নিষিদ্ধ, নাগরিকত্ব বাতিল ও সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে। “নতুন বোতলে পুরনো মদ” থিওরী আপনি মেনে নিলেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি কখনোই মেনে নিবে না। জামায়াতের রাজনীতি এদেশে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্য কোন নামেও জামায়াতকে এদেশে রাজনীতি করতে দেয়া হবে না। অন্যথায় নির্বাচন কমিশন ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা। একাত্তরের পরাজিত স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির দোসরদের রাজপথে মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে রাজপথে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা হবে। দেশের যেকোন প্রান্তে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের ওপর কোন আঘাত আসলে সেখানে যেয়ে তাদের পাশে দাঁড়াবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমাণ্ড। বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন প্রণয়নসহ সকল অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আমাদের সংগ্রাম চলমান থাকবে। খুব শীঘ্রই আমরা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন ও দায়িত্ব বন্টন করে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করবো।