মৌসুমী দাস, স্টাফ রিপোর্টারঃ
শীতের আগমনী বার্তায় রাজশাহীর চারঘাটে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কারিগররা।
মৌসুমি শীত না পড়লেও ঋতু পরিবর্তনে অনুভূত হচ্ছে শীতের আমেজ। ভোরে কুয়াশা জমে থাকছে ঘাস আর লতাপাতায়। সন্ধ্যা নামতেই শরীরে শীতের ছোঁয়া। দিনে কিছুটা গরম থাকলেও রাতের শেষভাগে বইছে শীতের হাওয়া।
তাই শীত নিবারণের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে লেপ তোষক বানাতে ক্রেতারাও ভিড় করছে দোকানগুলোতে। অনেকেই আবার পুরোনো লেপ-তোশক মেরামত করার অর্ডার দিচ্ছেন।
শীতের আগমনি বার্তায় প্রতিটি পরিবারে শীত মোকাবেলায় লেপ তোষকের চাহিদা বেড়ে যায়। শীত মৌসুমে গ্রাম অঞ্চলে বিয়ের ধুম পড়ে যায়। গ্রাম্য সংস্কৃতি অনুযায়ী নতুন কনের সাথে লেপ, তোষক, জাজিম, বালিশ, কোল বালিশসহ বিভিন্ন সামগ্রী উপহার হিসেবে দেওয়ার রেওয়াজও রয়েছে। যার ফলে সব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন এই কারিগররা।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চারঘাটে প্রতিটি লেপ-তোষকের দোকান রয়েছে ভিড়। শীত মৌসুমে ব্যবসায়ীরা রেডিমেড লেপ তোষক তৈরি করে তা বিক্রি করছেন।
লেপ কিনতে এসেছেন রফিক নামের ক্রেতা তিনি বলেন, শীত পড়তে শুরু করেছে। বেশি শীত পড়ার আগেই ব্যবহারের জন্য নতুন লেপ-তোষক কিনতে এসেছি। গত বছরের তুলনায় দাম অনেক বেশি মনে হচ্ছে।
চারঘাট বাজারের কারিগর সিহাব উদ্দিন বলেন, সারা বছরই টুকিটাকি বেচা-কেনা হয়। তবে শীত মৌসুমের শুরু থেকে দোকানে কাজের চাপ বাড়ে। এখন লেপ তোষক তৈরির অর্ডারও বেশি। প্রতিদিনই নতুন নতুন অর্ডার আসছে।
তা ছাড়া তৈরি করা লেপ তোষক কিনতেও প্রতিদিন দোকানে আসছেন ক্রেতারা। কাপড়, তুলার মান ও পরিমাণের ওপর নির্ভর করে লেপ-তোষক তৈরির খরচ কম বেশি হয়ে থাকে।
তিনি আরও জানান, একটি লেপ বা তোষক তৈরিতে একজন কারিগরের সময় লাগে ১ থেকে দেড় ঘণ্টা। একজন কারিগর দিনে ৫ থেকে ৬ টি লেপ বা তোষক তৈরির কাজ করে থাকেন। আর একটি লেপ-তোষক বিক্রি করলে তাদের ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা লাভ হয়। শীত মৌসুমের শুরুর দিক অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত কাজের চাপ বেশি থাকে। বছরের অন্যান্য সময়ের মন্দাভাব পুষিয়ে নিতে এখন সমান তালে কাজ করতে হয়।
বর্তমানে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় সব জিনিসিপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় লেপ তোশক তৈরির সামগ্রীর দামও বেড়েছে। শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, কার্পাস তুলা প্রতি কেজি ১২০ থেকে ২৫০ টাকা, কালো রাবিশ তুলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, সাদা তুলা ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা করে দামে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় তুলার দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাপড়ের প্রতি গজে ১০ থেকে ১৫ টাকা দাম বেড়েছে বলে তিনি জানান।