শেখ শোভন আহমেদ, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে সুদে কারবারীদের দৌরাত্ম। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র আর সংসারের খরচ মেটাতে দারিদ্র,শ্রমজীবি মানুষগুলো যখন আয় রোজগারে নার্ভাস তখন খুব সহজে টাকার লোভ দেখিয়ে চক্রবৃদ্ধির সুদের জালে জড়িয়ে পরিবার ও সমাজে নৈরাজ্য ছড়াচ্ছে এ কারবারীরা। শহর সহ বিভিন্ন গ্রামের কালোবাজারী ও অবৈধ পথে টাকা জমিয়ে এসব কারবারীরা শতকরা ২৫ পার্সেন্ট থেকে ১শ পার্সেন্ট বা তারও বেশী সুদ বা লভ্যাংশ নিয়ে লাখ লাখ টাকা ছড়িয়ে দিচ্ছে গ্রামের অসহায় মানুষদের মাঝে। টাকা দেয়ার পরের সপ্তাহ বা ১৫ দিন অন্তর বা ১মাস অন্তর অন্তর টানতে হচ্ছে সুদের টাকা। এভাবে আসল টাকা বাদেই কয়েকগুণ সুদ দিয়েও নিস্তার বা রেহায় মিলছে না এসব মহাজনী সুদে কারবারীদের কাছ থেকে।
অনেকে আসল টাকার চেয়ে কয়েকগুণ বেশী টাকা দিয়েও রেহায় পাচ্ছে না। শৈলকুপার হরিহরা, সাতগাছি, মালিপাড়া, নগরপাড়া, কবিরপুর, ফাজিলপুর, বাজারপাড়া সহ পৌর এলাকা ও আশপাশের গ্রামাঞ্চলে রয়েছে বেশ কয়েকজন সুদে কারবারী । এদের কারো নেই সমাজসেবা, সমবায় অফিস বা সরকারী দপ্তরের ঋণ দেয়া কার্যক্রমের কোন রেজিস্ট্রেশন, লাইসেন্স, নেই মাইক্রোক্রেডিট অথরিটির কাগজপত্র।
সুদ কিংবা মহাজনী ব্যবসা সামাজিক নিপীড়নমূলক একটি অনৈতিক পন্থা। বহু পূর্ব হতে বিষবৃক্ষের ন্যায় এই ব্যবস্থা শোষণের একটি অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত। আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবে বর্তমান সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে এই কারবার।
পক্ষান্তরে টাকা দিয়ে টাকা বানিয়ে পুঁজিপতি শ্রেণীর অন্তর্র্ভক্ত হয়েও কৌশলে আয়কর বিভাগের নজরদারি এড়িয়ে দিব্যি পার পেয়ে যাচ্ছে এসব সুদখোররা। আইন সম্মত বা বৈধ না হওয়া সত্ত্বেও এই ব্যবসার সাথে জড়িতদেরও নানা কুট কৌশলের কারণে সমাজের কোন পর্যায় থেকে এর বিরুদ্ধে ‘টু’ শব্দটি পর্যন্ত করা হচ্ছে না। কিন্তু দিনে দিনে এর ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে সাধারন মানুষ যারপর নাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
যুগপোযোগী আইন করে এই প্রবনতা বন্ধ করা না গেলে নিকট ভবিষ্যতে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে নৈরাজ্য দেখা দেবে যা শ্রেণী বৈষম্যকে প্রকট করে তুলে চরম সামাজিক অস্থিতরতা সৃষ্টি করতে পারে। সুদের ব্যবসাতো কমছেই না বরং দিনে দিনে সুদখোর শ্রেণীর কাছে জিম্মি হয়ে যাচ্ছে প্রতিটি মানুষ, পরিবার তথা সমাজ। যেখানে বর্তমানে ব্যাংক এ সুদের হার ৫%-৭%-১০% করে সেখানে এই সব সুদের ব্যবসাকারীরা ১২০%, বা কোন কোন ক্ষেত্রে তার চেয়েও বেশী হারে সুদ নিচ্ছে। নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে বহু লোক। কেউ সুদ না দিতে পেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কেউ বা হয়ে যাচ্ছে মাদকাসক্ত। আবার অনেকে করছে আত্মহত্যা আবার কারো কারো পরিবার বিচ্ছিন্ন, বিবাহ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
এদিকে দেশে নিত্যপণ্যের বাজার ক্রমশই লাগামহীন হয়ে পড়েছে। করোনার ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই পরিস্থিতি কেমন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সবজির দাম বাড়লেও কৃষক যে লাভবান হবে তা কিন্তু হচ্ছে না। দেশে দ্রব্য বাড়ার এই অস্বাভাবিক অবস্থায় দিশাহারা মানুষ। তারপরও জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েই চলেছে।
সবকিছুর দাম বাড়লেও বাড়ছে না কেবল মানুষের আয়। এ অবস্থায় জীবনে টিকে থাকা দায় হয়েছে। সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ সহ সংসারের যাবতীয় খরচের সঙ্গে যোগ হয়েছে নিত্যপণ্যের লাগামহীন বাড়তি মূল্য। এসবের মধ্যে চলছে এই মহাজনী মহাবিপদে ফেলার কারবার ।
দাইয়ানুর রহমান (সম্পাদক) তাপস কুমার ঘোষ (প্রকাশক) শিমুল হোসেন, (নির্বাহী সম্পাদক) আজহারুল ইসলাম-বাবলু হোসেন ( নির্বাহী সম্পাদক)
অফিসঃ পশ্চিম শেওড়াপাড়া- ইকবল রোড বাসা নং- ৪১৬/৪ মিরপুর ঢাকা-১২১৬,
Email: Info@sumoyersonlap.com, taposhg588@gmail.com,shimul00252@gmail.com
01715522822, 01728.855627, 01710118632, 01709255325
https://www.sumoyersonlap.com
কপি করা নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ।