মুন্সীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের পূর্ব বিরোধের জেরে তুহিন (২২) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত তুহিন সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বড় মোল্লাকান্দি এলাকার আলমগীর সরকারের ছেলে।
স্বজনরা জানান, আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টা’র দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার
মৃত্যু হয়। এর আগে সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে টঙ্গীবাড়ী উপজেলার পুরা এলাকায় মারধরের ঘটনা ঘটে।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কামাল প্রধান জানান,গতকাল১৩ই মার্চ ( সোমবার) রাত ৯ টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় তুহিনকে হাসপাতাল আনা হয়। তার শরীরে বেধম মারপিট ও মাথার পেছনে জখমের চিহ্ন ছিলো। অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক
চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনা ও বর্তমান ইউপি
চেয়ারম্যান রিপন হোসেনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। সর্বশেষ গেল ২৪ জানুয়ারি কল্পনা পক্ষের ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি জিয়া সরদারকে (৪৫) তুলে নিয়ে কুপিয়ে এবং গুলি করে আহত করার অভিযোগ উঠে রিপন হোসেন পাটোয়ারির ছোট ভাই শিপন পাটোয়ারির বিরুদ্ধে।
ঐ ঘটনার জেরে সোমবার টঙ্গীবাড়ীর উপজেলার যশলং এ পুরা ডিসি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী শেষে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে পুরা বাজার এলাকা থেকে তুলে নিয়ে খোলাবাগানে তুহিনকে বেধড়ক পেটান কল্পনা পক্ষের লোকজন।
মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রিপন হোসেন অভিযোগ করে বলেন, তুহিন আমার পক্ষের হওয়ায় কল্পনার লোকজন ওর উপর ক্ষিপ্ত ছিলো। সোমবার তুহিনকে ধরে নিয়ে কল্পনা পক্ষের বাবু কাজী, জিয়া সরকার, সৈকত দেওয়ান, আজহার মোল্লাসহ সন্ত্রাসীরা তুলে নিয়ে পিটিয়ে আধামরা করে রেখে যায়। হাসপাতালে আজ ওর মৃত্যু হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে মহসিনা হক কল্পনা বলেন, ওই যুবক উগ্র ছিলো, সে অস্ত্র নিয়ে চলতো। শুনেছি কনসার্টে গিয়ে ঝামেলা করেছে। তখন কংশপুরা এলাকার কিছু ছেলে মারধর করেছে। এখানে পূর্ব বিরোধের কোন বিষয় নেই।
টঙ্গীবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজিব খান জানান, রাজনৈতিক পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে একপক্ষের মারধরে যুবকের মৃত্যুর খবর শুনেছি। ময়নাতদন্ত শেষে ও মামলার ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনায় জড়িতরা অধিকাংশ সদর উপজেলার, তবে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।