সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলায় আদালতের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঘেরাবেড়া দিয়ে আপন ভাতিজির জমি দখল ও দখলে বাধা দেয়া ভাতিজিকে মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি শুক্রবার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা গ্রামে ঘটেছে। অভিযুক্ত চাচার শাবলের আঘাতে আহত ভুক্তভোগী ভাতিজির নাম হাফিজা খাতুন( ৩৪)। তিনি ওই এলাকার শফিকুল ইসলাম গাজীর মেয়ে। আহত হাফিজা খাতুন বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসক জানান, ভারী বস্তুর আঘাত পেয়েছে হাফিজা খাতুন। আঘাত মারাত্বক হতে পারতো। তবে তিনি শঙ্কামুক্ত। অভিযুক্ত চাচার নাম রফি গাজী। বিভিন্ন কাগজপত্র পর্যালোচনা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে জানা যায়, শ্রীউলা মৌজার ১৯০ খতিয়ানের ১৯২ দাগের ২৭ শতক জমির হাফিজা খাতুন পৈতৃক সুত্রে প্রাপ্ত অংশসহ আরো দুই শরিকের জমি ক্রয় করেন। তার মোট জমির পরিমান ৪.২৫ শতক হলে তার আপন চাচা রফি গাজী তা মানতে চাননা। তিনি হাফিজার দখলীয় ৪.২৫ শতক জমির অংশে নিজের জমি আছে মনে করে দখল করে ঘেরাবেড়া দেন। এতে হাফিজার ঘর থেকে বের হওয়ার পথ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তবে, এ বিষয়ে একাধিকবার শালিশ বৈঠকও হয়েছে। থানা পুলিশ হয়েছে। আদালতের আদেশও হয়েছে। তবে বিভিন্ন সময়ে জীবননাশসহ উক্ত জমি কেড়ে নেওয়ার একাধিকবার রফি গাজী ও তার ইন্ধনদাতাদের দেয়া হুমকিতে অসহায় হাফিজা বিজ্ঞ আদালতে ২৬৫৬/২৩ মামলা করে। আদালত কর্তৃক আদেশ জারি হলেও সেসবের তোয়াক্কা না করে বারবার অসহায় হাফিজার জমি দখল নেয়ার পায়তারা করে এবং মামলা তুলে নেয়ার হুমকি অব্যহত রাখে। বর্তমানে হাফিজার স্বামী জেলার বাইরে (শ্রমিকের কাজ করে) থাকা ও উক্ত জমিতে ১৪৫ চলমান থাকা অবস্থায় চলতি মাসের গত ১৯ জানুয়ারী সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে রফি গাজী লোকজন নিয়ে ওই জমিতে ঘেরাদিয়ে হাফিজার পরিবারের সদস্যদের চলাচলের পথ আটকে দেয়। বিভিন্ন অপপ্রচারসহ রফি গাজীর অব্যহত হুমকি ও তার প্রভাবশালী ইন্ধনদাতাদের কুটকৌশলে পরাজিত হাফিজা খাতুন আশাশুনি থানায় একটি অভিযোগ করে। শুক্রবার থানা পুলিশ উক্ত অভিযোগের তদন্ত করতে গেলে রফি গাজী আস্ফালন করে প্রশাসনের সদস্যদের অবজ্ঞা করে আবারো ঘেরা দেয়া শুরু করে। স্বামীর অবর্তমানে হাফিজা ও তার মা বাধা দিতে গেলে রফি গাজী ও তার লোকজন ভুক্তভোগীর শিশুকন্যাসহ হাফিজাকে শাবল ও বাঁশ দিয়ে আঘাত করে। এসময় রফি গাজী নিজের ভাতিজিকে মিথ্যা অপবাদ দিতে দিতে বলে, তোকে মা…..ক মামলায় ফাঁসাবো। দেখি কে তোকে রক্ষে করে। হাফিজা বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্থানীয়রা জানান, আগামী ৩১ জানুয়ারী উপজেলা সার্ভেয়ার আসার কথা রয়েছে। সার্ভেয়ার আসার আগেই ১৪৫ চলা জমিতে রফি গাজী ঘেরা দিতে গেছে। তারা আইন অমান্য করেছে। এটা তাদের মোটেও ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত রফি গাজীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি তবে লতিফ গাজী মারপিটের কথা স্বীকার বলেন, হাফিজা মাত্র ৩ শতক জমি পাবে। অথচ সে দখল করেছে আরো বেশি। ঘেরাবেড়া দেওয়ার বিষয়ে লতিফ গাজী জানান, আগে ওখানে ঘেরা দেয়া ছিল। বড় বড় গাছ আছে। তারা (হাফিজা) আগের বেড়া ভেঙে দিয়েছে। আহত হাফিজা খাতুন জানান, আমার বাবার দেয়া জমি ও আরো দুই শরিকের জমি কিনে নিয়ে আমার মা ও স্বামী সন্তান নিয়ে অনেক কষ্ট করে সংসার চালাই। আমার স্বামী ঢাকায় রিকসা চালায়। অসহায় নারী হিসেবে আমাকে একা পেয়ে আমার চাচা রফি গাজী, লতিফ গাজী, লাভলু, লাইলী খাতুন ও তবিবুর ওই জমি দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোসহ সবসময় মেরে ফেলার হুমকি দেয়। দীর্ঘদিন আমি স্বামী সন্তান ও মাকে নিয়ে শান্তিতে বসবাস করছি। অথচ তারা আদালতের আদেশও তারা মানেনা। অসহায় নারী হিসেবে আমি পুলিশ সুপারের সাহায্য কামনা করছি।