উত্তম চক্রবর্তী,মণিরামপুর থেকেঃ
সাতক্ষীরার মুন্সিগঞ্জ সুন্দরবন পর্যটন কেন্দ্রে শনিবার (৪ মার্চ) দিনব্যাপী যশোরের রাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের বার্ষিক বনভোজন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বনভোজনকে ঘিরে রাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্যদের ছিলো এক পাহাড় সমান আনন্দ অনুভুতি। সকাল সাড়ে ৮টার পরপরই রাজগঞ্জ প্রেসক্লাব কার্যালয়ের সামনে থেকে এক বাসে করে সাংবাদিকরা মুন্সিগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এরপর যাওয়ার পথে প্রেসক্লাবের সৌজন্যে সবাইকে একমুঠো করে আংগুর ফল, শুভাকাংখি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফারুক হোসেনের সৌজন্যে একটি করে স্ট্রাবেরী ফল দে’য়া হয় সকলকে এবং বিশেষ বিশেষ স্থানে দাড়িয়ে চা বিরতি চলে। যাওয়ার পথে রাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি এস.এম রবিউল ইসলাম রবি’র ফেসবুক লাইভ সম্প্রচার,সাধারণ সম্পাদক মোঃ জসিম উদ্দিনের ঐতিহাসিক যাত্রাপালার রোমান্টিক সংলাপ, কারো ফোনে উচ্চস্বরে বান্দবি ললিতার গান চালানো ইত্যাদি ইত্যাদি আয়োজনের মধ্যদিয়ে সেই কাংখিত মুন্সিগঞ্জে যেয়ে বাসটি থামানো হয়। তারপর জোহরের নামাজ শেষ করেই একটি স্কুল মাঠে বসে প্যাকেট করা খাবার খেয়ে নেন এই বনভোজনে অংশ নে’য়া সকলেই। সকলের গায়ে ছিলো নজর কাড়া (এক বিশেষ ব্যক্তির পছন্দ করা) আকাশি রংয়ের গেঞ্জি। এজন্য মসজিদের মুসল্লিরা আমাদের কাছে জিজ্ঞাসা করছিলো, আপনারা কোথা থেকে এসেছেন। আপনারা কোন সংস্থার লোক। তখন প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, তাদের পরিচয় দেন, সেই প্রশ্নকারি মুসল্লিদের কাছে। এরপর সরকারি ভ্যাট দিয়ে, পাশ নিয়ে টলার (বোড) ভাড়া করে, বোডে উঠে নদীর বুক চিরে যেতে যেতে এশিয়া মহাদেশের শ্রেষ্ঠ সুন্দরবনের প্রাকৃতিক অপরূপ দৃশ্য, সেখানে থাকা বানর, চিত্রা হরিণ, রং-বেরংয়ের পাখিসহ কতো জীবজন্তু দেখা গেলো।
তারপর বোডটি থামানো হলো সেই ফরেষ্ট অফিসের সামনে। সকলেই একে একে নেমে পায়ে হেটে সুন্দরবনের বনের গাছ-গাছালি, চিত্রা হরিণ আর বানর দেখে বিশাল আনন্দ উপভোগ করলো। পরিচয় হলো ফরেষ্ট অফিসার মোঃ কাওছার আহম্মেদের সাথে, তিনি অত্যন্ত ভালো মনের মানুষ। বাড়ি আমাদের পাশেই, নড়াইল লোহাগড়া থানায়। তার সাথে কথা বলে ভিষন ভালো লাগলো। প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিনের জিজ্ঞাসায়, তিনি সুন্দরবনের অনেক কিছুই রাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের জানালেন। ফরেষ্ট অফিসের ব্রাকের নিচে দুটি চিত্রা হরিণ দেখা গেলো। অফিসার জানালেন এরা এখানে আসে খাবার খাওয়ার জন্য। আমরাও নিয়মিত খাবার দিয়ে থাকি তাদের। চিত্রা হরিণ দুটোকে পেয়ে গায়ে হাত বুলিয়ে, রুটি খায়িয়ে প্রেসক্লাবের ব্যানারের সবাই খুব খুব আনন্দ করলো। যে যার মতো খাবার কিনে খাওয়াছেন হরিণদের। প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদকতো নিজের গালের পাউরুটি হরিণকে খাওয়ায়ে ছবি তুলেছেন। অনেকেই বিভিন্ন স্টাইলে ছবি তুলেছেন?। তবে, বিল্লালের ছবিটা অন্যরকম। প্রেসক্লাবের প্রচার সম্পাদক উত্তম চক্রবর্তী’র ছবি তুলাটাই ছিল ভিন্ন রকমের। এমন একটি সুন্দর পরিবেশ আসলে মনে রাখার মতো। আসলে যারা দেখেনি, তারা খুব মিস করেছেন এই প্রতিবেদকের মনে হয়। সব মিলিয়ে শনিবারের রাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের ব্যানারে যে বনভোজনটা হলো, সেটা আসলেই একটি বনভোজন। এক অন্য রকম অনুভুতি। রাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের এই বনভোজনে প্রেসক্লাবের দাতা সদস্য সমাজ সেবক মোঃ শরিফুল ইসলাম চাকলাদার, রিপর কুমার ধর, শুভাকাংখি আলমগীর কবির (আলম), ফারুক হোসেন, প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক মো. মফিজুর রহমান, নির্বাহী সদস্য মো. শাহিনুর রহমান, জিয়াউর রহমান, হাবিবুর রহমান সোহাগ, সাবেক সিনিয়র সদস্য রুহুল কুদ্দুস, সংবাদকর্মী মো. মুজিবর রহমানসহ অনেক সদস্য উপস্থিত ছিলেন।