মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে আলু রোপণের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।জেলার অনেক জায়গায় আলু রোপণ শুরু করে দিয়েছেন চাষিরা। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে এখন চলছে কৃষি জমি প্রস্তুতের কাজ। কৃষক মাঠে কাজ করছেন আর বাড়িতে নারীরাও বীজ আলু কাটায় ব্যস্ত। আগামী এক মাস ধরে আলুর আবাদ চলবে।
এখনও অনেক জমি আলু চাষাবাদে অনুপযোগি ও প্রস্তুত নয় বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। গত ৪/৫ বছর ধরে দেরিতে আলু রোপণ করতে হচ্ছে। দেরিতে আলু রোপনের অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হয় জলাবদ্ধতা। খালের প্রবেশ মুখে বালি পরে ভড়াট হওয়ায় সময় মতো জমির পানি নামতে পারছে না। অন্যান্য জেলা থেকে আসা শ্রমিকদের নিয়ে আর কয়েক দিন পর পুরোদমে আলু রোপণ উৎসবে মেতে উঠবে চাষিরা। এরই প্রস্তুতি হিসেবে এখন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হিমাগার থেকে বীজ আলু আনা, জমি পরিষ্কার ও চাষাবাদ করা হচ্ছে।
বুধবার বেলা ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা বৌলতলী ইউনিয়নের ধারার হাট গ্রাম, গাঁওদিয়া ইউনিয়নের ঘোলতুলী ও পালগাও গ্ৰামের কৃষকেরা আলু রোপণ করছেন। এ ছাড়া অনেককে জমি তৈরির কাজ করতে দেখা যায়। বেশির ভাগ নিচু জমি থেকে মেশিন দিয়ে পানি শুকাতে হচ্ছে চাষিদের। এর ফলে আলু রোপণে দেরি হচ্ছে।
উপজেলার বেশিরভাগ খাল বালু দিয়ে ভরাট ও দখল হয়ে গেছে। ফলে বর্ষায় পানি প্রবেশ করতে পারে, কিন্তু পানি বের হতে পারেনা। এখন যদি লৌহজংয়ের খাল গুলো অতিদ্রুত খনন করা যেতো তাহলে লৌহজংয়ের কৃষকেরা সঠিক সময়ে আলু রোপণ করতে পারতো।
উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আলু রোপণের আদর্শ সময় নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ২৫ দিন পর্যন্ত। গত বছর লৌহজংয়ে আলু চাষ হয়েছে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে।
লৌহজং উপজেলা কৃষি তোরণ বলেন, যাদের জমি শুকিয়ে গেছে, ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে, তারা জমি পরিষ্কার করে আলু রোপণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ ছাড়া অনেকেই আলু রোপণ শুরু করে দিয়েছেন। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি আলু ছাড়া যেন অন্যান্য ফসলও রোপণ করে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ মো. শরিফুল ইসলাম জানান, খালগুলো ভড়াট হয়ে গেছে, পানি সরতে পারেনি। এখন আমাদের আলু,সরিষা, বাদামসহ অন্যান্য রবি ফসল লাগানোর কথা ছিল কিন্তু কৃষক তা লাগাতে পারছেনি। খালগুলোর মুখ বন্ধ হয়ে গেছে, পাশাপাশি পানি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল। এগুলো খাল খনন করতে হবে।সেই সাথে আমরা সরকারিভাবে কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। আগামীতে লৌহজংয়ে ২৫/৩০ কিলোমিটার খাল খনন করা হবে।এ বিষয়ে রেজিলেশনের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে। সার্ভে করা হবে। আশাকরি আগামী বছর থেকে আমাদের কৃষকরা উপকৃত হবে।