শ্রীকান্ত দাস, মুন্সীগঞ্জঃ
মুন্সীগঞ্জে প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ করলেন আদালতের বিচারক। বুধবার (২২ নভেম্বর) বেলা পৌনে ১১টার দিকে সাক্ষ্য গ্রহণ করেন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ২ এর বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইফতি হাসান ইমরান।
এ সময় তিনি তার নিজ বিচার ফাইলের ডাক্তার সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিচারকের আদালতের সিরাজদিখান থানার মামলা নং ১৬(৪)২০১৮এর আদেশ নং-৪৭ মূলে গেল ১৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষের এপিপি মুনীরুজ্জামান কনক মামলার জখমী সনদ প্রদানকারী ডাক্তার লিফাত নূর লুনা, তৎকালীন মেডিকেল অফিসার সিরাজদিখান উপজেলার জৈনসার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র এর সাক্ষ্য মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট এর হাইকোর্ট বিভাগের গত ২০ আগস্ট তারিখের ৪৯০ নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে বর্ণিত প্রাকটিস নির্দেশনা মোতাবেক অডিও ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে সাক্ষ্য গ্রহণ করার জন্য বিচার আদালতে আবেদন করেছেন।
এই মর্মে বিচারক গেল ১৯ নভেম্বর ডাক্তার লিফাত নূর লুনা বর্তমানে ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতাল, ঢাকায় কর্মরত থাকায় এবং সারাদেশে চলমান হরতাল ও অবরোধ এর কারণে আদালতে স্ব-শরীরে হাজির হয়ে সাক্ষ্য প্রদান করা ঝুকিপূর্ণ ও দূরহ। এছাড়াও উক্ত সাক্ষী জরুরী চিকিৎসা কাজে তথা সরকারী দায়িত্বে নিয়োজিত বিধায় সাক্ষীর সাক্ষ্য অডিও ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে গ্রহণ করার জন্য বিচারক অনুমতি প্রদান করেন।
সেই প্রেক্ষিতে বুধবার ডাক্তার লিফাত নূর লুনার হোয়াটএ্যাপ নাম্বারে অডিও ভিডিও কলের মাধ্যমে ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতাল, ঢাকায় কর্মরত থাকাকালে বিচারক তার এজলাস কক্ষে বসে অডিও ভিডিও কলের মাধ্যমে সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী মুনীরুজ্জামান কনক সাক্ষ্য গ্রহণে সহযোগিতা করেন।
এ ব্যাপারে ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারি সুমন ভুইয়া জানান, এই প্রথমবারের মতো অনলাইনে সাক্ষ্য গ্রহণ করলেন আমাদের বিচারক। স্যার মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী এভাবেই সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করলেন। যেহেতু হাসপাতালের কর্মরত ডাক্তার এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা সরকারি কাজে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় তাদের আদালতে এসে মামলায় সাক্ষ্য দিতে অনেক সমস্যায় পড়ে যান। আমাদের স্যার এই প্রথমবারের মতো তাদের সুবিধার্থে এই নিয়ম চালু করেছেন।
বিচারকের এমন কাজের জন্য মুন্সীগঞ্জ বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রোজিনা ইয়াসমিন সহ আরো অনেক আইনজীবী সাধুবাদ জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সরকার পক্ষের আইনজীবী মুনীরুজ্জামান কনক জানান, এই প্রথমবারের মতো আমার জানামতে অনলাইনে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইফতি হাসান ইমরান স্যার আজ প্রথমবারের মতো মুন্সীগঞ্জে অডিও ভিডিও কলের মাধ্যমে স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। হয়তো ভবিষ্যতে সরকারি সাক্ষীগুলো আদালতে আসতে না পারলে ন্যায় বিচারের স্বার্থে এভাবেই আদালতে সকল বিচারকরা সাক্ষী গ্রহণ শুরু করবে। এতে বিচারপ্রাথীরা উপকৃত হবেন বলে তিনি আরো জানান।