মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
বরিশাল নগরীর বিভিন্ন স্পটে প্রশাসনের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিনিয়তই চলছে রমরমা জুয়ার আসর।জুয়া ছোট শব্দ হলেও মানুষকে নিঃস্ব করার অসীম ক্ষমতা রয়েছে।জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে প্রতিনিয়ত পারিবারিক অশান্তি সহ সামাজিক সমস্যা বাড়ছে।
নগরীর বিভিন্ন এলাকায় রাত হলেই বসছে লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলার আসর।দেশজুড়ে ক্যাসিনো ও শুদ্ধি অভিযান চললেও বরিশাল শহর জুড়ে থেমে নেই জুয়ার আসর।ওয়ান-টেন,তিন তাস,কাটা-কাটিসহ নানা নামে চলছে জুয়া।বরিশাল নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় অফিস,বাসা-বাড়িতে চলছে এসব জুয়ার আসর।এতে ভুক্তভোগীরা সর্বস্বান্ত হলেও জুয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে আয়োজক চক্র।
বিস্বস্ত সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে,নগরীর সদর রোডের একটি অফিসের আড়ালে জুয়ার আসর বসাচ্ছে প্রবাবশালী একটি মহল।সেখানে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলার আসর বসে।এছাড়াও নগরীর বগুড়া রোডের আরেকটি অফিসেও বসে জুয়া খেলার আসর।অন্যদিকে নগরীর সিএন্ডবি রোড সংলগ্ন মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ কার্যালয়ের সন্নিকটে ভাড়া বাসায় রাতভর চলে রমরমা জুয়ার আসর।সেখানে বসে মাদকের হাট।
অপরদিকে নগরীর নথুল্লাবাদ শেরে বাংলা সড়কে একটি মৎস আড়তে বসে জুয়ার আসর।সেখানে শেষ রাত পর্যন্ত চলে লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা।এসকল জুয়ার আসরে অবাধে চলে মাদক সরবরাহ।এমনকি বড় বড় জুয়ারিদের মনরঞ্জনে দেয়া হয় নারীও।
অনুসন্ধানে জানা যায়,কামরুল নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির প্রত্যক্ষ মদদে বসছে এসব জুয়ার আসর।শহিদ নামের এক ব্যক্তির সহযোগীতায় বরিশালের প্রায় সকল জুয়ার স্পট গুলো নিয়ন্ত্রণ করেন এই কামরুল। অপরদিকে শেরে বাংলা সড়কে ফোরকানের মাছের আড়তে কালাম নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে বসে জুয়ার আসর।কামরুল এবং কালামের নেতৃত্বে জুয়ার আসর গুলোতে মূলত ওয়ান-টেন খেলাটাই বেশি জনপ্রিয় বলে জানা যায়।
প্রভাবশালীদের মদদে বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে জুয়াড়িদের কাছ থেকে আয়োজকরা টাকা আদায় করে। আর এর বিনিময়ে জুয়া খেলার জন্য বিকাশ, নগদে টাকা ধার,বন্ধক,মোবাইল,ঘড়ি,স্বর্ণ,মাদকসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে আয়োজকরা।এতে করে সর্বস্বান্ত হচ্ছে আসক্তরা আর লাভবান হচ্ছে আয়োজকরা।
জানা যায়, জুয়ার বোর্ডে ২০ হাজার টাকার পণ্য ২ হাজার টাকায় পাওয়া যায়।আয়োজকরা ম্যানেজ পন্থা অবলম্বন করে দিনের পর দিন চালাচ্ছে এসব অপকর্ম। আয়োজকদের নির্ধারিত মাইক্রোবাসে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে জুয়ারিদের এসব স্পটে আনা নেয়ার ব্যবস্থা করা হয় বলেও জানা যায়।
এ বিষয়ে কামরুলের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি বলেন,বরিশালে অবাধে জুয়া চলে বিষয়টি আমি জানি। কিন্তু আমি জুয়ার সাথে জড়িত নই, তবুও দোষ আমার মাথায় ওঠে।
এ ব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম বিপিএম-বার বলেন- বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।