মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি :
মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগিবাড়ি উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এইচ এম সুমন হালদারকে (৪৫) প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার ঘটনাটি পূন তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে এই মামলায় ভূক্তভোগীরা।
শুক্রবার বিকালে পাঁচগাঁও ইউনিয়নের মিলন চেয়ারম্যানের পুরান বাড়ির আঙ্গিনায় সংবাদ সম্মেলন করে নিহত ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম সুমন হালদারের চাচা মো. জাহানুর রহমান সওদাগর। তিনি সমুন হত্যা মামলার ৬ নম্বর আসামী। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে এইচ এম সুমন হালদারের চাচা মো. জাহানুর রহমান সওদাগর বলেন ২০২৪ সালে ৭ জুলাই সুমন হালদারকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আমি জড়িত না আমার ভাইয়েরাও জড়িত না। তার পরও আমার ও আমার ভাইদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। কে বা করা হত্যা করেছে তাও আমি জানি না।
আমরা ঘটনাটি শুনেছি। যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেখানে সিসি ফুটেজ রয়েছে ঘটনার সময় আমি বা যাদের জড়ানো হয়েছে কেউই ছিলো না। পাঁচগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সুমন হালদার দূর্বৃত্তদের হতে নিহত হওয়ার কিছু দিন পর ১৪ জুলাই আমার একটি বাড়ি ও আমার ভাইয়ের একটি বাড়ি জ¦ালিয়ে দেয় প্রয়াত চেয়ারম্যান সুমন হালদারের সমর্থক ডিপজল মোল্লা,রাজিব,ইমন,সোহেল,আর্দশ,বিপুল সহ আরো ২০ থেকে ৩০জন। এতে আমার প্রায় ২ কোটি টাকা ক্ষয় ক্ষতি হয়। এঘটনায় আমি টংগিবাড়ি থানায় মামলা দিতে গেলে সে সময়কার কর্তব্যরত ওসি আমার মামলাটি গ্রহন করেননি।
পরে আমি কোর্টে গিয়ে মামলা করি। আমাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত ভাবে এই মামলাটি সাজানো হয়েছে। এই মামলায় আমাকে ছাড়াও আমার ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিলানুর রহমান মিলন, মো. সেকিনুরকে জড়ানো হয়।বর্তমানে সুমন হালদার হত্যা মামলায় আমরা সবাই জামিনে আছি। প্রয়াত চেয়ারম্যান সুমন হালদারের কতিপয় সমর্থক এখন আমাকে আমার গ্রামের বাড়ি আসতে নানা রকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। বিষয়টি আমি পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি আমার জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছি।
আমি সহ আমার ভাইদের ও আমাদের পরিবারের লোকজনকে হুমকি দিচ্ছে। আমি পাঁচগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এইচ এম সুমন হালদার হত্যার ঘটনার সুষ্ট তদন্ত দাবী করছি এঘটনায় প্রকৃত আসামীদের গ্রেফতারের দাবী জানাচ্ছি। পাশাপশি আমাকে ও আমার দুই ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিলানুর রহমান মিলন, মো. সেকিনুর নামে যে মিথ্যা মামলাটি দায়ের হয়েছে তা সঠিক তদন্ত করে মামলার আসামী থেকে নাম প্রত্যাহার করার জোর দাবী জানাচ্ছি।
আমাদের সাথে ভাতিজা প্রয়াত চেয়ারম্যান সুমনের সাথে কোন দ্বন্দ্ব ছিলো না একটি মহল সুমন হত্যা কান্ডে আমাদের জড়িয়েছে। আমি আর আমার ভাইয়েরা সে সময় আওয়ামীলীগের রাজনীতির প্রতিহিংসার স্বীকার হয়ে মিথ্যা মামলায় আসামী হয়েছি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ছিলেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মিলানুর রহমান মিলন, কামরুল ইসলাম,হাজি মো.খাকিনুর হাওলাদার,মো. সকিনুর ,লিটন হাওলাদার,হামিদ হাওলাদারসহ তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এইচ এম সুমন হালদারকে (৪৫) প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় রোববার বেলা পৌনে একটার দিকে ইউনিয়নের পাঁচগাঁও আলহাজ ওয়াহেদ আলী দেওয়ান উচ্চ বিদ্যালয়ের আঙিনায়। বিদ্যালয়টির
ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে বলে জানায় পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। নিহত চেয়ারম্যান সুমন হালদার পাঁচগাঁও গ্রামের প্রয়াত পিয়ার হোসেন হালদারের ছেলে। তিনি ২০২৩ সালের মার্চে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন তিনি।